• শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

বংশী নদী পাড়ে ভাঙন !

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৬ জানুয়ারি ২০২০  

ঢাকার ধামরাই উপজেলার কুশুরা গ্রামে বংশী নদীর পাশে চাচা আতাউর রহমানের এক টুকরো জমিতে বোরো ধানের বীজতলা তৈরি করেছিলেন মিজানুর রহমান। বীজ থেকে চারা হওয়ার পর তা দ্রুত বেড়ে উঠছিলো। কিন্তু খননযন্ত্র দিয়ে নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটার কারণে জমিতে ভাঙন ধরায় তাকে আগাম চারা তুলে ফেলতে হয়েছে।

শুধু মিজানুর রহমানই নন, মাটি কাটার কারণে বংশী নদীতীরবর্তী এলাকার অনেকের জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এরপরও নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটা থেমে নেই।


 সরেজমিন দেখা যায়, কুশুরা ইউনিয়নের কুশুরা, পানকাত্তা, যাদবপুর ইউনিয়নের আমরাইল, বালিয়া ইউনিয়নের বালিয়া পূর্ব পাড়া, চৌহাট ইউনিয়নের চৌহাট ও ভাকুলিয়া এবং আমতা ইউনিয়নের জেঠাইলে বংশী নদীতে অন্তত ১০টি খননযন্ত্র বসিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। খনন করা মাটি পাইপের সাহায্যে এলাকার লোকজনের নিচু জমি ভরাট করার পাশাপাশি বিক্রির উদ্দেশ্যে জায়গায় জায়গায় স্তূপ করে করে রাখা হচ্ছে। মাটি কাটার ফলে নদীতীরের ফসলি জমিতে ভাঙন দেখা দিয়েছে।


নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা ও এলাকার লোকজন বলেন, চৌহাটে চৌহাট ও ভাকুলিয়ায় দুটি খননযন্ত্র দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। এই দুটি খননযন্ত্র চালাচ্ছেন  আনোয়ার সিকদার ও আলিম নামের এক ব্যক্তি। আমতা ইউনিয়নের জেঠাইলে আলমগীর নামে এক ব্যক্তি মাটি খনন করছেন। বালিয়া ইউনিয়নের বালিয়া পূর্ব পাড়ায় তিনটি খননযন্ত্র চলছে। এর একটি চালাচ্ছেন ধামরাই আরিফুর রহমান। অন্য দুটি চালাচ্ছেন আয়নাল হক ও ইমরান নামের দুই ব্যক্তি।  

কুশুরা ইউনিয়নে কুশুরা বাজারের পাশে ৫০০ গজের মধ্যে দুটি খননযন্ত্র দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। এর একটি চালাচ্ছেন ছাত্র নেতা সুমন ও অন্যটি চালাচ্ছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা হাবিবুর রহমান। পানকাত্তা এলাকায় চলছে দুটি খননযন্ত্র। এর একটি চালাচ্ছেন স্থানীয় নবযুগ কলেজ শাখা ছাত্র নেতা আমিনুর  ইসলাম, অন্যটি চালাচ্ছেন হাবিবুর রহমান।

যোগাযোগ করা হলে অবৈধভাবে নদী থেকে মাটি কাটার কথা স্বীকার করে হাবিবুর রহমান বলেন, ‘মাটি কাটার কারণে নদীতীরের আবাদি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এটা সত্য। কিন্তু বেকার থাকার চেয়ে একটা কিছু করে খাওয়া ভালো বলেই করি।’

 আরিফুর রহমান বলেন, রাস্তার কাজের জন্য নদী থেকে মাটি কাটা হয়। ব্যবসার জন্য নদী থেকে কোনো মাটি কাটা হয় না। আমিনুর ইসলামের মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি ধরেননি।

স্থানীয় কুশুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েতুর রহমান বলেন, যারা নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি খনন করছেন, তাদের অধিকাংশই স্থানীয় নেতা অথবা প্রভাবশালী ব্যক্তি। এ কারণে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন ভয়ে তাদের কিছু বলতে সাহস পান না।