• রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

ধামরাইয়ে চলছে র‌্যাফেল ড্রয়ের নামে জুয়া

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৩ জুলাই ২০১৯  

ঢাকার ধামরাইয়ে রথযাত্রার মেলায় লটারির ফাঁদে পড়ে স্থানীয় মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পুরস্কারের লোভে দিন এনে দিন খাওয়া মানুষেরা তাদের রোজগার লটারি নামের জুয়ার টিকিট কিনে শেষ করছেন

প্রশাসনের নাকের ডগায় র‌্যাফেল ড্র-এর নামে অবৈধভাবে লটারি নামে টিকিট বিক্রি করে জনগণের পকেটের টাকা হরিলুট করলেও প্রশাসন নির্বিকার বলে অভিযোগ উঠেছে

ধামরাই উপজেলার যাত্রাবাড়ী এলাকায় রথযাত্রা মেলায় ‘দৈনিক স্বপ্ন প্রদীপ র‍্যাফেল ড্র’ নামে মঞ্চ তৈরি করে মাসব্যাপী অবৈধভাবে এই র‍্যাফেল ড্রয়ের আয়োজন করা হয়েছে বিষয়টি অবগত হয়েও স্থানীয় প্রশাসন এই জুয়া বন্ধে কোনো প্রদক্ষেপ নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে

স্থানীয়রা জানান, ধামরাই রথযাত্রা মেলায় অবৈধভাবে র‍্যাফেল ড্রয়ের নামে জুয়ার আয়োজন করে আয়োজকেরা প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে শতাধিক অটোরিকশা ও ভ্যানে মাইকিং করে উপজেলারর বিভিন্ন এলাকায় এই র‌্যাফেল ড্রয়ের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে দিনভর কুপন বিক্রির পর প্রতিদিন রাতে ওই মঞ্চে ড্র অনুষ্ঠিত হয় এরপর মাইকে ঘোষণা দিয়ে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় বিজয়ীদের হাতে মেলার শুরুতে কুপন বিক্রি না করলেও নানা মহলের ছত্রছায়ায় গত বুধবার হতে শুরু হয়েছে

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পত্রের কোনো শর্তাবলিতে মেলায় লটারি বা র‌্যাফেল ড্র’র কথা উল্লেখ নেই তবে কিভাবে এই লটারি পরিচালনা করছেন এমন প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে পারেনি মেলা কর্তৃপক্ষ

মেলা ও কুপন বিক্রির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেলার আয়োজকদের মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে এই কুপনের আয়োজন করা হয়েছে প্রতিদিন ভোরে অর্ধশতাধিক রিকশা নিয়ে কুপন বিক্রি করতে বের হন লটারির লোকজন মোটরসাইকেল, টেলিভিশন, ফ্রিজ, টাকাসহ নানা ধরনের আকর্ষণীয় পুরস্কারের ঘোষণা দিয়ে তারা সন্ধ্যা পর্যন্ত ধামরাইয়ের ১৭টি ইউনিয়নে প্রচারণা চালান তারা পাশের আশুলিয়া ও মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকাতেও যান প্রতিটি কুপন ২০ টাকা করে বিক্রি হয় প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার কুপন বিক্রি হয়ে থাকে

স্থানীয় গার্মেন্টস কর্মী রফিক বলেন গতকাল ১০০টি কুপন কিনেছিলাম কিন্তু একটি পুরস্কারও পাইনি এটা অনেকটা নেশার মতো মোটরসাইকেল ও ফ্রিজের লোভে তিনি প্রতিদিনই কুপন কেনেন কিন্তু একদিনও বিজয়ী হতে পারেননি আসলে ‘যেভাবে প্রচারণা চালায়, তাতে লোভ সামলানো যায় না এ কারণে প্রতিদিনই একাধিক লটারি কিনেন তিনি একজন কুপন বিক্রেতা বলেন, দিনে প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকার কুপন বিক্রি করেন তিনি এ কাজের জন্য তাদের নিয়মিত পারিশ্রমিক দেওয়া হয়

এবার রথমেলাতে যাতে র‍্যাফেল ড্র আয়োজন না করা হয় সে মর্মে ধামরাইয়ের কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন একাত্ততা প্রকাশ করে ঢাকা জেলা প্রশাসক, ডিআইজি ঢাকা, এসপি ঢাকা, ইউএনও ধামরাই, ওসি ধামরাই, মেয়র ধামরাই, উপজেলা চেয়ারম্যান ধামরাই বরাবর চিঠি প্রেরণ করেন মেলা শুরুর দিকে অবৈধ র‍্যাফেল ড্র চালু না হলেও গত বুধবার হতে প্রকাশ্যে চলছে র‍্যাফেল ড্র জুয়া ধামরাই বাসীর অর্থনৈতিক ক্ষতির আশংকায় চিন্তিত ধামরাইয়ের সচেতন নাগরিক সমাজ

র‍্যাফেল ড্র এর বৈধতা সম্পর্কে জানতে ঢাকা জেলা প্রশাসক আবু সালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খানকে একাধিকার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি