• রোববার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

  • || ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

কিশোর গ্যাং আতঙ্ক সাভারে

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৮ এপ্রিল ২০২৪  

সাভারে প্রতিনিয়ত বাড়ছে কিশোর গ্যাংয়ের ভয়ংকর তৎপরতা। গত এক মাসে কিশোর গ্যাংয়ের হাতেই ঘটেছে ৪টি হত্যাকাণ্ড। ফলে সাভার এখন রীতিমতো পরিণত হয়েছে আতঙ্কের নগরীতে। গোয়েন্দা সংস্থা ও স্থানীয়দের তথ্যমতে, সাভার ও আশুলিয়া মিলিয়ে শতাধিক কিশোর গ্যাং রয়েছে। এসব গ্যাংয়ের অধিকাংশ সদস্যই স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী। সাম্প্রতি সাভারে ঘটে যাওয়া খুন, ছিনতাই, আধিপত্য বিস্তার ও মাদক কারবারের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিশোর গ্যাং সদস্যরা। এ ছাড়া স্থানীয় অনেক নেতা এলাকায় চাঁদাবাজি, জমি দখল, ডিস ও নেট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, ছিনতাই, অপহরণ, মারামারি, অস্ত্রবাজি, উত্ত্যক্তসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডে আধিপত্য বজায় রাখতে কিশোর গ্যাং বাহিনী গড়ে তোলেন। এদের লাগাম  কোনোভাবেই টানতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

গত ১১ মার্চ রাতে সাভারের বিনোদবাইদ এলাকায় কাঠমিস্ত্রি সোহেল মোল্লাকে বাসা থেকে ডেকে নেয় কিশোর গ্যাং লিডার আল-আমিন ও তার সহযোগী সজিব। এরপর নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছাতেই ওতপেতে থাকা অন্য সদস্যরা তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। এরপর ২১ মার্চ রাতে সোবহানবাগে হত্যা করা হয় আমজাদ নামের এক ব্যক্তিকে। ২৮ মার্চ দিনদুপুরে ছায়াবীথি আমতলা মহল্লায় শহীদুল এবং ১২ এপ্রিল আরাপাড়ার বালুর মাঠ এলাকায় ফার্নিচারের রং মিস্ত্রি সাজ্জাদ হোসেনকে হত্যা করে কিশোর গ্যাং সদস্যরা। এ ছাড়া গত ৩১ মার্চ সাভারের রেডিও কলোনিতে কিশোর গ্যাংয়ের ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন কলেজছাত্র রবিউল। তথ্য বলছে, কেবল সাভার পৌরসভাতেই অর্ধশতাধিক কিশোর গ্যাং গ্রুপ রয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় পিনিক রাব্বি, হৃদয় গ্রুপ, ভাই-ব্রাদার গ্রুপের সদস্যরা। নিজেদের দ্বন্দ্ব থেকে ভাগ হয়ে তৈরি হচ্ছে কিশোর গ্যাংয়ের আরও নতুন নতুন গ্রুপ। সাভার পৌরসভার বাসিন্দা রিপন মোল্লা বলেন, রাস্তাঘাটে এখন আমাদের চলাচল করতেই ভয় লাগে।

পৌরসভার আমতলা মহল্লার ব্যবসায়ী মাসুদ মিয়া বলেন, এক মাসে চার চারটা খুন হয়ে গেল। আগে এলাকায় এ রকম ছিল না, বর্তমানে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি হয়েছে। সাভার পৌরসভার মেয়র হাজি মোহাম্মদ আবদুল গণি বলেন, কিশোর গ্যাং নির্মূলে আমরা ইতিমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মিটিং করেছি। পাশাপাশি প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে ভিন্ন ভিন্ন কমিটি করার উদ্যোগ নিয়েছি। এই কমিটির কাজ হবে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের চিহ্নিত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া। এ ছাড়া জনসচেতনামূলক কর্মকাণ্ড ও অভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজও  শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন বলেন, কিশোর গ্যাং বাহিনী ও অপরাধ কর্মকাণ্ড দমনে এসপির নির্দেশে ইতিমধ্যে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হচ্ছে।