• রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সীতাকুণ্ডে প্রতি কেজি ইলিশ মিলছে মাত্র ৫০ টাকায়

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৩ অক্টোবর ২০১৯  

ইলিশের মৌসুম শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। এখনো নদী-সাগরের নির্দিষ্ট এলাকায় জাল ফেললেই প্রচুর ইলিশ মাছ ধরা পড়ছে।

বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় ইলিশের শেষ মৌসুমে এসে বঙ্গোপসাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে রূপালী ইলিশ ধরা পড়ছে। ফলে এখানকার বাজারে ইলিশ পানির দরে বিক্রি হচ্ছে। বুধবার এখানে ছোট সাইজের ইলিশ প্রতি কেজি ৫০ টাকায় এবং এক কেজি সাইজের ইলিশ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। 

ইলিশের দাম খুব কম হওয়ায় সীতাকুণ্ডের স্থানীয় মৎস্য আড়তদাররা ও পাইকাররা ভবিষ্যতে সরবরাহ করার লক্ষে বিপুল পরিমাণ ইলিশ মজুদ করতে বরফের দাম এক ধাক্কায় বেশ কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। এ কারণে এখন ইলিশের চেয়ে বরফের দাম অনেক বেশি পড়ছে বলে জানান মৎস্য কর্মকর্তারা।

গত কয়েকদিন ধরে হঠাৎ করেই প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে বঙ্গোপসাগরের সীতাকুণ্ড উপকূলে। সাগরে মৎস্য শিকারে যাওয়া জেলেরা নৌকা ভর্তি ইলিশ নিয়ে উপকূলে ফিরছেন। নৌকাগুলোতে করে মণ মণ ইলিশ আনছেন জেলেরা। এই বিপুল পরিমাণ ইলিশের কারণে স্থানীয় বাজারে কমে গেছে দাম।

বুধবার উপজেলার সবচেয়ে ইলিশ আহরণ এলাকা কুমিরা ঘাটঘর দেখা যায়, সাগর থেকে প্রচুর ইলিশ শিকার করে ফিরছেন জেলেরা। নৌকা ভর্তি করে নিয়ে ছফরছেন উপকূলে। অবশ্য বেশির ভাগই ছোট ও মাঝারি আকৃতির মাছ। ১০ থেকে ২০ শতাংশ আছে এক কেজি বা তার চেয়েও বড় সাইজের।

অর্জুন জলদাশ নামে এক জেলে বলেন, এখন ইলিশের জোঁ চলছে। এজন্য বঙ্গোপসাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে।

তিনি বলেন, এই প্রচুর মাছ ধরার খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় এখন দূর-দূরান্ত থেকে পাইকার এবং সাধারণ মানুষ ইলিশ কেনার জন্য উপজেলার ঘাটে ঘাটে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন।

সীতাকুণ্ডের সৈয়দপুর, কুমিরা,  মুরাদপুর, বাড়বকুণ্ড, বাঁশবাড়িয়া, সোনাইছড়ি, বারৈয়াঢালা, ভাটিয়ারী, সলিমপুর ইউনিয়নে অনেকগুলো জেলেপাড়া আছে বলেও জানান তিনি।

প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সাগরে প্রচুর ইলিশ পাচ্ছেন এসব এলাকার জেলেরা। এ সময় ক্রেতারা জেলে নৌকার দিকে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। 

এখানকার জেলেরা জানিয়েছেন যদি ক্রেতা নিজে জাল থেকে মাছ খুলে নেয় সেক্ষেত্রে প্রতি মণ মাছ দুই হাজার টাকায় নিতে পারবে। দরদাম করলে অনেক কম দামেও ইলিশ বিক্রি করছেন তারা।

কৃষ্ণ চন্দ্র দাস নামে এক ক্রেতা জানান, ছোট ও মাঝারি আকৃতির ইলিশ গড়ে প্রতি কেজি ৫০ টাকা হারে কিনেছেন তিনি।

স্থানীদের কেউ কেউ বলছেন, প্রচুর মাছ ধরেও জেলেরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না। নামমাত্র মূল্যে ইলিশ বিক্রি করছেন জেলেরা। ছোট আকৃতির ইলিশ খুচরা বাজারে ২০০, মাঝারি আকৃতির ৩০০ এবং বড় আকৃতির ইলিশ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি করছেন তিনি। আর যেসব ক্রেতা সরাসরি ঘাট থেকে ইলিশ কিনেন তারা অনেক কম মূল্যে পাচ্ছেন।

এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শামীম আহমেদ বলেন, মঙ্গলবার সীতাকুণ্ড উপকূল থেকে ৫০ মেট্রিক টনের মতো ইলিশ ধরা পড়েছিল। বুধবার ধরা পড়েছে ৭০ টনের মতো। কিন্তু প্রচুর ইলিশ ধরা পড়লেও জেলেরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। মধ্যসত্বভোগীরাই আসল লাভ নিয়ে যাচ্ছে। তার ওপর জেলেরা মাছ সংরক্ষণ করছে দেখে আইস ফ্যাক্টরিগুলো বরফের দামও বাড়িয়ে দিয়েছে। কয়েক কেজি ওজনের বরফ তারা বিক্রি করছেন ১৭০০ টাকা। অর্থাৎ ইলিশের চেয়ে বরফের দামই বেশি! ফলে জেলেরা কিংবা পাইকারী ব্যবসায়ীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।

আইস ফ্যাক্টরিগুলো আরেকটু মানবিক হলে জেলেদের হয়রানি কমে যেত বলেও জানান তিনি।