• বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

  • || ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সিংগাইরের পাটের সামগ্রী যাচ্ছে আমেরিকা ইংল্যান্ডে

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২২ মে ২০১৯  

 প্লাস্টিকের তৈরি বিভিন্ন রকমারি পণ্যে যখন বাজারে সয়লাব তখন পাট দিয়ে তৈরি বাস্কেট, ফ্লোর ম্যাট, লন্ড্রি বাসকেট, ব্যাগ, লন্ড্রি বক্স, রশি, বাটি, কলমদানি, ঝুড়িসহ রকমারি হস্তশিল্প সামগ্রী তৈরি হচ্ছে মানিকগঞ্জের সিংগাইরের ফোর্ড নগর গ্রামের একটি বাড়িতে। মাত্র ১০ শতাংশ জমির ওপর গড়ে উঠেছে এই কুটির শিল্প কারখানাটি। কারখানার নাম বাংলা জুট হ্যান্ডিক্রাফট। বাংলা জুট হ্যান্ডিক্রাফটের সামগ্রী এখন যাচ্ছে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, জার্মান জাপানের মত উন্নত দেশে। দৃষ্টিনন্দন এসব সামগ্রী রফতানি করে সেখান থেকে আসছে বৈদেশিক মুদ্রা।

বাংলা জুট হ্যান্ডিক্রাফটের উদ্যোক্তা আব্দুস সাত্তার বলেন, ২টি মেশিন দিয়ে কারখানার কার্যক্রম শুরু করি। এখন মেশিনের সংখ্যা ৪০টি। এখানে ৬৫ জন শ্রমিক কাজ করেন। কেউ মেশিনের সাহায্যে, কেউ বা হাতের নিপুণ ছোয়ায় বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করছেন। আব্দুস সাত্তার বলেন, এক সময়ে ধামরাই বেঙ্গল গ্রুপের কার্পেট মিলে চাকরি করতাম। সেখানে সবকিছুই পাটের তৈরি। চাকরি করা অবস্থায় কাজে মনোযোগ দেই। সেখান থেকেই জানলাম এসব মালামাল কোথায় বিক্রি করা যায় এবং কার মাধ্যমে। কয়েক বছর আগে চাকরি ছেড়ে অবসরের টাকা ধারদেনার মাধ্যমে লাখ ৭০ হাজার টাকা যোগাড় করে মাত্র ২টি মেশিন নিয়ে ক্ষুদ্র আকারে এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলি। এরপর ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ উত্তর বঙ্গের বিভিন্ন এলাকা থেকে কাঁচা পাট ক্রয় করে জিনিসপত্র তৈরি করতে থাকি। এরপর পণ্যের স্যাম্পল দেখাই মহাজনদের। ২০টি পণ্যের স্যাম্পল দেখালে দুই একটি মাত্রওকেহয়। এতে আমি কাজ পেয়ে যাই। পরবর্তীতে আরেকটি স্যাম্পলের দিকে নজর দেই।

এভাবেই পণ্য বাড়াই এবং এক পর্যায়ে সব পণ্যেরই অর্ডার পেয়ে যাই। শতকরা মাত্র ১০ পার্সেন্ট লাভে পণ্য বিক্রি করি। তবে বায়াররা আমার কাছ থেকে পণ্য কিনে ডবল দামে বিক্রি করে। বিদেশে হস্তশিল্প সামগ্রীর প্রচুর চাহিদা। আব্দুস সাত্তার আক্ষেপ করে বলেন, বায়াররা পাটের ওপর সরকারের কাছ থেকে সাবসিডি পেলেও আমি পাই না। তারাই ব্যাংকের যাবতীয় সুযোগ সুবিধা পায়। বানাই আমি কিন্তু সুফল ভোগ করেন তারা, নামও হয় তাদের।

যদি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেতাম এবং সরাসরি এসব পণ্য বিদেশে রফতানি করতে পারতাম তাহলে আমি লাভবান হতাম এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারতাম। তারপরও ব্যবসায় সবকিছু মিলে ভালোই আছি। যেখানে মাত্র ২টি মেশিন নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম সেখানে এখন ৪০টি মেশিনে কাজ করছি। আমার উদ্দেশ্য একটাই এখান থেকে আয় করে আমি বাঁচবো এবং আমার শ্রমিকরা বাঁচবে। এজন্য অল্প লাভেই আমার ব্যবসা।