• বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

  • || ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

রাস্তার কাজে শ্রমিকের বদলে ভেকু, অনিয়মের অভিযোগ

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৯ জুন ২০১৯  

ঢাকার ধামরাইয়ে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দ্বিতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিয়ম অনুযায়ী ইজিপিপির এসব কাজ শ্রমিকদের দিয়ে করানোর কথা থাকলেও বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে শ্রমিকের বদলে ভেকু (মাটি খননযন্ত্র) ব্যবহার করা হচ্ছে।

কোনো শ্রমিক না রেখে ভেকু ব্যবহার করলেও ব্যাংক থেকে শ্রমিকের মজুরি বাবদ টাকা উত্তোলন করা হচ্ছে ঠিকই। আবার যেসব ইউনিয়নে শ্রমিকরা কাজ করছে সেখানে প্রকল্পে নির্ধারিত শ্রমিক সংখ্যার চেয়ে কমসংখ্যক শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখানেও প্রকল্পের নির্ধারিত শ্রমিক সংখ্যা দেখিয়ে বেশি টাকা উত্তোলন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, কর্মসূচিতে ধামরাই, ভাড়ারিয়া, রোয়াইল, সুয়াপুর, আমতা, সুতিপাড়া, সানোড়া, বালিয়া, কুল্লা, বাইশাকান্দা, নান্নারসহ কয়েকটি ইউনিয়নে প্রকল্পের কাজে শ্রমিকের বদলে ভেকু ব্যবহার করা হচ্ছে। আগামীকাল রবিবার ইজিপিপির ৪০ দিনের এ কর্মসূচির অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থানের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এদিকে জুন মাসে অর্থবছর শেষ হওয়ার আগে তড়িঘড়ি করে দায়সারাভাবে কাজ করা হলেও প্রকল্পের পুরো টাকা উত্তোলন করে প্রকল্পের চেয়ারম্যানরা নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারার পাঁয়তারা করছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে দেখা যায়, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের ৬৪টি প্রকল্পে ৪০ দিনের জন্য দুই হাজার ১৫১ জন শ্রমিকের মজুরি বাবদ এক কোটি ৭২ লাখ আট হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভেকু দিয়ে কাজ করায় ও শ্রমিক কম নেওয়ায় এ টাকা যাচ্ছে অন্যদের পকেটে।

 

কুল্লা ইউনিয়নের ‘চৌটাইল কুমের পাড় পাইপ কালভার্ট থেকে অনিল ডাক্তারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পুনর্নির্মাণ’ প্রকল্পে ৪০ দিনের প্রতিদিন ৪৭ জন অতি দরিদ্র শ্রমিকের কাজ করার কথা। কিন্তু দেখা যায়, শ্রমিকের পরিবর্তে ভেকু দিয়ে মাটি ফেলা হচ্ছে রাস্তায়। এ রাস্তার দেখাশোনার দায়িত্বে আছেন প্রকল্পের সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য সঞ্জয় কুমারের নিয়োগ দেওয়া বজলু মিয়া। তিনি জানান, গত ২২ জুন পর্যন্ত ১৯ দিন ভেকু দিয়েই কাজ করা হয়েছে। একই ইউনিয়নে ‘বাড়ীগাঁও উত্তর পাড়া পাকা রাস্তা থেকে আলালের বাড়ির রাস্তা পুনর্নির্মাণ’ প্রকল্পেও দেখা যায় একই চিত্র। এখানেও শ্রমিক না নিয়ে ভেকু দিয়ে সব কাজ করা হচ্ছে। এমন চিত্র দেখা যায় সুতিপাড়া ইউনিয়নের কয়েকটি প্রকল্পেও। কয়েকটি ইউনিয়নের কিছু প্রকল্পে শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। কিন্তু সেখানে যত শ্রমিক নিয়োগ দেওয়ার কথা, শ্রমিক সংখ্যা তার চেয়ে অনেক কম।

 

এ ব্যাপারে কুল্লা ইউনিয়নের প্রকল্প চেয়ারম্যান কালিপদ সরকার বলেন, ‘ভেকু দিয়ে কাজ করলে অর্থের সাশ্রয় হয়, কাজও ভালো হয়। এ ছাড়া প্রতিদিন ২০০ টাকায় শ্রমিক পাওয়া যায় না। ফলে ভেকু দিয়েই কাজ করতে হচ্ছে।’

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন, প্রকল্পে অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রথম পর্যায়ে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থানের কাজেও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল।