ঐতিহাসিক ৭ মার্চ আজ
মানিকগঞ্জ বার্তা
প্রকাশিত: ৭ মার্চ ২০২১
আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। বাঙালি জাতির দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক অনন্য দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন।
এদিন লাখ লাখ মুক্তিকামী মানুষের উপস্থিতিতে এই মহান নেতা বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেব, এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ্। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয়বাংলা।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একাত্তরের ৭ মার্চ দেয়া ঐতিহাসিক ভাষণ পরবর্তীতে স্বাধীনতার সংগ্রামের বীজমন্ত্র হয়ে পড়ে। একইভাবে এ ভাষণ শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলিলই নয়, জাতির সাংস্কৃতিক পরিচয়ের একটি সম্ভাবনাও তৈরি করে।
বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো।
একাত্তরের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর এই উদ্দীপ্ত ঘোষণায় বাঙালি জাতি পেয়ে যায় স্বাধীনতার দিক-নির্দেশনা। এরপরই দেশের মুক্তিকামী মানুষ ঘরে ঘরে চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। বঙ্গবন্ধুর এই বজ্রনিনাদে আসন্ন মহামুক্তির আনন্দে বাঙালি জাতি উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। যুগ যুগ ধরে শোষিত-বঞ্চিত বাঙালি ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে যায় কাঙ্ক্ষিত মুক্তির লক্ষ্যে।
ধর্মীয় চিন্তা, সাম্প্রদায়িকতার মানসিকতা ও দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালে গঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ২৩ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিসত্ত্বা, জাতীয়তাবোধ ও জাতিরাষ্ট্র গঠনের যে ভিত রচিত হয় তারই চূড়ান্ত পর্যায়ে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর ছাত্র-কৃষক-শ্রমিকসহ সর্বস্তরের বাঙালি স্বাধীনতা অর্জনের জন্য মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করে।
বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় ছিনিয়ে আনে বাঙালি জাতি। এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে জন্ম নেয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণে গর্জে ওঠে উত্তাল জনসমুদ্র। লাখ লাখ মানুষের গগন বিদারী শ্লোগানের উদ্দামতায় বসন্তের মাতাল হাওয়ায় সেদিন পত্ পত্ করে ওড়ে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত লাল-সবুজের পতাকা। শপথের লক্ষ বজ্রমুষ্টি উত্থিত হয় আকাশে। সেদিন বঙ্গবন্ধু মঞ্চে আরোহণ করেন বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে। ফাগুনের সূর্য তখনো মাথার ওপর। মঞ্চে আসার পর তিনি জনতার উদ্দেশ্যে হাত নাড়েন। তখন পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান লাখ লাখ বাঙালির ‘তোমার দেশ আমার দেশ বাংলাদেশ বাংলাদেশ, তোমার নেতা আমার নেতা শেখ মুজিব, শেখ মুজিব’ শ্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে।
বঙ্গবন্ধু দরাজ গলায় তার ভাষণ শুরু করেন, ‘ভাইয়েরা আমার, আজ দুঃখ-ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি…।’ এরপর জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বাংলা ও বাঙালির স্বাধীনতার মহাকাব্যের কবি ঘোষণা করেন- ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম…, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয়বাংলা ।’
মাত্র ১৮-১৯ মিনিটের ভাষণ। এই স্বল্প সময়ে তিনি ইতিহাসের পুরো ক্যানভাসই তুলে ধরেন। তিনি তার ভাষণে সামরিক আইন প্রত্যাহার, জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, গোলাগুলি ও হত্যা বন্ধ করে সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়া এবং বিভিন্ন স্থানের হত্যাকাণ্ডের তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের দাবি জানান।
বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘ভাইয়েরা আমার, আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না, আমি বাংলার মানুষের অধিকার চাই। প্রধানমন্ত্রীত্বের লোভ দেখিয়ে আমাকে নিতে পারেনি। ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে দিতে পারেনি। আপনারা রক্ত দিয়ে আমাকে ষড়যন্ত্র-মামলা থেকে মুক্ত করে এনেছিলেন। সেদিন এই রেসকোর্সে আমি বলেছিলাম, রক্তের ঋণ আমি রক্ত দিয়ে শোধ করবো। আজো আমি রক্ত দিয়েই রক্তের ঋণ শোধ করতে প্রস্তুত।’
তিনি বলেন, ‘আমি বলে দিতে চাই-আজ থেকে কোর্ট-কাচারি, হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট, অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সবকিছু অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। কোন কর্মচারী অফিসে যাবেন না। এ আমার নির্দেশ।’
বঙ্গবন্ধুর ভাষণের সর্বশেষ দু’টি বাক্য, যা পরবর্তীতে বাঙালির স্বাধীনতার চূড়ান্ত লড়াইয়ের দিক-নির্দেশনা ও প্রেরণার হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেব। এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ্। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয়বাংলা’।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান তার একটি নিবন্ধে লিখেছেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে তার রাজনৈতিক চিন্তাধারার পরিচয় দিয়েছেন। রণকৌশলের দিক থেকে এই ভাষণ অসাধারণ। এই বক্তৃতা এখনো মানুষকে শিহরিত করে। এই বক্তৃতার আগে রাজনৈতিক কর্মী ও জনসাধারণ স্বাধীনতা ঘোষণার জন্য এক ধরনের চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতা ঘোষণা করলে যে পাকিস্তানি সেনা শাসকরা সর্বশক্তি প্রয়োগ করে তাদের উপর দমন-পীড়ন চালিয়ে যাবে, সে বিষয়েও তিনি অবহিত ছিলেন।
আনিসুজ্জামান লিখেন, স্বাধীনতা ঘোষণা করবেন কিনা, এমন এক প্রশ্নর জবাবে বঙ্গবন্ধু নিউজউইকের এক সাংবাদিককে বলেছিলেন ‘আমরাতো সংখ্যাগরিষ্ঠ। পশ্চিমাদের উপর নির্ভর করছে তারা বিচ্ছিন্ন হতে চায় কিনা।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এবং সেই সভায় উপস্থিত তোফায়েল আহমেদ একটি নিবন্ধে বলেছেন, বঙ্গবন্ধু তার চশমাটা সেদিন ডায়াসের উপর রেখে ১৮ মিনিটের যে ভাষণ দিয়েছিলেন, তার পুরোটাই অলিখিত। একদিকে তিনি পাকিস্তানীদের প্রতি চার দফা শর্ত আরোপ করলেন, অন্যদিকে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে বললেন। ভাতে মারার কথা বললেন, পানিতে মারার কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘৭ মার্চের আগে বঙ্গবন্ধুর বাড়ি গিয়েছিলাম। একজন তাকে বললেন, জনগণ কিন্তু সম্পূর্ণ স্বাধীনতা ঘোষণা ছাড়া মানবে না। বঙ্গবন্ধু বললেন, তুমি তোমার কাজ কর। আমি তাদের নেতা, আমি তাদের পরিচালিত করবো, তারা আমাকে নয়।
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের শ্রেষ্ঠত্বের কথা তুলে ধরে ইতিহাসের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণের পর গোটা বাংলাদেশে পাকিস্তানীদের পরিবর্তে বাঙালিদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়। অনেকে বিভিন্ন জায়গায় পূর্ব পাকিস্তান শব্দ মুছে বাংলাদেশ লেখে।
তিনি বলেন, এ ভাষণের পর গোটা দেশ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় চলতে থাকে। এ ভাষণ গুটি কয়েক রাজাকার ছাড়া গোটা বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলো।
রাজনীতি বিশেষজ্ঞদের মতে, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুধু বাঙালি জাতিকে মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান নয়। এটি সব জাতির মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার দিক-নির্দেশনা।
দিবসটি উপলক্ষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জাতীয়ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
- গাজা বিশ্বের বৃহত্তম ‘উন্মুক্ত কবরস্থান’
- বউভাতে যাওয়ার পথে প্রাণ গেল!
- দেড় কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার, দুজন গ্রেপ্তার
- আগুনে দগ্ধ আরো ৪ জনের মৃত্যু
- দুই স্কুলছাত্রকে কোপালো দুর্বৃত্তরা
- গরমে লাইন বেঁকে যাওয়ার সত্যতা মেলেনি
- ৩ পুলিশ কর্মকর্তাকে কু*পি*য়ে আসামি ছিনতাই
- চোর চক্রের ৯ সদস্য গ্রেফতার, ৬ ইজিবাইক উদ্ধার
- মানিকগঞ্জের সেই সহকারী অধ্যাপক ওএসডি
- ২ হাজার জনকে ইফতার দিল বসুন্ধরা গ্রুপ
- বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উদযাপন
- ২০ কেজি গাঁজাসহ নারী আটক
- সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত অদম্য পদযাত্রা
- জমেনি কেরানীগঞ্জের পাইকারি পোশাক মার্কেট
- বসুন্ধরার ইফতার পেয়ে খুশি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা
- ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ
- ৪০০ টন আলু আমদানি
- গাজায় পৌঁছেছে ত্রাণ
- কার অনুরোধে শিল্পী সমিতির নির্বাচন করেছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন?
- জলদস্যুতার নেপথ্যে
- অপূর্বের নামে আইনি নোটিশ
- মানুষের দোরগোড়ায় চিকিৎসাসেবা পৌঁছতে কাজ করছি
- ভুয়া ডিবি পুলিশ আটক
- ২০ টন খেজুর উপহার দিল সৌদি আরব
- মোটরসাইকেল গ্যারেজ ও আশুলিয়ায় ৩ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন
- কাঠমিস্ত্রি হত্যাকাণ্ডের মূলহোতাসহ গ্রেপ্তার ২
- ৬২ কেজি গাঁজাসহ মাদককারবারি গ্রেফতার
- জাগীর সেতুতে এক লেন দিয়ে চলছে যানবাহন, ভোগান্তি
- ২৯ পণ্যের দাম নির্ধারণ করল সরকার
- ভারত থেকে আসছে পেঁয়াজ
- জাবিতে ৫ দাবিতে মশাল মিছিল
- ঠিকাদারের বিরুদ্ধে নিম্নমানের কাজের অভিযোগ
- জাহাজসহ তাদের ফেরত আনাই প্রথম লক্ষ্য’
- তিন ভুয়া ডিবি পুলিশ গ্রেফতার
- ৬০ কি. মি বেগে ঝড়ের আভাস চট্টগ্রাম-কক্সবাজারে
- চালের দাম ও জাত উল্লেখ করতে হবে
- দাপাচ্ছে কিশোর গ্যাং
- শেখ হাসিনার সঙ্গে জেলেনস্কির বৈঠক
- ‘মধুর যন্ত্রণায়’ দই বিক্রেতা জিয়াউল হক
- সামিয়া হত্যার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ-মানববন্ধন
- ওড়না পেঁচিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা
- ঢাকা ও কেরানীগঞ্জের ঐতিহ্য আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িত
- সতর্ক থাকার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
- সিংগাইরে রাতের আঁধারে ৩ ফসলি জমি থেকে চলছে মাটি বিক্রির মহোৎসব
- মাদক কেনা-বেচার অভিযোগে আটক ২৬
- ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের সাক্ষাৎ
- আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নারীসমাজ এগিয়ে যাবে
- পাসপোর্ট করতে সহায়তা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার ৩
- অনিবন্ধিত সব স্বাস্থ্যকেন্দ্র দ্রুত বন্ধ করা হবে
- কিডনি রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতা গড়ে তোলা জরুরি