• বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

  • || ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

ব্যস্ত সময় পার করছেন সুই-সুতার নারী কারিগররা

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৭ মে ২০১৯  

পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন মানিকগঞ্জের সুই-সুতার নারী কারিগররা। সাংসারিক কাজের অবসরে সুই-সুতার কাজের মাধ্যমে আয় করে কিছুটা হলেও আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন তারা। পিছিয়ে নেই স্কুল-কলেজ পড়ুয়া মেয়েরাও। তবে শ্রম অনুযায়ী পারিশ্রমিক না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাদের।

রবিবার (২৬ মে) মানকিগঞ্জ সদর এলাকার মিতরাতে পাঞ্জাবি, শাড়ি, ফতুয়া, মেয়েদের সালোয়ার- কামিজসহ শিশুদের জামা-কাপড়ে সুই-সুতার কাজের এমন চিত্র দেখা যায়।

২০ থেকে ২৫ বছর আগে এই কাজ শুরু হয়েছিলো সীমিত আকারে। প্রথমদিকে শুরু করেছিল আয়শা আবেদ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে। বর্তমানে জেলায় এদের ৮০টি কেন্দ্র রয়েছে আর এখানে গ্রামের নারীরা এসে সুই-সুতার কাজ করে। এদের অনুসরণ করে আরও বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নারীদের দিয়ে সুই-সুতার কাজ করাচ্ছে। তবে এদের নির্দিষ্ট কোনো কেন্দ্র নেই। নিজ নিজ বাড়িতে বসেই কাজ করেন এদের নারী কারিগররা। কাজের ধরণ ভেদে এরা প্রতি মাসে আয় করেন তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা।

সোলন্দি আয়েশা আবেদ ফাউন্ডেশনের সাব সেন্টারের ইনচার্জ সাজেদা বেগম বলেন, আমাদের এই সাব সেন্টারে ২০ জন নারী কারিগর রয়েছে। এখানে ছোট কাজ-ভরাট, আউট লাইন, কন্টেন্ট সেলাই, সট ওয়ার্ক এবং বড় কাজ- আগলা ভরাট, লাইন ভরাটের কাজ হয়ে থাকে।

ঈদের সামনে কাজের চাপ একটু বেশিই থাকে এছাড়া সারা বছর তেমন একটা চাপ থাকে না। যে অর্ডার আছে তা ২০ রোজার মধ্যে ডেলিভারি দিতে হবে।

একই এলাকার সুই-সুতার কারিগর মাকসুদা, স্বর্না এবং সুমি আক্তার বলেন, সাংসারিক কাজের ফাঁকে ফাঁকে এই সাব কেন্দ্রে সুই-সুতার কাজ করি। এখান থেকে যে টাকা পারিশ্রমিক পাই তা টানাটানির সংসারে অনেক উপকারে আসে। তবে আমরা যারা এখানে সুই-সুতার কাজ করি তারা ন্যায্য মজুরি পাই না। একটা শাড়ির লাইন ভরাট করলে ৮০ টাকা পাই অথচ সেই শাড়ি ঢাকার শো-রুমে উঠলে কয়েক হাজার টাকায় বিক্রি হয়।

মানিকগঞ্জের ফ্যাশন হাউজ নকশীর পরিচালক শরিফুল ইসলাম সুমন বলেন, মানিকগঞ্জে প্রায় ১০ হাজার নারী কারিগর সুই-সুতার কাজ করেন। এরা বছরে প্রায় লক্ষাধিক পিস পোশাক উৎপাদন করেন। সমস্ত পোশাক বিক্রি হয় মানিকগঞ্জসহ ঢাকার নামি দাবি ব্র্যান্ডের শো-রুমে।

আয়েশা আবেদ ফাউন্ডেশনের গড়পাড়া সেন্টার ম্যানেজার অজিত সরকার বলেন, আমার আন্ডারে ৩৪টি সাব সেন্টারে ১২ শতাধিক কারিগর কাজ করেন। প্রতি ঈদের সময় কাজের চাপ একটু বেশি থাকে। বছর প্রায় ৭০ হাজার পিস পাঞ্জাবি, ফতুয়া, এসকেডি (সালোয়ার-কামিজ), টু-পাট্টা, টাগা (টপস), শাড়ি এবং বেবি ড্রেস তৈরি করা হয়েছে। গ্রামের অনেক নারীরা এখানে কাজ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। আমাদের তৈরি পোশাক শুধু মাত্র আমাদের নিজস্ব শো-রুমে বিক্রয় করা হয়।