• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

গণতন্ত্রের আড়ৎদারদের এ কেমন নীতি!

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৪ ডিসেম্বর ২০১৮  

মুখে তারা গণতন্ত্রের কথা বলেন, অথচ নির্দিষ্ট শ্রেণির প্রতি রয়েছে তাদের নির্লজ্জ সমর্থন। আইনের শাসনের পক্ষে কথা বললেও দণ্ডিত খালেদা-তারেক কিংবা যুদ্ধাপরাধীদের বেলায় সেসব বুলি উবে যায়। জ্ঞানের বাড়াবাড়ি রকমের প্রদর্শনে তারা অস্থির করে রাখতে চান দেশবাসীকে। যদিও জনসাধারণ তাদেরকে ‘জ্ঞানপাপী’ হিসেবেই চেনে।

সরকারের অজস্র ভালো কাজের কিছুই এসব সমালোচকের চোখে পড়ে না। বিশ্বব্যাপী সরকারের কার্যক্রম প্রশংসিত হলেও তাদের কাছে এসব ডালভাত।

বুদ্ধিমান পাঠকেরা নিশ্চয়ই এতক্ষণে উপলব্ধি করতে পেরেছেন যে কাদের কথা বলা হচ্ছে! ঠিক ধরেছেন, বলছি চিহ্নিত কিছু টকশোজীবীর কথা। যেচে এরা নিজেদের বুদ্ধিজীবী বলেও পরিচয় দেন। তবে তাদের এ পরিচয়ে দেশের কতজন সমর্থন জানাবে, সেই জরিপের ফলাফল এলে এরা লজ্জা পেতেও পারেন।
তবে দেশের নির্দিষ্ট একটি জোট পাচ্ছে তাদের নির্লজ্জ সমর্থন। তাইতো স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকারপুত্র বা তাদের সহযোগীরা মনোনয়ন পেলে এদের আপত্তি নেই। উদ্বেগের বিষয় তো হওয়ার কথা যুদ্ধাপরাধী মানবতাবিরোধী অপরাধের সর্বোচ্চ দণ্ডপ্রাপ্তদের আলোচিত সন্তানদের নিয়ে। কিন্তু তারা ব্যস্ত আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগগুলো নিয়ে।

অন্যদিকে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিরোধিতা করেছেন, ঘরবাড়ি জ্বালানো, সম্পদ লুট, সহিংসতা, ধর্ষণ-হত্যা করার অভিযোগে দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে ফাঁসিতে ঝুলেছেন, তাদের বংশধররা রাজনীতিতে আসছেন। তাও আবার সেই একই ভ্রান্ত আদর্শ নিয়েই।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পুত্র বাবার আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করবেন। জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর পুত্র পাবনা-১ (বেড়া-সাঁথিয়া) ও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর দুই পুত্র নির্বাচন করবেন। পিরোজপুর-১ থেকে লড়বেন শামীম সাঈদী আর পিরোজপুর-২ থেকে লড়বেন মাসুম সাঈদী। যারা দেশটাই চায়নি, স্বাধীনতা চায়নি। যারা দেশবিরোধী অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত, তাদের সন্তানরা নির্বাচন করতে মনোনয়ন নিচ্ছেন, এখানে তাদের কোনো কথা নেই। যুদ্ধাপরাধী হিসেবে পরিচিত মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পুত্র হুম্মাম কাদের চৌধুরী, জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর পুত্র নজিব মোমেন ও দেলাওয়ার হোসেইন সাঈদীর পুত্র শামীম সাঈদী ও মাসুদ সাঈদীর বিষয়ে কিন্তু প্রশ্ন শুনছি না! অথচ শুধু বাংলাদেশই নয়, পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি সাঈদীর চরমপন্থী মতবাদের জন্য ২০০৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেরোরিস্ট স্ক্রিনিং সেন্টার (টিএসসি) সাঈদীকে তাদের নো ফ্লাই তালিকায় যুক্ত করে অর্থাৎ এই তালিকার নাগরিকেরা কোনো দেশ থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে প্রবেশ করতে পারবেন না।
গণতন্ত্র বলতে আমরা কি বুঝি? গণতন্ত্র মানে কি জঙ্গী সন্ত্রাসী ও সাম্প্রদায়িক দলগুলোকে নিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া? গণতন্ত্র মানে রাজাকার যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রীত্ব দেয়া? যুদ্ধাপরাধী-রাজাকারদের গাড়িতে পতাকা আমরা দেখেছি বিএনপি-জামায়াতের সরকার আমলে। এরচেয়ে বড় লজ্জা আর কী হতে পারে?
তাই এসব বুদ্ধিজীবীদের উদ্দেশ্যে বলতে ইচ্ছে হয়, এবার তোরা মানুষ হ। যদিও বলে যে লাভ হবেনা, তা সকলেই জানেন।