• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

ট্রাম্পের নতুন অভিবাসন নীতি ঘোষণা

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৮ মে ২০১৯  

মেধানুসারে নতুন অভিবাসন নীতির পরিকল্পনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নতুন এ নীতির ফলে কেবল মেধাবীরাই যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী হিসেবে সুযোগ পাবে। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন পরিকল্পনার কথা জানানো হয়। 

ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা মূলত দক্ষ তরুণ, শিক্ষিত এবং ইংরেজিতে ভালো কর্মীদেরকে ঘিরেই সাজানো হয়েছে। এর আওতায় কেউ যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী হতে চাইলে তাকে ইংরেজি ও পৌরনীতি বিষয়ক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। 

এদিকে মেধাবী শ্রমজীবীদের সুযোগ দেয়ার ফলে তা অভিবাসীদের ভাগ্য উন্নয়নের পাশপাশি মার্কিন অর্থনীতিতেও অবদান রাখতে পারবে বলে মনে করেন ট্রাম্প প্রশাসন। নতুন এই ব্যবস্থায় দীর্ঘদিনের পারিবারিক অভিবাসন নীতি থেকে বেরিয়ে আসবে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউজে দেয়া এক বক্তৃতায় এ কথা জানান ট্রাম্প।

পরিকল্পনাটির রূপকার ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার, তাকে অভিবাসন প্রশ্নে অপেক্ষাকৃত উদার বলে ভাবা হয়। তার সঙ্গে এই প্রকল্পে একযোগে কাজ করেছেন অভিবাসন প্রশ্নে অত্যন্ত কঠোর ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ট্রাম্পের অন্যতম উপদেষ্টা স্টিফেন মিলার। বেশির ভাগ পর্যবেক্ষকই বলেছেন, রিপাবলিকান বা ডেমোক্রেটিক কোনো পক্ষই এই প্রস্তাবিত নীতিমালায় সন্তুষ্ট নয়।

এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছর স্থায়ী অভিবাসনের জন্য যে পরিমাণ গ্রিন কার্ড প্রদান করে থাকে, তার কোনো পরিবর্তন হবে না। তবে পারিবারিক সম্পর্কের বদলে এই গ্রিন কার্ড মেধার অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রদান করা হবে। আর কার্ডের নাম হবে ‘বিল্ড আমেরিকা’ ভিসা।

যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে যে গ্রিন কার্ড প্রদান করা হয়, এর দুই-তৃতীয়াংশ যায় পরিবারভিত্তিক অভিবাসনের ক্ষেত্রে। এই ব্যবস্থায় কোনো বহিরাগত মার্কিন নাগরিকত্ব অর্জনের পর তার পরিবারের সদস্যরাও স্থায়ী অভিবাসনের সুবিধা ভোগ করে থাকেন। নতুন ব্যবস্থায় ৫৭ শতাংশ গ্রিন কার্ড বরাদ্দ করা হবে মেধার ভিত্তিতে। দুই ধাপবিশিষ্ট পয়েন্ট বণ্টন কর্মসূচি এবং নাগরিক শিক্ষা ও নিরাপত্তা তদন্তের ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে, কে এই গ্রিন কার্ড পাওয়ার যোগ্য।

ট্রাম্পের এই প্রস্তাব তার নিজের দলের ভেতরেই প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েছে। এত দিন ট্রাম্প নিজেকে একজন কঠোর অভিবাসনবিরোধী রাজনীতিক হিসেবে উপস্থিত করেছেন। সেই কট্টর অবস্থা থেকে সরে এসে অব্যাহত অভিবাসনের পক্ষে যে প্রস্তাব তিনি দিয়েছেন, রিপাবলিকান দলের অতি রক্ষণশীল অংশ তাতে আপত্তি তুলেছে। 

খ্যাতনামা ভাষ্যকার অ্যান কুলটার অভিযোগ করেছেন, এই পরিকল্পনায় সোয়া কোটি অবৈধ অভিবাসীর বহিষ্কারের কোনো কথাই নেই। ট্রাম্পের নিকট বন্ধু হিসেবে পরিচিত সিনেটর লিন্ডসি গ্রাহাম বলেছেন, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কোনো সম্ভাবনাই নেই। অপেক্ষাকৃত নরম সুরে মন্তব্য করেছেন ট্রাম্পের আরেক সমর্থক কংগ্রেসম্যান কেভিন ম্যাকার্থি। তার ভাষায়, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা নয়, একটি প্রস্তাবনা মাত্র।

অন্যদিকে বিরোধী ডেমোক্র্যাটরা পরিবারভিত্তিক অভিবাসন বন্ধের তীব্র আপত্তি তুলেছে। তারা বিশেষভাবে আপত্তি তুলেছে সোয়া কোটি বৈধ কাগজপত্রবিহীন অভিবাসী, যারা এ দেশে দীর্ঘদিন থেকে বাস করছেন। 
তাদের বৈধকরণের কোনো কথা এতে নেই। ‘ডাকা’ কর্মসূচিতে যে প্রায় ১০ লাখ তরুণ অভিবাসী এখনো বৈধকরণের অপেক্ষায় রয়েছেন, তাদের কথাও পুরোপুরি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। এতেও প্রবল আপত্তি তুলেছে ডেমোক্র্যাটরা। 

স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি প্রশ্ন করেছেন, মেধাভিত্তিক অভিবাসনের মানে কি এই, যারা এতদিন অভিবাসন পেয়েছেন, তাদের কোনো মেধা নেই? প্রশ্নের উত্তর জনাতে অপেক্ষা করতে হবে ট্রাম্পের নতুন ভাষণের জন্য।