• শনিবার ০৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২১ ১৪৩১

  • || ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

পুন্ড্রনগরীতে মিললো খ্রিস্টপূর্ব ১৩শ বছরে আগের প্রত্নসম্পদ!

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১ জানুয়ারি ২০২০  

বৌদ্ধ শাসন আমলের বিভিন্ন কাঠামো ও প্রত্নসামগ্রী পাওয়া গেছে পুন্ড্রনগরী মহাস্থানগড়ে। খননে বেড়িয়ে আসে খ্রিস্টপূর্ব ১৩শ বছর আগের কুয়াসহ নানা প্রত্নসম্পদ।

২টি গভীর কুয়াসহ ২টি পাত কুয়ার সন্ধান মিলেছে খননকালে। সেই সঙ্গে প্রত্ন সামগ্রীসহ বেশ কিছু মাটির পাত্র, মাটির পাত্রের ভগ্নাংশ, মাটির বিশালাকায় একটি ডাবর (মটকা) পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, ১৯৯৩ সাল থেকে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স সরকার যৌথভাবে খনন কাজ পরিচালনা করে আসছে। পাশাপাশি নিজস্ব অর্থায়নে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরও খনন করছে। গত ৮ নভেম্বর থেকে গড়ের বৈরাগীর ভিটা সংলগ্ন প্রায় ১০টি বর্গে খনন কাজ করা হয়। এর মধ্যে ফ্রান্স দল ৩টি এবং প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ৭টি স্থানে খনন করে।

খননস্থলে প্রাপ্ত স্থাপত্য কাঠামো এবং উত্তরাঞ্চলীয় উজ্জ্বল চকচকে কালো মাটির পাত্র (এনবিপিডাব্লিউ) দেখে খনন সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, এসব শুঙ্গ ও মৌর্য আমলের। সেই হিসেবে খনন থেকে প্রাপ্ত ও উন্মোচিত প্রত্নসামগ্রী প্রায় আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন।

যৌথ খননে ফ্রান্সের কলিন লেফ্রাংকের নেতৃত্বে অংশ নেন এলবো ফ্রাংকোয়িস ও আতোয়ান। অন্যদিকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক ড. নাহিদ সুলতানার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দলে ছিলেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মজিবুর রহমান, শাহজাদপুর জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান মোহাম্মদ যায়েদ, মহাস্থান জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান রাজিয়া সুলতানা, সিনিয়র ড্রাফটসম্যান আফজাল হোসেন, আলোকচিত্রী আবুল কালাম আজাদ ও সার্ভেয়ার মুর্শিদ কামাল ভূঁইয়া।

ড. নাহিদ সুলতানা জানান, আড়াই থেকে তিন মিটার গভীর করে খননে বসতির চিহ্ন পাওয়া গেছে। কয়েকটি স্তরে বসতি স্থাপন করা হয়েছে এই অঞ্চলে। শুঙ্গ যুগ থেকে শুরু করে অর্থাৎ খৃষ্টপূর্ব দুইশ বছর আগ থেকে শুরু করে ১১ শতাব্দী পর্যন্ত কয়েকশ বছরের সময়কালে ধাপে ধাপে ৫টি বসতি স্তরের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মহাস্থানগড় এলাকায় বিভিন্ন সময়ের বসতি স্তর সাক্ষ্য দেয় এই জনপদ উন্নত এবং সমৃদ্ধ ছিল।

মজিবুর রহমান জানান, ৮ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স দল যৌথভাবে খনন কাজ শুরু করে। ফ্রান্সের দলটি ১৪ ডিসেম্বর খনন কাজ শেষ করে ফিরে গেছে। এবার ২টি পাতকুয়ার পাশাপাশি ইটের গাঁথুনি করা ২টি কূপ মিলেছে। ফ্রান্স দল যে অংশ খনন করেছে সেই অংশেই মিলেছে ইটের গাঁথুনির কূপ। ইতিপূর্বে খননে কোথাও ইটের গাঁথুনি বিশিষ্ট কূপের সন্ধান মেলেনি। কিন্তু এবারই প্রথম তেমন একটি কূপের সন্ধান মিলেছে বৈরাগীর ভিটায়। এই কূপের প্রায় ৬ ফুট গভীর পর্যন্ত খনন করে ৪৬ সারি ইটের গাঁথুনি উন্মোচন করা হয়েছে।

তিনি জানান, ইটের গাঁথুনি বিশিষ্ট কূপটি পাল আমলের। অন্যান্য কূপও সমসাময়িক সময়ের। সেই হিসেবে প্রায় ১৩০০ বছর আগে এই অঞ্চলে ইটের গাঁথুনি বিশিষ্ট কূপ থেকে মানুষ পানি সংগ্রহ করেছে।