• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয় সম্মেলনের ‘আগে-পরে’ জেলা সম্মেলন

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৫ মে ২০১৯  

চলতি বছরের অক্টোবর মাসেই জাতীয় সম্মেলন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এর অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলা সফর করছেন দলটির নেতারা। তাদের ভাষ্য, জাতীয় সম্মেলনের আগে ও পরে হতে পারে জেলা সম্মেলন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ৬৪টির কমিটির মেয়াদ নেই। অধিকাংশ জেলায় সম্মেলন হয়েছে পাঁচ থেকে ছয় বছর আগে। এ হিসাব অনুযায়ী সেসব জেলায় কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ বলা চলে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, জাতীয় সম্মেলন সম্পন্নের জন্য আমাদের প্রধান কাজ হলো কাউন্সিলর তালিকা প্রণয়ন করা এবং তালিকা ঠিক করা। এর মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলন যেখানে সম্ভব হয় সেখানে করব, আর যেখানে সম্ভব নয় সেখানে কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পর সম্মেলন করব।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট বিভাগের চার জেলার তিনটিতে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি রয়েছে। সুনামগঞ্জে ১৭ বছর পর সম্মেলন হয় ২০১৬ সালে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন পায় ২০১৮ সালে। ২০০৬ সালের পর সম্মেলন হয়নি মৌলভীবাজারে। চার বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দিয়ে চলছে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ। ২০১৩ সালে সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় হবিগঞ্জে।

জানা গেছে, দীর্ঘ ১৮ বছর পর ২০১৬ সালের ৩০ এপ্রিল ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ময়মনসিংহ জেলা কমিটি ভেঙে ঘোষণা করা হয় নতুন জেলা ও মহানগর কমিটির। ২০১৫ সালে জামালপুর ও শেরপুর এবং ২০১৬ সালে নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয়া হয় ২০১৮ সালে।

২০১৬ সালে প্রায় ১০ বছর পর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের। একই বছর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত হয় কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের। ২০১৪ সালে নোয়াখালী, ২০১৬ সালে চাঁদপুর, ২০১৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ২০১৫ সালে লক্ষ্মীপুর এবং ২০১২ সালে ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

২০১২ সালে বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। শওকত হোসেন হিরণ ২০১৪ সালে মারা গেলেও এখন পর্যন্ত মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি পদটি শূন্য রয়েছে। ২০১৪ সালে পটুয়াখালী, ২০১৬ সালে ভোলা, ২০১৬ সালে পিরোজপুর এবং ২০১৪ সালে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

২০১২ সালে দিনাজপুর, ২০০৯ সালে নীলফামারী, ২০১৬ সালের গাইবান্ধা, ২০১৩ সালে লালমনিরহাট, ২০১৪ সালে ঠাকুরগাঁও, ২০১৩ সালে কুড়িগ্রাম, ২০১৫ সালে পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

রাজশাহী বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে রাজশাহী জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। একই বছর নাটোর, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়া, জয়পুরহাট ও পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। এর এক বছর পর ২০১৫ সালে সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

খুলনা বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৪ সালে কুষ্টিয়া ও খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৫ সালে খুলনা, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, নড়াইল, মাগুরা, মেহেরপুর, যশোর ও সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাকা বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সম্মেলন ছাড়া ১৪ বছর পর ২০১৬ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও ২০১৩ সালে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়। ২০১৪ সালে মুন্সিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৫ সালে টাঙ্গাইল, গাজীপুর মহানগর, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ি এবং ২০১৬ সালে কিশোরগঞ্জ, গাজীপুর, ফরিদপুর, শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ নামে দুটি কমিটি দেয়া হয়। এর পাঁচ মাস পর ২০১৬ সালের ১১ সেপ্টেম্বর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

সম্মেলন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুর রহমান বলেন, জাতীয় সম্মেলন সম্পন্নের জন্য আমাদের প্রধান কাজ হলো কাউন্সিলরদের তালিকা প্রণয়ন করা এবং তালিকা ঠিক করা। এর মধ্যে যেখানে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি রয়েছে সেখানে সম্ভব হলে সম্মেলন করব। আর যেখানে এ মুহূর্তে সম্ভব নয় সেখানে কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পর সম্মেলন করব।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জাতীয় সম্মেলনের আগে জেলা সম্মেলন করার কোনো বাধ্যবাধকতা নাই। জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে জাতীয় রাজনীতিতে নতুন রক্তের সঞ্চালন হয়, আর জেলা সম্মেলনের মাধ্যমে জেলার রাজনীতিতে নতুন রক্তের সঞ্চালন হয়। জাতীয় সম্মেলনের সঙ্গে জেলার সম্পর্ক কাউন্সিলর ও ডেলিগেট নির্ধারণ। এ ক্ষেত্রে আমরা জাতীয় সম্মেলনের আগে জেলায় বর্ধিত সভা করে কাউন্সিলর ও ডেলিগেট লিস্ট তৈরি করব।