• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

ঈদযাত্রায় ভোগান্তি কমবে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৭ মে ২০১৯  

ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের ২টি ফ্লাইওভার ৪টি আন্ডারপাস যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। শনিবার (২৫ মে) সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফ্লাইওভার এবং আন্ডারপাসগুলো উদ্বোধন করেন। আর এসব আন্ডারপাস ফ্লাইওভার খুলে দেওয়ায় সাধারণ মানুষও স্তস্তিতে চলাচল করতে পারছে।

ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইল শহর বাইপাস চালু করা হয় ২০০১ সালে। বাইপাস সড়কের পশ্চিম থেকেই টাঙ্গাইল পৌর এলাকা শুরু। আর পূর্বপাশে পড়েছে টাঙ্গাইল রেলওয়ে স্টেশন।

টাঙ্গাইল শহর থেকে ট্রেনে যাতায়াত করতে ঝুঁকিপূর্ণ বাইপাস পার হতে হতো। এছাড়াও সদর উপজেলার ঘারিন্দা, কালিহাতী উপজেলার পাইকরা, বল্লা, কোকডহরা সহদেবপুর এবং বাসাইল উপজেলার ফুলকি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন টাঙ্গাইল শহরে যাতায়াত করতে বাইপাস পার করতে হতো। বাইপাস দিয়ে ঢাকার থেকে উত্তরবঙ্গগামী দ্রুত গতির গাড়ি চলাচল করে। এটি অতিক্রম করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটতো।

স্থানীয়রা জানায়, বাইপাস চালু হওয়ার পর রাস্তা পার হতে গিয়ে ঘারিন্দা মোড়ে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ২০ জন। পঙ্গু হয়েছে আরও অনেক। তাই এলাকার মানুষের দাবি ছিল এখানে আন্ডারপাস নির্মাণের।

স্থানীয়দের দাবির মুখে জয়দেবপুর-এলেঙ্গা চাল লেন প্রকল্পের আওতায় এখানে আন্ডারপাস নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যে দুটি ফ্লাইওভার এবং চারটি আন্ডারপাস উদ্বোধন করেন তার একটি হচ্ছে টাঙ্গাইল শহর বাইপাসের ঘারিন্দা আন্ডারপাস।

 

টাঙ্গাইল শহর বাইপাসের ঘারিন্দা আন্ডারপাস

রোববার (২৬ মে) সরেজমিনে ওই আন্ডারপাস এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বদলে গেছে পুরোনো দৃশ্যপট। আগে শহর থেকে রেল স্টেশনের দিকে যেতে বাইপাস অতিক্রম করতে দুপ্রান্তে সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকতো। বাইপাসের গাড়ির চাপ কম হলে অতিক্রম করতে হতো। এখন আর সে ঝামেলা নেই। শহর থেকে রেল স্টেশন পূর্বাঞ্চলের ইউনিয়নগুলো যাওয়ার যানবাহন নির্বিঘ্নে পার হয়ে যাচ্ছে আন্ডারপাস দিয়ে।

সড়ক জনপথ বিভাগ সূত্র জানায়, মহাসড়ক দিয়ে ২৬টি জেলার ৯০টি রুটের যানবাহন চলাচল করে থাকে। ব্যস্ততম মহাসড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্নে করতে ২০১৩ সালে দুই লেনের মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। ২০১৬ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়। দুটি সার্ভিস লেন, ২৯টি নতুন সেতু, চারটি ফ্লাইওভার ১৪টি আন্ডারপাস সংযুক্ত হওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে (চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে) কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। জন্য মাঝে-মধ্যে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে সবচেয়ে বেশি ঈদ যাত্রায় যানজটে পড়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষদের। মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার ধেরুয়া রেলক্রসিং এলাকায় যানজটের আটকা পড়ে দুর্ভোগের চিত্র ছিল প্রতিদিন।

 

এর আগে, গত বছর ঈদুল আযহার আগে মহাসড়কে ধেরুয়া এলাকার ফ্লাইওভার সেতুগুলোর কাজ শেষ হওয়ায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যানচলাচলের জন্য খুলে দেন। কারণে গত ঈদে যানজটের সেই চিরচেনা চিত্রটি একেবারেই ছিল না।

এছাড়া মহাসড়কের চন্দ্রা, কালিয়াকৈর, হাটুভাঙা রোড, দেওহাটা, মির্জাপুর, কুর্ণী, ধল্যা, পাকুল্যা, নাটিয়াপাড়া, ঘারিন্দাসহ টাঙ্গাইলের প্রায় ৪৫ কিলোমিটার এলাকায় বিগত দিনে যে যানজট লেগে থাকতো তা এরই মধ্যে অনেকটাই দূর হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র এবং ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।

টাঙ্গাইল থেকে কালিহাতীর ছাতিহাটি রুটে চলাচলকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক আকবর হোসেন জানান, আগে বাইপাস পার হতে ভয়ে বুক কাঁপতো। এখন আর সে ঝামেলা নেই। নির্বিঘ্নে চলে যেতে পারেন।

স্টেশন এলাকায় গিয়ে কথা হয় ট্রেনযাত্রী হামিদুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, আগে বাইপাস পার হতে অনেক সময় লাগতো। সে জন্য নির্ধারিত সময়ে স্টেশনে পৌঁছাতে না পারায় ট্রেন চলে যেতো। এখন আর সে দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।

সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্পের উপপ্রকল্প ব্যবস্থাপক মাহবুব আলম জানান, কোনাবাড়ী ফ্লাইওভারের দৈর্ঘ্য ১৬৪৫ মিটার, প্রস্থ ১৮. মিটার, চন্দ্রা ফ্লাইওভারের দৈর্ঘ্য ২৮৮ মিটার, প্রস্থ ১৮. মিটার।

অপরদিকে মির্জাপুর, কালিয়াকৈর ঘারিন্দা আন্ডারপাসের দৈর্ঘ্য ৪০০ মিটার প্রস্থ্য ১৮. মিটার দেওহাটা আন্ডার পাসের দৈর্ঘ্য ২৬০ মিটার প্রস্থ ১৮. মিটার।