• বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

  • || ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

অবৈধ কারখানার রাসায়নিক বর্জ্যে বিষাক্ত বুড়িগঙ্গা

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল ২০২৪  

কেরানীগঞ্জের ৮১টি অবৈধ ডায়িং ও ওয়াশিং কারখানার রাসায়নিক বর্জ্যে বুড়িগঙ্গা নদীর পানি পচন ধরে বিষে পরিণত হয়েছে। দূষিত পানির দুর্গন্ধে পরিবেশ মারাত্মক হুমকিতে পড়েছে। বুড়িগঙ্গার দুই পাড়ের হাজার হাজার বাসিন্দা শ্বাসকষ্ট ও চর্মরোগসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। 

২০২০ সালে সরকার বুড়িগঙ্গা নদীতে সংযুক্ত স্যুয়ারেজ লাইনের মুখে ‘ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট’ নামে একটি পাইলট প্রকল্প চালু করে। প্রতিটি ওয়াটার ট্রিটমেন্টে ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ১৩ লাখ টাকা করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৩  সালের গত ১৮ মার্চ রাজধানীর ওয়াইজঘাট এলাকায় একটি স্যুয়ারেজ লাইনের মুখে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট তৈরি করে এ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। গত এক বছরে প্রকল্পটির পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন ঘটেনি। ফলে ইতিমধ্যেই নদীর মিঠা পানির সুস্বাদু মাছ ও বিভিন্ন জলজ প্রাণির মৃত্যু হয়েছে।

হাইকোর্টের নির্দেশে জাতীয় নদীরক্ষা কমিশনের ট্রাস্কফোর্স গত বছরের মে মাসে বুড়িগঙ্গা নদীকে দূষণমুক্ত করতে ঢাকা জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শাহিদা বেগম ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নওশীন হকের নেতৃত্বে কেরানীগঞ্জে খোলামুড়া, বরিশুর, মান্দাইল, জিনজিরা, আগানগর, ইস্পাহানি, কালীগঞ্জ, খেজুরবাগ, পটকা জোর, মাদারীপুর ও মীরেরবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে শাহেদ, রুমা ডায়িং ও ওয়াশিংসহ ৮১টি অবৈধ কারখানার গ্যাসলাইন ও বিদ্যুত্ লাইন বিচ্ছিন্ন করে। কিন্তু দুই মাস যেতে না যেতে মালিকরা আবারও কারখানা চালু করায় বুড়িগঙ্গা বিষাক্ত ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। পচা রাসায়নিকযুক্ত পানির দুর্গন্ধে বুড়িগঙ্গা নদীর দুই পাড়ের বাসিন্দারা দূষিত বায়ু গ্রহণ করে বিভিন্ন শ্বাসকষ্টসহ অ্যাজমা রোগে ভুগছেন। ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর দাবি—সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কেরানীগঞ্জের অবৈধ এসব  কারখানার বিদ্যুত্ ও গ্যাসলাইন  স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন করে সিলগালা  করা হোক। 

এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ জানান, তিনি রুহিতপুর বিসিক শিল্পনগরীর পাশ ঘেঁষে সোনাকান্দা মৌজায় ৩০০ একর জমিতে কেমিক্যাল পল্লি তৈরি করেছেন। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় তিনি ৮১টি কারখানাকে স্থানান্তর হওয়ার জন্য একাধিক সুযোগ-সুবিধা দিয়েও কারখানাগুলো সরিয়ে নিতে পারছেন না। উল্লেখ্য, বর্তমান সরকার ২০১৭ সালে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতালক্ষ্যা ও বালু নদী দূষণমুক্ত এবং দখলদারের হাত থেকে বাঁচাতে জাতীয় নদী কমিশন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা বিআইডব্লিউটিএ, পরিবেশ অধিদপ্তর ও ঢাকা জেলা প্রশাসককে নিয়ে ট্রাস্কফোর্স গঠন কারা হয়। তবে তারা এ পর্যন্ত বুড়িগঙ্গাসহ চারটি নদীর দুই পাড় অবৈধ দখলমুক্ত করতে সক্ষম হলেও  নদীগুলোর পানি দূষণমুক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে।