• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

বিজিবি’র সাবেক মহাপরিচালক হিসেবে জেনারেল আজিজ আহমেদের অবদান

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৪ মে ২০১৯  

জেনারেল আজিজ আহমেদ, বিএসপি, বিজিবিএম, পিবিজিএম, বিজিবিএমএস, পিএসসি, জি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৬ তম ও বর্তমান সেনাপ্রধান। বর্তমান দায়িত্বে নিয়োজিত হওয়ার পূর্বে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বের পাশাপাশি ২০১২ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে ২০১৬ এর ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশ (বিজিবি) এর ৪র্থ মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।  

২০০৯ সালে বাংলাদেশ রাইফেলসের এক বিশাল বিপর্যয় মূলক সময়ের শেষের দিকে জেনারেল আজিজ আহমেদ বিজিবির মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। বিডিআর বিদ্রোহে যখন ৫৭ জন দক্ষ অফিসার প্রাণ হারিয়েছিলেন, ঠিক সেই চ্যালেঞ্জিং মুহূর্তে তার দায়িত্ব নেয়া ছিল সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মুহূর্তের একটি। 

তিনি বাহিনীতে স্বাভাবিকতা আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং কঠোর নেতৃত্ব ও পরিকল্পনার  মাধ্যমে বিডিআর এর পুনঃনামকরণ ও পুনর্গঠন করে এই বাহিনীর প্রতি দেশ ও জাতির আস্থা পুনর্বহাল করেন। উল্লেখ্য, দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমারের সাথে মোট ৪,৪৩০ কিলোমিটার সীমান্ত রক্ষায় বিজিবি অসাধারণ দক্ষতা ও পারদর্শিতার পরিচয় দিয়ে আসছে।  

জেনারেল আজিজের নেতৃত্বে বিজিবিতে চারটি রিজিওন ও চারটি সেক্টর সদর দফতর, ১৮টি  ব্যাটেলিয়ন এবং ১০৮টি নতুন সীমান্ত চৌকি (বিওপি) প্রতিষ্ঠিত হয়। বিজিবির উন্নতিকল্পে তিনি এককভাবে কল্যাণ তহবিল গঠনসহ বিজিবি বাহিনীর জন্য একটি সীমান্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক প্রতিষ্ঠা এবং অন্যান্য অনেক সুবিধা চালু করেন। বিজিবি বর্তমানে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম সীমান্তরক্ষী বাহিনী। এই বাহিনী সর্বমোট ৬৩টি ব্যাটালিয়নের বিপুল সংখ্যক জনবল নিয়ে ১০০০টি বর্ডার আউটপোস্টের মাধ্যমে বাংলাদেশের উত্তরের বাংলাবান্দা (পঞ্চগড়) থেকে দক্ষিণে শাহপরীর দ্বীপ এবং  পূর্বে আখাইনঠং (বান্দরবান) থেকে মনাকষা (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) এর পশ্চিম পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকা সীমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত রয়েছে।  

মহাপরিচালক নিয়োগের পূর্বে জেনারেল আজিজ ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহের পরপরই ঢাকা সেক্টর কমান্ডার হিসেবে নিযুক্ত হন। এ সময় তিনি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন এবং সকল পক্ষই যাতে সুবিচার পায় তা নিশ্চিত করার জন্যে সংগঠিত সকল আদালতকে প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করতে এবং বিচার কার্যে সহায়তা প্রদান করেন। এছাড়াও তিনি নিশ্চিত করেন যে, উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমাণ এবং যথাযথ তদন্তের অভাবে যাতে কেউ অন্যায়ভাবে শাস্তি না পায়। এই বিচার বাংলাদেশের বিচারিক ইতিহাসে দ্রুততম সময়ে বিপুল সংখ্যক অপরাধীদের বিচারের আওয়তায় নিয়ে এসে সুবিচারের দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ হয়ে থাকবে।  

জেনারেল আজিজ তার অসাধারণ নেতৃত্বগুণ এবং সমন্বয় ক্ষমতা দিয়ে প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে কোনো ধরণের মতদ্বৈততা ও দ্বন্দ্ব ছাড়াই বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ছিটমহল বিনিময়ের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন। বিজিবিতে মহাপরিচালক থাকাকালে তিনি বিজিবিতে প্রথমবারের মতো ১০০ জন মহিলা বিজিবি সৈন্যসহ ১৮ হাজার নতুন সৈন্য নিয়োগ করেন। বিজিবির ইতিহাসে এটা বৃহত্তম রিক্রুটমেন্ট হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। 

দেশ ও জাতির প্রতি তার কর্তৃক অসাধারণ সেবাপ্রদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জেনারেল আজিজকে রাষ্ট্রপতি বিজিবিএম পদক প্রদাণ করা হয়। এছাড়াও তিনি তার সহজাত ও অসাধারণ নেতৃত্ত্বগুণের স্বীকৃতি হিসেবে জেনারেল আজিজ আহমেদকে পিবিজিএম পদক প্রদান করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। বিজিবির মহাপরিচালক হিসেবে তিনিই ভারতীয় বিএসএফ'র ইতিহাসে প্রথম বিদেশী যিনি বিএসএফ একাডেমিতে পাসিং প্যারেডে প্রধান অতিথি হিসেবে স্যালুট গ্রহণ করেন।