• বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

  • || ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

‘তুমি দেখে গেলে না বাবা’

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৫ জুলাই ২০১৯  

মানিকগঞ্জে ঘুষ বা তদবির ছাড়াই মাত্র ১০৩ টাকা খরচে পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি পেয়েছেন ১৩১ জন। এর মধ্যে রয়েছেন ৮৯ পুরুষ ও ৪২ নারী।

বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা পুলিশ লাইনে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তাদের চাকরি দেয়া হয়। নিয়োগপ্রাপ্তরা অধিকাংশই দরিদ্র পরিবারের সদস্য।

চাকরি পাওয়া ঘিওর উপজেলার পেচারকান্দা গ্রামের সুমি আক্তার বলেন, বাবা কৃষি কাজ করতেন। এখন পক্ষাঘাত হয়ে ঘরে পড়ে আছেন। বাবার স্বপ্ন ছিল পুলিশের চাকরি করি। বিনে পয়সায় তদবির ছাড়াই বাবার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়েছে।

চাকরির বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার পর মানিকগঞ্জ পুলিশ লাইনে মাকে জড়িয়ে কান্না করছিলেন রুনা আক্তার। রুনা বলেন, তোমার মেয়ের পুলিশে চাকরি হয়েছে, তুমি দেখে গেলে না বাবা।

রুনা আক্তার আরো বলেন, তার বাবা কৃষি কাজ করতেন। গত বছর মারা গেছেন। বাবার স্বপ্ন্ ছিল পুলিশের চাকরি করবো। বাবার সেই স্বপ্ন্ সত্য হয়েছে। কিন্তু বাবা আজ বেঁচে নেই।

বকুল আক্তার বলেন, বাবা ছোট বেলায় মারা গেছেন। বড় বোনের সংসারে থেকে এখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছি। পুলিশ নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেখে আবেদন করি। পরীক্ষায় প্রথম হয়েছি। ধারণা ছিল মেধায় চাকুরি হয় না। কিন্তু মানিকগঞ্জের এসপি রিফাত রহমান শামীম ধারণা পাল্টে দিয়েছেন।

সুব্রত কুমার রায় বলেন, বাবা স্বপন রায় নরসুন্দরের কাজ করেন। গ্রামের ছোট্ট একটি বাজারে ভাড়া দোকানে রয়েছে সেলুনটি। সেই সেলুনের আয় দিয়েই সংসার চলে। ঘুষ বা তদবির ছাড়া পুলিশের চাকরি পেয়েছি। যেটা কখনই ভাবিনি।

এবার সুব্রত রায়ের মতো কামার, জেলে, কৃষক, দিনমুজুর, ভ্যানচালক, দর্জি, এতিম সন্তানদের পুলিশের চাকরি হয়েছে।

শিবালয়ের আরিচার ভ্যানচালক আশেক আলীর মেয়ে পপি আক্তার বলেন, পরিবারে দুই বোন, এক ভাই রয়েছে। ভ্যান চালিয়ে বাবা অনেক কষ্টে সংসার চালান। মাত্র একশ তিন টাকা খরচ করে চাকরি হয়েছে।

মানিকগঞ্জের এসপি রিফাত রহমান শামীম বলেন, পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য দুই হাজার ৯শ’ ৯ জন আবেদন করেছিল। এর মধ্যে বাছাইতে ও লিখিত পরীক্ষায় মনোনীত হন ৯৫৯ জন। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ২২৩ জন। চূড়ান্তভাবে নিয়োগ পান ১৩১ জন।