• রোববার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

  • || ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

বিশ্ব থেকে হারিয়ে যাওয়া পাঁচ দেশ

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৬ জানুয়ারি ২০২০  

বিশ্ব মানচিত্রে নতুন দেশ যোগ হওয়ার খবর এ বছরও শোনা গিয়েছিল। কিন্তু দেশ কি শুধু জন্মায়, হারায় না? রাজনৈতিক কোন্দল, যুদ্ধ, স্বাধীনতা সংগ্রাম, জোট ভাঙনসহ বিভিন্ন কারণে গত এক শতাব্দীতে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে অনেক দেশ। বিলীন হয়ে যাওয়া এমন কয়েকটি দেশ নিয়ে এই আয়োজন-

 

যুগোস্লাভিয়া

যুগোস্লাভিয়া

যুগোস্লাভিয়া

প্রায় শত বছর আগের কথা। অসট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্য থেকে বেরিয়ে ১৯১৮ সালে দক্ষিণ পূর্ব ইউরোপে সার্বিয়া, ক্রয়োশিয়া, স্লোভেনিয়া, বসনিয়া হার্জেগোভিনা, মেসিডোনিয়া, মন্টিনিগ্রো এবং কসোভো—এই দেশগুলো মিলে এক নতুন রাজ্যের জন্ম হয়। ১৯২৮ সালে দেশটির নাম দেয়া হয় যুগোস্লাভিয়া। কিন্তু একজোট হওয়ার পর যুগোস্লাভিয়া আরো বেশি শত্রুতার সম্মুখীন হয় এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে লিপ্ত হয়। যুদ্ধের পর দেশটি কিংবদন্তি সাম্যবাদী নেতা মার্শাল টিটোর অধীনে এগিয়ে যেতে থাকে। কিন্তু ১৯৮০ সালে টিটোর মৃত্যুর পর বিভিন্ন অন্তরকলহের ফলে ১৯৯২ সালে যুগোস্লাভিয়া ভেঙ্গে যায়। সদস্য দেশগুলোও ভাগ হয়ে যায়। সর্বশেষ ২০০৮ সালে সার্বিয়ার অধীনে আর না থাকার ঘোষণা দেয় কসোভো, তারাই সর্বশেষ স্বাধীন যুগোস্লাভ দেশ।

 

তিব্বত

তিব্বত

তিব্বত

হিমালয়ের উত্তর অংশে শত শত বছর ধরে দাঁড়িয়ে আছে তিব্বত নামের রহস্যময় রাজ্যটি। তিব্বত হিমালয়ের উত্তরে অবস্থিত ছোট একটি দেশ। ১৯১২ সালে ত্রয়োদশ দালাই লামা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত একটি স্ব-শাসিত অঞ্চল তিব্বত। মধ্য এশিয়ায় অবস্থিত এ অঞ্চলটি তিব্বতীয় জনগোষ্ঠীর আবাসস্থল। এ অঞ্চলটিকে চীনের অংশ বলা হলেও এখানকার বেশির ভাগ তিব্বতি এ অঞ্চলকে চীনের অংশ মানতে নারাজ। এ নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। ১৯৫৯ সালে গণচীনের বিরুদ্ধে তিব্বতিরা স্বাধিকার আন্দোলন করলে, তা ব্যর্থ হয়। তখন দালাই লামার নেতৃত্বে অসংখ্য তিব্বতি ভারত সরকারের আশ্রয় নিয়ে হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় বসবাস শুরু করেন। সেখানে স্বাধীন তিব্বতের নির্বাসিত সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়।

 

আবিসিনিয়া

আবিসিনিয়া

আবিসিনিয়া

ইসলামিক বইপত্রে এই দেশটির নাম অনেকেই পেয়ে থাকবেন। আবিসিনিয়া নামটি ইউরোপে প্রচলিত; তবে আরবে এর ডাক নাম ‘ইথিওপিয়া’। ১৯ শতকে ইতালি অনেক চেষ্টা করে আবিসিনিয়া দখল করতে ব্যর্থ হয়। আসলে ইথিওপিয়া যে দেশটি আফ্রিকার শিং নামে অধিক পরিচিত, কখনোই কারো উপনিবেশে পরিণত হয়নি। ১৯৩০ সালে ইতালিয়ান নেতা মুসোলিনী আংশিকভাবে ইথিওপিয়া দখলে সমর্থ হয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশবযুদ্ধের পর জাতিসংঘ গঠনে যে দেশগুলো ভূমিকা রেখেছে, ইথিওপিয়া তার মধ্যে অগ্রগণ্য। সুপ্রাচীণ ইতিহাসে সমৃদ্ধ ইথিওপিয়াতে পাওয়া গেছে পৃথিবীর সবচেয়ে পুরাতন মানুষের ফসিল। ইথিওপিয়ার লাভা হ্রদ পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্গম জায়গাগুলোর একটি।

 

চেকোস্লোভাকিয়া

চেকোস্লোভাকিয়া

চেকোস্লোভাকিয়া

এই দেশটি যুগোস্লাভিয়ার মতো ১৯১৮ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাবে গঠিত হয়। পূর্ব ইউরোপের তিন দেশ মোরাভিয়া, স্লোভাকিয়া এবং বহেমিয়া;  অস্ট্র-হাংগেরিয়ান সাম্রাজ্য থেকে বেরিয়ে এ দেশটি গঠন করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মান অক্ষ শক্তির পক্ষে যুদ্ধে অংশ নেয় দেশটি। ১৯৯৩ সালে শান্তিপূর্ণভাবেই চেকোস্লোভাকিয়া ভেঙ্গে চেক রিপাবলিক এবং স্লোভাকিয়া নামের দুটি দেশের জন্ম হয়। চেক প্রজাতন্ত্র বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর দেশ বলে খ্যাত।

 

সিকিম

সিকিম

সিকিম

হিমালয়ের এই ছোট্ট এলাকার নাম কম-বেশি অনেকেরই জানা। ১৬৪২ থেকে ১৯৫০ সাল অবধি; ভারতের রক্ষণাবেক্ষণে যাওয়ার আগ পর্যন্ত; সিকিম ছিল একটি আলাদা সাম্রাজ্য। ১৯৭৫ সালে সিকিমকে ভারতের একটি রাজ্য বলে ঘোষণা করা হয়। তুষারময় সিকিমের সঙ্গে নেপাল, ভুটান ও তিব্বত (চীন) এর সীমান্ত রয়েছে।