• বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

  • || ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ধামরাইয়ে প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে বঙ্গবন্ধু কলেজে লুট

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১১ এপ্রিল ২০১৯  

ঢাকার ধামরাইয়ে রোয়াইল বঙ্গবন্ধু কলেজের মুল্যবান মালামাল, আসবাবপত্র ভবনের ইট লুট হয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, কলেজসংলগ্ন রোয়াইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন কলেজের মালামাল বিক্রি করে দেওয়ার পর তার নির্দেশেই গত এক সপ্তাহ ধরে ভবনের ইট লুট করে নিচ্ছেন স্থানীয়রা। লুটপাটের ঘটনায় অভিযুক্ত আমজাদ হোসেনের বেতন-ভাতা বন্ধ করে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কালাম। 

উপজেলা প্রশাসন সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৬ সনে স্থানীয় সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদের উদ্যোগে উপজেলার রোয়াইলের তৎকালীন জামিদারদের রেখে যাওয়া নির্মিত পরিত্যক্ত ভবন মেরামত করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নামে কলেজের কার্যক্রম শুরু করে। প্রায় পাঁচ বছর কলেজটি চালু থাকালেও ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর তা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর উপজেলা প্রশাসন ওই সব ভবন দেখভালের দায়িত্ব দেন রোয়াইল উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। সুযোগে সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন দেড়-দুই বছর আগে প্রশাসনকে না জানিয়ে ওই সব ভবনের দামিদামি কাঠের দরজা-জানালাসহ অন্যান্য আসবাব বিক্রি করে দেন। ছাড়া প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে গত এক সপ্তাহ ধরে ভবনের আটটি কক্ষ ভেঙে ইট নিতে থাকেন স্থানীয় প্রায় এক থেকে দেড় পরিবার।

স্থানীয় সামসুল হক জানান, শিক্ষক আমজাদ হোসেন ভবনের ছাদ ভেঙে মূল্যবান ৪৮টি কাঠের বিম দরজা-জানালা বিক্রির উদ্যোগ নেয় প্রায় দুই থেকে আড়াই বছর আগে। ওই সময় আমি প্রতিটি বিমের দাম হাজার টাকা করে বলেছিলাম। কিন্তু আমাকে না দিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছেন।

রোয়াইল গ্রামের আমির হোসেন, ইসরাফিল, হুমুজ উদ্দিন, সিদ্দিকুর রহমানসহ অনেকে জানান, প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন কলেজ ভবনের ইট খুলে নিতে বলেছেন তাই আমরা নিয়েছি।

রোয়াইল উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান মনি বলেন, দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে স্থানীয় লোকজন কর্তৃক বঙ্গবন্ধু কলেজের ইট বিভিন্ন ধরনের মালামাল লুটে নেওয়ার বিষয়টি মেনে নেওয়া যায় না। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দেওয়া হবে।    

রোয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম মোহাম্মদ সামসুদ্দিন মিন্টু বলেন, শিক্ষক আমজাদ হোসেন চায় না এখানে বঙ্গবন্ধুর নামে কলেজ হোক। তা না হলে ধরনের কাজ কেন করবেন তিনি। 

ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন বঙ্গবন্ধু কলেজের মালামাল বিক্রির কথা অস্বীকার করে বলেন, কলেজের পরিত্যক্ত ভবন ভেঙে স্কুল ভবন করতে চেয়েছি। কিন্তু কাউকে ইট খুলে নিতে বলিনি। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার বেতন-ভাতা বন্ধ করে দিয়েছেন বলে স্বীকার করেন তিনি। 

স্থানীয় সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদ বলেন, বঙ্গবন্ধু কলেজের ইট নেওয়ার কথা শুনেছি। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলে দিয়েছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোয়াইল উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি আবুল কালাম বলেন, প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনের নির্দেশে স্থানীয়রা ভবনের ইট লুট করেছে এবং আগেও বিমসহ অন্যান্য মালামাল বিক্রি করেছে বলে সত্যতা পেয়েছি। ঘটনায় তার (আমজাদ হোসেন) বেতন-ভাতা বন্ধ করে দিয়েছি।