• শনিবার ০৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২১ ১৪৩১

  • || ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

মঙ্গলের মাটিতে টমেটোর ‘বাম্পার’ ফলন

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০১৯  

মঙ্গল নিয়ে জ্যোতির্জীববিজ্ঞানীদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। কারণ গ্রহটির সঙ্গে পৃথিবীর তুলনামূলক মিল খুঁজে পাওয়া গেছে। তবে এখন পর্যন্ত মঙ্গলে কোনো জীবনের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। টেলিস্কোপ ও বিভিন্ন মহাকাশ অভিযানের মাধ্যমে তার সন্ধানও চলছে। এরই মধ্যে মানুষকে মঙ্গল গ্রহে পাঠানোর পরিকল্পনা শুরু হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, পৌঁছানোর পর মানুষ খাবে কী?

মঙ্গলে মানুষের বসতি স্থাপন সম্ভব হয়, তাহলে নিঃসন্দেহে সেখানেই খাবার উৎপাদনের কোনো ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ পৃথিবী থেকে বার বার রকেটের মাধ্যমে খাবার পাঠানো অনেক ব্যয়বহুল। বেশ কয়েক মাস আগে ওই গ্রহে পানির সন্ধান পাওয়া গেছে। এই পানি ব্যবহার করেই কৃষিকাজ করা সম্ভব বলে মনে করেন গবেষকরা। চাষাবাদের জন্য যথেষ্ট উপযোগী এই গ্রহের মাটি, জানিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গহবেষণা কেন্দ্র নাসা।

এরই মধ্যে মঙ্গলের মাটিতে ফসল ফলিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এমনকি পৃথিবীতে ফসল উৎপাদন না হলে, ভবিষ্যতে উপগ্রহে উৎপন্ন ফসল আমদানি করা হবে পৃথিবীতে। সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে দিন রাত এক করে চলছে গবেষণা। মঙ্গল ও চাঁদের মাটিতে ফসল উৎপন্ন করার কাজে মন দিয়েছে নেদারল্যান্ডের ওয়াজেনিঙ্গেন ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড রিসার্চের গবেষকরা। তারা জানিয়েছে, মঙ্গল ও চাঁদের মাটিতে বীজ বপন করে শস্য উৎপাদন করা সম্ভব। মঙ্গল ও চাঁদ থেকে সংগৃহীত মাটির মধ্যে প্রথমে টমেটো চাষ করা হয়, দেখা যায় ফলন ভালো হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা এখন মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। মঙ্গলের মাটি দিয়ে বানানো বাগানে শাক সবজি, মুলো, পেঁয়াজ জাতীয় ফসল ও মটরশুঁটি চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন। গবেষকরা আরো জানিয়েছেন, দশটি শস্যের মধ্যে নয়টি শস্যের ফলন ভালো হয়েছে। গবেষণা এখনো জারি রয়েছে। চূড়ান্ত ফলাফলের কথা জানানো হয়নি। সম্ভাবনার কথা বলেছেন বিজ্ঞানীরা।

 

মঙ্গলের মাটি হলো ‘রেগোলিথ’

মঙ্গলের মাটি হলো ‘রেগোলিথ’

মঙ্গলের মাটি কেমন?

পৃথিবীর মহাকর্ষের তুলনায় মঙ্গলের মহাকর্ষ তিনভাগের একভাগ। পৃথিবীতে যে পরিমাণ সূর্যের আলো আসে, মঙ্গলে যায় তার অর্ধেক। কিন্তু পৃথিবীর তুলনায় অনেক বেশি ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্মি এবং তেজস্ক্রিয়তা আসে। মঙ্গলের তাপমাত্রা শূন্যের নিচে ৬০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আর এর বায়ুমণ্ডলের বেশিরভাগটাই কার্বন ডাই অক্সাইড। শুধু তাই নয়, মঙ্গলের মাটি পৃথিবীর মাটির মতো নয়। মঙ্গলের মাটি হলো ‘রেগোলিথ’। এতে থাকে প্রচুর পরিমাণে পারক্লোরেট রাসায়নিক যা মানুষের জন্য বিষাক্ত।

অন্ধকার আর বিরূপ এই আবহাওয়ায় মানুষের পাশাপাশি পৃথিবীর গাছপালারও টিকে থাকতে সমস্যা হবে। পৃথিবীতে লাখ লাখ বছর ধরে পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছে গাছপালা। সেগুলোকে মঙ্গলে পাঠানো হলে তাদের বাঁচা কঠিন হয়ে পড়বে। তাই মঙ্গলে খাপ খাইয়ে নিতে পারে বিজ্ঞানীরা এমন বিশেষ গাছ তৈরি করছেন সিন্থেটিক বায়োলজি পদ্ধতি ব্যবহার করে।

প্রাণের অস্তিত্ব নিয়ে আশা জেগেছে

প্রাণের অস্তিত্বে মঙ্গল গ্রহে পানি খোঁজছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। যদিও ৩৭০ কোটি বছর আগে সেখানে নাকি একসময় সমুদ্র ছিল। এমনকি সুনামির ভয়ংকর ঢেউও উঠেছিল। নাসার গবেষণায় এসব তথ্য পাওয়া গেছে। মঙ্গলের উত্তর গোলার্ধে সমুদ্র সৈকতের অস্তিত্ব পেয়েছেন গবেষকরা। ফলে প্রাণের অস্তিত্ব নিয়েও আবারো আশা জেগেছে বিজ্ঞানীদের। 

বিজ্ঞানীরা জানান, দুইটি উল্কা আঘাত হেনেছিল লালগ্রহে। সেই উল্কা পানিতে এসে পড়ায় বিশাল ঢেউ সমুদ্র ছাড়িয়ে পৌঁছে যায় উপকূলেও। সেই জলোচ্ছ্বাসের পরেই এক বিশাল এলাকাজুড়ে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। আর এই সুনামির ক্ষত এখনো দৃশ্যমান মঙ্গল পৃষ্ঠে। সেটাই সম্প্রতি খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।