• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

শক্ত অবস্থানে সেন্টমার্টিন নিয়ে মিথ্যাচারে পরাজিত মিয়ানমার

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৯ মে ২০১৯  

রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুর কোনো সুরাহা না করেই নতুন করে ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছে মিয়ানমার। এবার বাংলাদেশের সমুদ্র সৈকত সেন্টমার্টিনকে নিজেদের দাবি করে আঞ্চলিক সম্প্রতি নষ্ট করার ষড়যন্ত্র করেছে মিয়ানমার। তবে বাংলাদেশের যৌক্তিক ও তীব্র প্রতিবাদে শেষ পর্যন্ত নিজেদের ভুল স্বীকার করে সেন্টমার্টিন নিয়ে ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে মিয়ানমার।

বিভিন্ন গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে সেন্টমার্টিনকে নিজেদের অংশ হিসেবে দাবি করে সরকারি ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করে মিয়ানমার। বিষয়টির সম্পর্কে জানার পরপরই বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেন্টমার্টিনকে মিয়ানমারের অংশ হিসেবে দেখানোর এ অপচেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ জানায়। পাশাপাশি ঢাকায় দায়িত্বরত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত ইউ লুইন উ’কে তলব করে কঠোর প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের যুক্তির কাছে পরাজিত হয়ে অবশেষে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত লুইন বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, সেন্টমার্টিনকে তাদের অঞ্চল হিসেবে দেখানো ভুল ছিলো।

পরবর্তীতে ২১ অক্টোবর ঢাকাস্থ মিয়ানমার হাইকমিশন তাদের ফেসবুক পেজে ‘ওয়ানম্যাপ মিয়ানমার’ নামের একটি বেসরকারি জরিপ সংস্থাকে দায়ী করে নিজেদের ইচ্ছাকৃত ভুল ঢাকার চেষ্টা করে। হাইকমিশন দাবি করে, অযাচিতভাবে ওয়ানম্যাপ মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ সেন্টমার্টিনকে নিজেদের দাবি করেছে। যা সরকারিভাবে স্বীকৃত নয়। এরকম কিছু দাফতরিক কথা-বার্তা বলে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ নিজেদের দোষ আড়াল করার চেষ্টা করে। মূলত বাংলাদেশ সরকারের তাৎক্ষণিক সমালোচনা ও প্রতিবাদের মুখে পরাস্ত হয় মিয়ানমারের এই ঘৃণ্য মিশন।

বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জানা যায়, ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে ১৯৩৭ সালে স্বাধীন হবার পর থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপটি কখনই মিয়ানমারের অংশ ছিলো না। ১৯৩৭ সালে যখন মিয়ানমার আলাদা হয়, তখনও সেন্টমার্টিন ব্রিটিশ-ভারতেরই অংশ ছিলো। একটি পরিষ্কার রেখা টানা হয় এর মাঝে। সেন্টমার্টিন ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের অংশ ছিলো এবং মুক্তিযুদ্ধের পর এই দ্বীপ স্বাধীন বাংলাদেশের অংশ হয়ে যায়। ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তিতে পরিষ্কারভাবে বলা হয় এই দ্বীপটি বাংলাদেশের অংশ।

এমনকি, ২০১৭ সালে সমুদ্র আইন বিষয়ক আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে যখন বাংলাদেশ মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সামুদ্রিক সীমানা বিষয়ক বিরোধে জয় লাভ করে, তখনও এটা পরিষ্কারভাবে বলা ছিলো যে, এই দ্বীপ বাংলাদেশের মানচিত্রের অংশ। সুতরাং আন্তর্জাতিকভাবে সেন্টমার্টিন যেখানে বাংলাদেশের অংশ হিসেবে স্বীকৃত, সেখানে মিয়ানমার জেনেশুনেই এমন ষড়যন্ত্র করেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

উল্লেখ্য, এর আগে ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের একটি ছবিকে বিদ্রোহীদের প্রশিক্ষণ নেয়ার দৃশ্য বলে দাবি করে প্রচার করেছিলো মিয়ানমার। তবে পরবর্তীতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী এই ‘ভুলের’ জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করে।