• রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বেতনে সমন্বয়, অসন্তোষ শেষে কাজে ফিরেছে

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৫ জানুয়ারি ২০১৯  

এ পর্যন্ত পোশাক শিল্পে যতগুলো আন্দোলন হয়েছে, তার প্রায় সবগুলোই বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, বকেয়া বেতন আদায়, ঈদ বোনাস পরিশোধ কেন্দ্রিক দাবিতে আন্দোলনে নামছেন শ্রমিকরা। রফতানি আয়ের দিক থেকে দেশের সবচেয়ে বড় খাত পোশাক শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা প্রায় নিয়মিত হয়ে উঠেছে। একই ধারাবাহিকতায় গত সপ্তাহজুড়ে তেমনই শ্রমিক আন্দোলন হয়ে গেলো। তবে বিশেষজ্ঞরা এবারের আন্দোলনটিকে শিল্পখাত ধ্বংসের পায়তারা হিসেবে দেখছেন।

গত ২৫ নভেম্বর পোশাক খাতে শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর যে গেজেট প্রকাশিত হয়েছিল সেটা বাস্তবায়ন হলে ‘বেতন আগের থেকেও কমে যাবে’ এমন গুজবের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচনের পরপরই সপ্তাহজুড়ে লাগাতার আন্দোলনে নেমেছিল পোশাক শ্রমিকরা। এরপরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পোশাক শ্রমিক, মালিকদের সাথে সমন্বয় করে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের ওই বেতন কাঠামো পর্যালোচনা ও যৌক্তিক বেতন বৃদ্ধির নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়া মাত্রই পোশাক শ্রমিকদের বেতন কাঠামোয় সৃষ্টসমস্যা চিহ্নিতকরণ ও দ্রুত সমাধানের বিষয়ে পর্যালোচনা করে সপ্তম গ্রেড ছাড়া বাকিগুলোতে সর্বনিম্ন শূন্য দশমিক ১১ শতাংশ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে মালিক, শ্রমিক এবং সরকারের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে। রোববার নতুন করে ঘোষিত এই বেতন কাঠামোতে ১৫ থেকে ৭৮৬ টাকা পর্যন্ত বেতন বেড়েছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন আগামী দু’একদিনের মধ্যে জারি করা হবে। নতুন মজুরি কাঠামো গত ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। যা আগামী ফেব্রুয়ারির মাসের বেতনের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।

অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ন্যূনতম মজুরি কাঠামো পুননির্ধারণের পর অসন্তোস শেষে কাজে ফিরেছে শ্রমিকরা। সাত দিন আন্দোলন শেষে সাভার ও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা দল বেঁধে কাজে যোগ দিতে দেখা গেছে।

অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাংলাদেশের প্রধান রফতানি খাতকে ধ্বংস করতে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে।

অপরদিকে, মালিকপক্ষ থেকে প্রতিবারই শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোয় অনীহা দেখা গিয়েছিল। তাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল, শ্রমিকদের মজুরি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হলে উৎপাদন ব্যয় বাড়বে। এতে দেশের তৈরি পোশাক শিল্প আন্তর্জাতিক বাজারের প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবে না।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) অনেক আগের একটি জরিপে দেখা গেছে, একটি পোশাক কারখানায় ১০০ টাকা মূল্যের পণ্য উৎপাদনে মজুরি ছাড়া মোট ব্যয় হয় ৬৯ টাকা। ফলে এক্ষেত্রে মূল্য সংযোজিত হয় ৩১ টাকা।

আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পরিদর্শক মাহমুদুর রহমানের ভাষ্যমতে, গতকাল সকালে আশুলিয়ায় অধিকাংশ কারখানায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজে যোগ দিতে দেখা যায়। তবে এখনও পর্যন্ত কিছু কিছু কারখানার কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই তাদের সরিয়ে নেয়া হবে বলে সূত্রে জানা গেছে।