• শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

অর্থ আত্মসাৎ এএসআইর

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৫ মে ২০২৪  

মানিকগঞ্জে বিয়ের ভুয়া কাবিন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক ও প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ-আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে জেলার হরিরামপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আকবর আলী খন্দকারের বিরুদ্ধে। গত ২৪ এপ্রিল মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের সদর আমলী আদালতে মামলা করেন ভুক্তভোগী ওই নারী।

অভিযুক্ত পুলিশ এএসআই আকবর আলী খন্দকার বর্তমানে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর থানায় কর্মরত আছেন। এর আগে মানিকগঞ্জ সদর থানায় কর্মরত থাকা অবস্থায় ওই নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ভুক্তভোগী ওই নারী মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বাসিন্দা ও বিবাহ বিচ্ছেদী দুই সন্তানের জননী।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, থানায় একটি কাজের সুবাদে ওই নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এএসআই আকবর আলী। এ সময় বিয়ে প্রলোভনে পারিবারি সমস্যার অযুহাতে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা নেন তিনি। পরে বিয়ে কথা বলে ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর ভূয়া কাবিননামায় ওই নারীর স্বাক্ষর নেওয়া হয়। এর পর থেকে স্বামী পরিচয়ে নিয়মিত ওই নারীর বাড়িতে যাতায়াত করতেন আকবর আলী।

এদিকে কাবিনের কয়েকমাস পর ওই নারী আকবর আলী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এরপর থেকে ওই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তিনি। পরে থানায় যোগাযোগের মাধ্যমে আকবর আলী সঙ্গে দেখা করে বিয়ের কাবিননামা চান ভুক্তভোগী ওই নারী। কিন্তু ওই নারীকে কাবিননামা না দিয়ে তাদের সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেন এএসাআই আকবর।

এদিকে ওই ঘটনায় ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপারের কাছে ও চলিত বছরের ২৮ জানুয়ারি জেলা লিগ্যাল এইডে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই নারী। তবে কাঙ্ক্ষিত সহযোগিতা না পেয়ে মানিকগঞ্জ অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন ভুক্তভোগী ওই নারী।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে শনিবার আকবর আলী খন্দকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কাজের অযুহাতে তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। এরপর তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

জানতে চাইলে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ গোলাম আজাদ খান বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি, বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর মামলার বিষয়টি পিবিআই তদন্ত করছে, তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলতে পারব।’

ভুক্তভোগী নারী জানান, ‘দুই সন্তান রেখে প্রায় ৩ বছর আগে স্বামী মারা গেছে। আমার সব কিছু জেনেও তিনি (আকবর আলী) আমাকে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন পর কাবিননামা চাই, কিন্তু তিনি আমাকে কাবিননামা না দিয়ে উল্টাপাল্টা কথা বলতে শুরু করেন।

এরপর তার বাড়ির ঠিকানা চাইলে তিনি আমাকে স্ত্রী হিসেবে অস্বীকার করে। তখন ধারণা হয়, তিনি আমার সঙ্গে প্রতারণা করছেন। পরে স্ত্রীর অধিকার আদায়ের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেও কোনো সহযোগীতা না পেয়ে বাধ্য হয়ে কোর্টে মামলা করি। আমি স্ত্রীর অধিকার চাই, আমার আর কিছূ লাগবে না।’

ওই নারী আরও জানান, ‘পাওনা টাকা আদায়ের জন্য মানিকগঞ্জ থানায় অভিযোগের মাধ্যমে পুলিশ আকবর আলী খন্দকারের সঙ্গে পরিচয় হয়। এরপর কাজের অযুহাতে দিনে-রাতে ফোন করে কথা বলতেন। একাধিকবার নিষেধ করার পরও তিনি নিষেধ শোনেননি। এরপর আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং বিয়ের কথা তার ও বার বাড়ির প্রয়োজনের কথা বিভিন্ন সময় টাকা নিয়েছে।’ বিয়ের সময় এএসআই আকবর আলী খন্দকার তার বিবাহিত জীবনের কথা গোপন রেখেছিলেন বলেও ওই নারী জানান।’