• শনিবার ০৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২১ ১৪৩১

  • || ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

মির্জাপুরে দুই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি; কলেজ অধ্যক্ষ বরখাস্ত

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৩ জুলাই ২০১৯  

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কলেজের কক্ষে আটকিয়ে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির দুই ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে মির্জাপুর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কলেজ পরিচালনা পরিষদ। একইসঙ্গে তাকে ১৫ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল মালেকের কার্যালয়ে তার উপস্থিতিতে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের এ তথ্য জানান কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও লতিফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২০ ডিসেম্বর কলেজের একটি কক্ষে আটকিয়ে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির দুই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করেন অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ। এসময় ওই দুই ছাত্রীর চিৎকার করলে এক ছাত্রীর মা স্থানীয় লোকজন নিয়ে সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করেন। ঘটনায় পুলিশ অধ্যক্ষ হারুনকে আটক করলেও থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই দিন দুপুর ১২টার দিকে স্কুল পড়ুয়া ওই দুই ছাত্রীসহ কয়েকজন শিশু মহিলা কলেজ মাঠে ব্যাডমিন্টন খেলতে যায়। কলেজের অধ্যক্ষ মাঠে থাকা কয়েকজন মেয়ে শিশুকে কলেজ দেখানোর কথা বলে ডেকে ভবনের একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাদের বিস্কুট খাইয়ে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ওই দুই ছাত্রীকে রেখে সবাইকে বের করে দেন। পরে অধ্যক্ষ কক্ষের দরজা আটকিয়ে ওই দুই ছাত্রীকে জড়িয়ে ধরে স্পর্শকাতর অঙ্গে হাত দিতে থাকেন।

এসময় তারা চিৎকার করলে এক ছাত্রীর মা এগিয়ে এসে কলেজের প্রধান ফটকে তালা আটকানো দেখতে পান। কলেজের অফিস পিয়ন ইরশাদ আলী এসে তালা খুলে দেন। এরপর ওই ছাত্রীর মা কলেজের একটি কক্ষ থেকে লুঙ্গি পরা খালি গায় অবস্থায় কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদকে বের হতে দেখেন। পরে সেখান থেকে ওই ছাত্রীদের উদ্ধার করা হয়।

ওই দুই ছাত্রীর অভিভাবক এ বিষয়ে মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল মালেকের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন। বিষয়টি টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলামের নজরে আসলে তিনি তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. হারুন অর রশিদকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মশিউর রহমান এবং মহিলা বিষয়ক অফিসার মিনু পারভীন।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর গত ২৪ জুন শিক্ষকদের উপস্থিতিতে কলেজ পরিচালনা পরিষদের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত এবং কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। ১৫ দিনের মধ্যে উপযুক্ত কারণ দর্শাতে ব্যার্থ হলে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এর আগেও এক মেয়েকে ডেকে নিয়ে ওই অধ্যক্ষ তার কক্ষে আটকিয়ে শ্লীলতাহানি করে। এছাড়া কলেজের ছাত্রীদের সঙ্গেও তিনি অহরহ এ ধরনের ঘটনা ঘটালেও লোকলজ্জায় কেউ অভিযোগ করেন না। তবে এসব কারণে অনেক অভিভাবক তাদের মেয়েদের কলেজ থেকে অন্যত্র নিয়ে গেছেন বলেও স্থানীয়রা জানান।