• বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

  • || ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

গাজীপুরের ঝর্ণা হত্যা মামলা ধামাচাপার প্রতিবাদে মানববন্ধন

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারি ২০১৯  

গাজীপুরে কালিয়াকৈর উপজেলার রাঙ্গামাটি গ্রামের রওশন আলমের কন্যা ঝর্ণা আক্তার (১৯) কে হত্যার পর লাশ গুমকারীদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবীতে গত ২০ জানুয়ারী সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন করেন ঝর্ণার পরিবার ও এলাকাবাসী ঝর্ণার পরিবারসহ এলাকাবাসীর দাবী হত্যার পর থেকেই পুলিশ মামলাটি ধামাচাপা দিতে উঠে পড়ে লেগেছে পুলিশ আসামীদের নিকট থেকে টাকা খেয়ে গত দেড় বছরেও হত্যার মূল রহস্য উদ্ঘাটন না করে বরং মামলার বাদীকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে

জানা গেছে, ১৩ মার্চ-২০১৭ সালে ঢাকার ধামরাই উপজেলার কাজিয়ারকুন্ড বড় কুশিয়ারার আঃ সাত্তারের ছেলে শাহাদাত হোসেন (২২) এর সাথে শরীয়ামতে গাজীপুরে কালিয়াকৈর উপজেলার রাঙ্গামাটি গ্রামের রওশন আলমের কন্যা ঝর্ণা আক্তারের বিবাহ হয় বিয়ের পর থেকে শাহাদাত তার মা ভাই বোনদের কু-পরামর্শে যৌতুকের জন্য ঝর্ণার উপর একের পর এক শারীরিক নির্যাতন করে বিষয়টি একাধিকবার স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিচার শালিস মীমাংসা করে দেয় কিন্তু কিছুতেই আসামী শাহাদাতের মন ভরে না

যৌতুকের দাবী করে ২০১৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাত ৯ টার দিকে শাহাদাত ও তার মা-বোন মিলে ঝর্নাকে মারধর করে এ সময় প্রতিবেশী আবুল কাশেম উপস্থিত হয়ে বিষয়টি শান্ত করেন কিন্তু আবুল কাশেম চলে আসার পরে আসামীরা ঝর্ণাকে হত্যা করে তার লাশ গুম করে

ঘরে ফিরে আবুল কাশেম ঝর্ণার বাবাকে মোবাইল ফোনে ঝর্ণাকে মারধরের খবর জানালে ঝর্ণার বাবা ২৮ তারিখ ভোর বেলা ঝর্ণাকে দেখার জন্য শাহাদাতের বাড়ীতে আসে কিন্তু ঝর্ণার বাবা শাহাদাতের বাড়ীতে এসে কোন লোকজন দেখতে পায় না এবং ঘর দরজা তালাবদ্ধ দেখতে পান, প্রতিবেশীদের জিজ্ঞেস করলে কেউ কিছুই বলতে পারে না অনেক খোজাখুজি করে কাউকে না পেয়ে রওশন আলম ৩০ তারিখে ধামরাই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ডায়েরী নং-১১১৮/১৭   

ঝর্ণার বাবা জিডি করার পর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই শেখ সজীব ভিকটিম ঝর্ণা আক্তার বা তার লাশ উদ্ধারের কোনো চেষ্টাই করে না ঝর্ণার বাবা রওশন আলম থানায় মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ মামলাও নেয় না বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হলে ১০ অক্টোবর-২০১৭ ইং তারিখে ৪ জনকে আসামী করে ধামরাই থানা পুলিশ নারী ও শিশু নির্যাতন দমনে  একটি মামলা করে মামলা নং-১০/১৭

মামলা করার তিন মাস পর তদন্ত কর্মকর্তা শেখ সজীব ভিকটিমকে উদ্ধার না করে আসামীদের পক্ষ অবলম্বন করে নিরব ভুমিকা পালন করে এবং রওশন আলমের নিকট থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকাও হাতিয়ে নেয় মামলার তদন্তে এসআই সজীবের রহস্যজনক আচরণের কারণে রওশন আলম মামলাটি  পিবিআইতে ট্রান্সফার করায়

মামলটি পিবিআই এর কর্মকর্তা এসআই নুর নবী তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই কর্মকর্তা নুর নবীও আসামীদের গ্রেপ্তার না করে বিভিন্ন প্রকার টালবাহনা শুরু করে রওশন আলম আসামীর অবস্থান সনাক্ত করে নাটোর জেলার সিংরা থানা পুলিশে মাধ্যমে গ্রেপ্তার করান শাহাদাত গ্রেপ্তার হওয়ার পর এসআই নুর নবী তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেন কিন্তু অপর ৩ আসামীকে গ্রেপ্তার না করায় তার কোর্ট থেকে জামিনে নেন আর এসআই নুর নবী সকল আসামীকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাবাদ না করে প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে আদালতে একটি রিপোর্ট প্রদান করেন রওশন আলম আদালতে ঐ প্রতিবেদনের বিপরীতে না রাজির আবেদন জানালে আদালত তা আমলে নিয়ে মামলাটি অধিকতর তদন্ত করে পুনরায় প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য সিআইডিকে নিদের্শ দেয় ১নং আসামী বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে তবে সিআইডি মামলাটি তদন্ত ভার গ্রহণ করার পর ৪ মাস অতিবাহিত হলেও সিআইডি ৪ মিনিটে জন্যও মামলাটি তদন্ত করেনি সিআইডির এসআই মিজানুর রহমানের দায়িত্বে অবহেলা কারনে মামলাটির তদন্তকার্যক্রম ফাইল চাপা হয়ে পড়ে আছে

এদিকে শাহাদাতের পরিবার থেকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য রওশন আলমকে বার বার প্রাণনাশের দিয়ে যাচ্ছে ঝর্ণার বাবা রওশন আলম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে জানান, একটি অসহায় গরীব পরিবারের মেয়েকে যৌতুকের জন্য হত্যা করে তার লাশ গুম করা হয়েছে অথচ পুলিশ আইনে সেবক হয়ে অসহায়ে পাশে না দাড়িয়ে আসামীদের পক্ষ অবলম্বন করে প্রকৃত সত্য ঘটনাকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে