• বুধবার ০১ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৮ ১৪৩১

  • || ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে লর্ডস

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৪ জুলাই ২০১৯  

ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে লর্ডস তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। যে দুটো দল ফাইনালে খেলছে, তারা আগে কেউ বিশ্বকাপ জেতেনি। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে আরো এক বার ট্রফি জয়ের লড়াইয়ে আজ মাঠে নামবে ইংল্যান্ড।

এর আগে তিন বার বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠেও চ্যাম্পিয়নের সিংহাসনে বসতে পারেনি ইংল্যান্ড। ডেভিড গাওয়ার, মাইক গ্যাটিং, গ্রাহাম গুচরা ১৯৭৯, ১৯৮৭ বা ১৯৯২ সালে যা করতে পারেনি, তা ইয়ন মরগানের দল কি ২০১৯ সালে করতে পারবে? 

মরগানরা অবশ্যই ফেভারিট হিসেবে মাঠে নামবে। কিন্তু এটাও মাথায় রাখতে হবে, লর্ডসে ইংল্যান্ডের রেকর্ড সে রকম ভাল নয়। নিউজিল্যান্ডও নিশ্চয়ই এই ব্যাপারটা জানে।

জেসন রয় দলে ফিরে আসার পরে জনি বেয়ারস্টো ওর ব্যাটিং কৌশলটা বদলে ফেলেছে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এই বিস্ফোরক ওপেনিং জুটি ম্যাচটা সহজেই বার করে নিয়ে চলে যায়। 

ট্রেন্ট বোল্ট আর ম্যাট হেনরিকে যে করে হোক এই ওপেনিং জুটিটা ভাঙতে হবে। তার পরে যদি তাড়াতাড়ি জো রুট আর ইয়ন মরগানকে ফিরিয়ে দিতে পারে, তা হলে ম্যাচ জমে যাবে। কিন্তু যদি ইংল্যান্ডের প্রথম চার ব্যাটসম্যানের কেউ উইকেটে জমে যায়, তা হলে নিউজিল্যান্ডের কাজ কঠিন হয়ে যাবে।

বিশ্বকাপ ফাইনালের ভাগ্য সম্ভবত নির্ভর করে থাকবে ইংল্যান্ড ব্যাটিং বনাম নিউজিল্যান্ড বোলিংয়ের লড়াইয়ের ওপরে। নিউজিল্যান্ডের থেকে অনেক এগিয়ে ইংল্যান্ড। কিন্তু এই বিশ্বকাপ অনেককেই চমকে দিয়েছে। 

ক্রিকেট হল মহান অনিশ্চয়তার খেলা! ভারতের বিরুদ্ধে নিউজিল্যান্ড যে ক্রিকেট খেলেছিল, সেটা যদি ফাইনালে খেলতে পারে, তবে দারুণ একটা ম্যাচ দেখা যাবে।  

যদি প্রথমে ব্যাট করতে হয়, নিউজিল্যান্ডকে তিনশোর বেশি রান তুলতেই হবে। তবে কাজটা সহজ হবে না। ইংল্যান্ডের বোলিং আক্রমণটাও রীতিমতো শক্তিশালী। জোফ্রা আর্চার, ক্রিস ওকস, মার্ক উড, লায়াম প্লাঙ্কেট, বেন স্টোকসের পেস আক্রমণ। সঙ্গে রয়েছে আদিল রশিদের স্পিন। 
 
নিউজিল্যান্ডকে কাপ দিতে গেলে জীবনের সেরা ইনিংসটা খেলতে হবে উইলিয়ামসনকে। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ককে বাদ দিলে রস টেলর এবং মার্টিন গাপ্টিলের দক্ষতা আছে ইংল্যান্ডের এই বোলিং সামলানোর।  

নিউজিল্যান্ডের একটাই রাস্তা আছে জেতার। স্কোরবোর্ডে একটা ভাল রান তুলে বোল্ট, হেনরি, লকি ফার্গুসনকে দিয়ে ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের আক্রমণ করতে হবে একেবারে প্রথম বল থেকে। শুরুতে উইকেট নিতেই হবে বোল্টকে। না হলে নিউজিল্যান্ডের জেতার কোনো সম্ভাবনাই নেই। এমনিতে ম্যাচটা ৮০ শতাংশই ইংল্যান্ডের দিকে ঝুঁকে। 

ফুটবল বিশ্বকাপে অল্পের জন্য ইংল্যান্ড পারেনি। ওদের সেই ‘কাপ ঘরে নিয়ে এসো’ স্লোগান পূর্ণতা পেতে পারে ক্রিকেট বিশ্বকাপে। ফুটবলে হ্যারি কেন যা করে দেখাতে পারেনি, মরগান আর ওর দল সেটা করে দেখাতেই পারে।  

ইডেন গার্ডেন্স, মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড আর লর্ডস হল বিশ্ব ক্রিকেটের তিনটি সেরা মাঠ। এই তিনটে মাঠেই এর আগে বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলেছে ইংল্যান্ড। ১৯৭৯ লর্ডসে, ১৯৮৭ ইডেনে আর ১৯৯২ সালে এমসিজি-তে। তিনটেতেই হেরেছে। আবার সেই লর্ডস।  

অনেকের ধারণা ইংল্যান্ডের স্বপ্ন এত দিনে সত্যি হতে চলেছে— ‘কাপ ঘরে আসছে’।