• রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

দুদক কার্যালয়ে ‘আগুন’

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১০ এপ্রিল ২০১৯  

সকাল ১০টা, রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘণ্টা বেজে ওঠে। দুদকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দ্রুত সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে সামনে সড়কে অবস্থান নেন। এ সময় ভেঁপু বাজিয়ে ছুটে আসে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। দুদক ভবনের চৌহদ্দি ছেয়ে যায় ধোঁয়ায়।

সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ের সামনে উৎসুক জনতার ভিড় জমে যায়। তাদের সকলের মনে প্রশ্ন কোথায় আগুন লেগেছে? কিভাবে লেগেছে? এখন কী অবস্থা? তবে আসল ঘটনা হলো দুদক কার্যালয়ে কোথাও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি।

বুধবার (১০ এপ্রিল) সকালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় করণীয় সম্পর্কে হাতে কলমে শিক্ষা দিতে দুদকের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অগ্নিকাণ্ডের মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। দুদক কমিশনের উদ্যোগে কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে ফায়ার সার্ভিসের ২৭ সদস্যের একটি চৌকস দল অগ্নি নির্বাপক মহড়া পরিচালনা করে।

ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ফগিং মেশিনের মাধ্যমে ব্যাপক কৃত্রিম ধোঁয়ার সৃষ্টি করেন। পরে কীভাবে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যায় -সে বিষয়ে কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শিক্ষা দেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

এছাড়া অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র না থাকলে অথবা বিকল বা অপারেট করতে না জানলে কীভাবে বালু, ভেজা চট ও কম্বল বা কাঁথা ব্যবহার করে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা যায় সে কৌশলও শেখানো হয়।

Fire.jpg

মহড়ায় ফায়ার সার্ভিস দলটি ব্রোনটো কার, ফোর হুইল ওয়াটার সাপ্লায়ার ভেহিক্যাল, কমান্ড ভেহিক্যাল, অ্যাম্বুল্যান্সসহ অগ্নিনির্বাপক কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেন।

ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা জানান, ভবনে আগুন লাগলে কোনো অবস্থাতেই লিফট ব্যবহার করা যাবে না, সিঁড়ি বেয়ে নামতে হবে। বিদ্যুৎ এবং গ্যাস লাইন বন্ধ করতে হবে।

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের সামনের সড়কের নিরাপদ জোনে দাাঁড়িয়ে ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন। এ সময় তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের নিরাপদ কর্মপরিবেশ বিনির্মাণে আগুনসহ সকল প্রকার নিরাপত্তা ঝুঁকিমুক্ত করার জন্য বহুমাত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি জানান, ২০১৮ সাল পর্যন্ত কমিশনে একটি মাত্র নির্গমন গেইট বা দরজা ছিল। ২০১৮ সালেই কমিশন একটি জরুরি নিগর্মন গেট নির্মাণ করেছে। একই বছরে কমিশনের দু’টি ভবনের মাঝে উড়াল সংযোগ সেতু স্থাপন করা হয়েছে। অর্থাৎ বর্তমানে কমিশনের তিনটি নির্গমন পথ রয়েছে।

তিনি আরও জানান, কমিশন ভবনের প্রতিটি ফ্লোরে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে। সকল পুরাতন কাগজপত্র নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে। কমিশনের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ গেট নির্মাণ করা হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সিসিটিভিসহ বিভিন্ন প্রকার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।

অসচেতনতা, ভবন নির্মাণে আইন না মানা, নিরাপত্তামূলক বিধি-বিধান পরিপালন না করা, এ সকল বিধি-বিধান নিশ্চিতকরণে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থসমূহের উদাসীনতা, অদক্ষতা ও দুর্নীতি এবং কিছু মানুষের দ্রুত বিত্তশালী হওয়ার মানসিকতার কারণেই বনানীর এফআর টাওয়ার কিংবা চুরিহাট্টার মতো মর্মস্পর্শী ঘটনা ঘটছে বলে মনে করেন দুদক চেয়ারম্যান।

এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি সংস্থাসমূহে কর্মরতদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আইন অনুসারে দায়িত্ব পালন করুন। কমিশন এফআর টাওয়ার নিয়ে অনুসন্ধান করা হচ্ছে। সত্য উদঘাটন হবে, দায়-দায়িত্ব নিরূপণ করা হবে। কেউ অপরাধ করলে আইনের আওতায় আনা হবে।