• শনিবার ০৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২১ ১৪৩১

  • || ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

ইন্টারনেটে নিজস্ব নিয়ন্ত্রণ চায় রাশিয়া, ইরান ও চীন

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১ জুলাই ২০১৯  

ইন্টারনেটের বর্তমান অখণ্ড রূপ আর থাকছে না। সাইবার জগতে জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির আশঙ্কায় ইন্টারনেটে সার্বভৌম ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে কয়েকটি দেশ। রাশিয়া, চীন ও ইরান নিজস্ব ইন্টারনেট ব্যবস্থা চালু করতে কাজ করে যাচ্ছে।

এখন পর্যন্ত চীন এ পথে অন্য সবার চেয়ে এগিয়ে। যুক্তরাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত বৈশ্বিক ইন্টারনেট ব্যবস্থা থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করতে ‘দ্য গ্রেট ফায়ারওয়াল অব চায়না’ নামে একটা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে চীন। এটা এক বিশাল সেন্সরশিপ ব্যবস্থা।

সফটওয়্যারনির্ভর এই সেন্সরশিপ ব্যবস্থা দিয়ে চীন তাদের জনগণের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। জনগণ কোন তথ্য, আধেয় বা কোন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারবে, তা এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

প্রযুক্তিবিষয়ক সাময়িকী অয়ারড বলছে, নিজস্ব ইন্টারনেট তৈরিতে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিচ্ছে রাশিয়া। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত মাসেই এমন ব্যবস্থা তৈরির জন্য নতুন আইন পাস করিয়েছেন।

ডিএনএস ইন্টারনেটের একটি মৌলিক বিষয়। এটা বলে দেয় কীভাবে ইন্টারনেটের আইপি অ্যাড্রেসকে পাঠযোগ্য করতে হয়। রাশিয়া এই ডিএনএস ব্যবস্থার একটি নিজস্ব রূপ তৈরি করেছে। এতে করে কেউ রাশিয়া থেকে গুগলের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে গেলে তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে যাবেন দেশটির নিজস্ব সার্চইঞ্জিন ইয়ানডেস্কে। একইভাবে ফেসবুকে ঢুকতে গেলে চলে যাবেন রাশিয়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ভিকেতে। গত এপ্রিলে এই বিষয়ে পরীক্ষা চালিয়ে সফল হয়েছে রাশিয়া।

রাশিয়ার পথে এগোচ্ছে ইরানও। গত মাসে ইরান ঘোষণা দিয়েছে, ‘জাতীয় তথ্য নেটওয়ার্ক’ প্রকল্পের কাজ ৮০ শতাংশ শেষ করেছে দেশটি। প্রকল্পটি ইরানের ‘নিজস্ব ইন্টারনেট’ ব্যবস্থা গড়ার অংশ।

বৈশ্বিক ইন্টারনেট ও এর প্রযুক্তিগত গঠন প্রক্রিয়ার নিয়ন্ত্রণ এখন পশ্চিমাদের হাতে। এ নিয়ন্ত্রণে অনেক রাষ্ট্রই খুশি নয়। এ ছাড়া মুক্ত ইন্টারনেটে এমন কিছু সমস্যা আছে, যা সব দেশের জন্যই সমান গুরুতর। বর্তমান সাইবার দুনিয়ায় একটি দেশের সামরিক স্থাপনা কিংবা বিদ্যুৎ বা জরুরি পানি ব্যবস্থাপনার মতোই ঝুঁকিপূর্ণ।

অয়ার্ড বলছে, যদি রাশিয়া ও ইরান তাদের চেষ্টায় সফল হয়, তাহলে ভবিষ্যতে এমন এক ইন্টারনেট ব্যবস্থা তৈরি হবে যেটার সঙ্গে বর্তমানের কোনো কিছুরই তুলনা চলে না। তবে এই প্রচেষ্টার পেছনে বিশাল প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ আছে। সেই সঙ্গে আছে অর্থনৈতিক বিষয়। তবে নিজস্ব ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠার পথ কোনোভাবেই অসম্ভব নয়।