• রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

গাজীপুরে বাযু দূষণে ঝুঁকিতে ট্রাফিক পুলিশ

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৩ ডিসেম্বর ২০১৯  

দূষণে রাজধানীর পাশের গাজীপুর শহরের বাতাস মারাত্মক অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়ায় প্রতিনিয়ত ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা অসুস্থ হচ্ছেন বলে জানা গেছে।

সরেজমিনে নগরীর টঙ্গী থেকে চান্দনা-চৌরাস্তা পর্যন্ত সড়কে ধুলা উড়তে দেখা গেছে। মাঝে-মধ্যেই অতিরিক্ত ধুলাবালিতে ধুলাচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে চারপাশ।

সেখানকার সড়কে দিন-রাত ধুলা ওড়ার কথা তুলে গাজীপুর মহানগর দক্ষিণ ট্রাফিক পুলিশের সহকারী কমিশনার থোয়াই অং প্রু মারমা বলেন, “এরই মধ্যে স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে আমাদের সড়ক-মহাসড়কে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করতে হচ্ছে।

ধুলায় আক্রান্ত হয়ে ট্রাফিক বিভাগের ইন্সপেক্টর মো. শাহাদত হোসেন, সার্জন মো. হোসেনুজ্জামানসহ অনেকেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

দিন শেষে ধুলায় একেবারে সাদা হয়ে যাই। হাত-মুখ ধোয়ার সময় কালো কফ বের হয়। এসব ধুলা নিয়ন্ত্রণে দিনে তিনবার পানি ছিটানো দরকার মনে করেন তিনি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিআরটি কর্তৃপক্ষ ধুলায় সময়মতো ও পরিমাণ মতো  পানি ছিটাচ্ছে না। এতে ধুলায়  সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছি আমরা।

টঙ্গী থেকে গাজীপুরের চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকা পর্যন্ত বিআরটি প্রকল্পের কাজের কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে প্রচণ্ড ধুলা সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানান গাজীপুর মহানগর উত্তর ট্রাফিক পুলিশের সহকারী কমিশনার মাজহারুল ইসলাম।

ভোর থেকে রাত পর্যন্ত অবিরত উড়তে থাকা ধুলার মধ্যে স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে কাজ করায় বেশ ট্রাফিক পুলিশের কয়েকজন সদস্য ফুসফুসের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন বলে জানান তিনি। এজন্য কয়েক দিন পরপরই অনেককেই ছুটিতে যেতে হচ্ছে।

চালকরা এ ধুলার কারণে সিগন্যাল ঠিকমত দেখতে না পারায় মাঝে-মধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটছে বলে জানালেন এই ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা। তার অভিযোগ-মহাসড়কের এ অংশে দিনে দুইবার পানি ছিটানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও বিআরটি প্রকল্পের পক্ষ থেকে নিয়মিত ও পর্যাপ্ত পানি দেওয়া হয় না।

এই অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রতিদিন অন্তত দুইবার পানি ছিটানো হচ্ছে’ দাবি করে বিআরটি প্রকল্পের ব্যবস্থপক মো. মোমেনুল ইসলাম বলেন, তবে রোদের কারণে পানি শুকিয়ে যায়।
ওই সড়কে গাড়ির অতিরিক্ত চাপ থাকায় অনেক সময় তাদের কাজ করতে বেশ বেগ পেতে হয় বলেও জানান তিনি।

গাজীপুর সিভিল সার্জন মো. খায়রুজ্জামান বলেন, গাজীপুরে এধরণের রোগে  আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।  ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি ভুগছেন ওই পথে চলাচলকারী মানুষজনও।

গত মাসে বিশ্বের শীর্ষ দূষিত বায়ুর শহর হিসেবে ঢাকার নাম উঠে আসে। তবে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের হিসেবেও এর আশপাশের শহরগুলোর বাতাসও স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের হিসেবে সোমবার গাজীপুরের বাতাস খুবই অবস্বাস্থ্যকর হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন প্রতি ঘনমিটারে ২.৫ মাইক্রোমিটার ব্যাসের বস্তুকণার পরিমাণ ২৭৩  পিপিএম (পার্টস পার মিলিয়ন)।  তবে এ সময় রাজধানী ঢাকার বাতাসের অবস্থা ছিলো ‘তীব্র অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে, প্রতি ঘনমিটারে ৩১৫  পিপিএম। গাজীপুরে গত ১০ দিনের মধ্যে ২৭ নভেম্বরে বাতাস ছিল খুবই অস্বাস্থ্যকর।