• রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২১ ১৪৩১

  • || ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

মুক্তা চাষ করেও দুশ্চিন্তা ছাড়ছে না

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৬ জুলাই ২০১৯  

সেলিম আল মামুন একজন শিক্ষক। এই পেশার পাশাপাশি মুক্তা চাষেও সফল তিনি। তার বাড়ি নীলফামারীর ডোমার উপজেলার সোনারায় ইউপির জামিরবাড়ী চাকধাপাড়া গ্রামে। তবে দেশে মুক্তার বাজার না থাকায় বেশ দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।  

জামিরবাড়ী চাকধাপাড়া গ্রামের অমিজ উদ্দিনের ছেলে সেলিম। আঠিয়াবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তিনি। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ময়মনসিংহ থেকে ৪ দফায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এরপর বাড়ির পাশে দুটি পুকুরে ঝিনুকে মুক্তা চাষ শুরু করেন। প্রথমে তিনি এলাকার জেলে এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে ঝিনুক সংগ্রহ করেছেন। ঝিনুকগুলো প্রক্রিয়াজাতের পর পুকুরে ছেড়ে দেন। কদিন পরই তৈরি হয় মুক্তা।

এ ব্যাপারে সেলিম আল মামুন জানান, প্রচুর শ্রম দিতে হয়। ঝিনুকগুলো প্রক্রিয়াজাত করতে হয়। একাজে পরিবারের সবাই সহযোগিতা করে। আছেন স্ত্রী রেজওয়ানা আক্তার বন্যা, মেয়ে শামিমা শাম্মি বৈশাখী ও সুমাইয়া আফরোজ, ছেলে রিজওয়ান আল মাহফুজ, বাবা অমিজ উদ্দিন, ভাইয়ের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার ফেন্সি।

ঝিনুকে মুক্তা কিভাবে চাষ করা হয় সেই গল্পটাও বললেন সেলিম। তিনি বলেন, ২৫ হাজার ঝিনুক সংগ্রহ করেছি। এরমধ্যে ২ হাজার ৭শ’ ঝিনুক অপারেশন করা হয়েছে। ঝিনুকগুলোকে প্রথমে পরিস্কার করে এক ঘণ্টা পর অপারেশন করে ঝিনুকের ভেতরে ইমেজ দেই। এরপর সেলাই করে জালের ঝুড়িতে রাখা হয়। লম্বা ঝুড়িতে ১২টা এবং গোল ঝুড়িতে ৪টি করে ঝিনুক পুকুরে রাখা হয়। ২১ দিন পর ঝিনুকগুলো তুলে পুকুরে উন্মুক্ত করা হয়। ৮ থেকে ৯ মাস পর সেখান থেকে মুক্তা পাওয়া যায়।

তিন প্রকার মুক্তা চাষ করা যায়। ইমেজ মুক্তা তৈরিতে সময় লাগে ৮ থেকে ৯ মাস। রাইজ মুক্তা তৈরিতে সময় লাগে ২৪ থেকে ৩৬ মাস। নিউক্লি মুক্তা তৈরিতে সময় লাগে ১৮ থেকে ২৪ মাস।

সেলিম জানালেন, মুক্তার আন্তর্জাতিক বাজার থাকলেও বাংলাদেশে দেশে এর কোনো বাজার নেই। ফলে মুক্তা উৎপাদন হলেও বিক্রি করতে দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। এ যাবৎ ওই প্রকল্পে তিনি দেড় থেকে দু লাখ টাকা ব্যয় করেছি। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে জানানো হয়, মুক্তাগুলোর গুণগত মান ভালো হলে একটি মুক্তার মূল্য ৫হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যাবে।

এ ব্যাপারে ডোমার উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোছা. শারমিন আকতার জানান, ঝিনুকে মুক্তাচাষ প্রকল্পটি পরিক্ষামূলক ভাবে চলছে। এখনো মাঠ পর্যায়ে এ প্রকল্প চালু হয়নি।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ময়মনসিংহ এর প্রকল্প পরিচালক মহসেনা বেগম তনু জানান, গোলাকার মুক্তার বাজার বাংলাদেশে রয়েছে। বিভিন্ন জুয়েলারিতে অলংকার তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। ইমেজ মুক্তার বাজার পাশের দেশে রয়েছে। আমাদের দেশে একেবারে নতুন। দেশে এখনো বাজার তৈরি হয়নি। দেশে বাজার তৈরি করতে হবে। আমরা তাদের পরামর্শ দিয়েছি, ইমেজের ডিজাইন যেন সুন্দর হয়।