• শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১

  • || ০৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

ধামরাইয়ে শব্দ দূষণে পরীক্ষার্থীদের লেখাপড়া বিঘ্নিত

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

ঢাকার ধামরাইয়ে প্রশাসনের উদাসীনতা ও আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাবে শব্দ দুষণের শিকার হচ্ছে এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ অসুস্থ ব্যক্তি ও শিশুরা। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের লেখাপড়া দারুণভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এতে পরীক্ষার ফলাফলে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা চরম দুশ্চিন্তায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে পৌর এলাকায় শব্দ দুষণ চরম আকার ধারণ করছে। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে বাউল গান, ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান চলছে। এসব অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা হচ্ছে মাইক ও ডেকসেট। এসব অনুষ্ঠানের মধ্যে বিয়ে, সুন্নাতে খাতনা, জন্মদিনে উচ্চ শব্দে গভীর রাত পর্যন্ত বাজানো হচ্ছে ডেকসেট। এসব সামাজিক অনুষ্ঠানে ডেকসেট বাজিয়ে নৃত্য করছে তরুণ-তরুণীরা। আবার অনেক অনুষ্ঠানে বিকট শব্দে আতশবাজির বিস্ফোরণ ঘটানো হচ্ছে।

অথচ পৌর কর্তৃপক্ষ এসএসসি পরীক্ষার আগের দিন মাইকিং করে পৌরবাসীকে সতর্ক বার্তা ও উচ্চ শব্দে কোনো কিছু বাজানো নিষেধ করে দিয়েছে। এরপরও কোনো কাজ হচ্ছে না। অতিউৎসাহী ও আনন্দ পিপাসুরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত উচ্চ শব্দে বাজাচ্ছে গান বাজনা। কোথাও মানা হচ্ছে না পৌর কর্তৃপক্ষের নিষেধ বা সতর্ক বার্তা। এছাড়া কোনো পদক্ষেপও নেওয়া হচ্ছে না প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

উপজেলা মাধ্যমিক কার্যালয় থেকে জানা গেছে, পৌর এলাকার প্রায় ১০-১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী পৌরসভার মধ্যে তিনটি কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে। এ ছাড়া উপজেলার অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও কেন্দ্র রয়েছে।

এসএসসি পরীক্ষার্থী নাজমা বেগম, রুমানা আক্তার, মিথিলা, আশিকুর রহমান, সন্তোষ কুমার, পরিতোষ কুমার, বিপ্লব হোসেন, জামাল উদ্দিনসহ অনেকে জানায়, পৌর এলাকায় দিনে-রাতে প্রায় সময়ই উচ্চ শব্দে মাইকে বা ডেকসেটে বাজানো হচ্ছে গান-বাজনা। আবার রাতে চলে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান। ধর্মীয় অনুষ্ঠান বলে নিষেধও করা যাচ্ছে না। ফলে আমাদের পড়ালেখা করতে খুব অসুবিধা হচ্ছে। এসব শব্দ আমাদের কানে এসে লাগে এবং পড়ার ব্যাঘাত ঘটছে। তারা এসব উচ্চ শব্দ বন্ধ করার দাবি জানায়।

এ বিষয়ে ধামরাই থানা পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মাসুদুর রহমান বলেন, উচ্চ শব্দ ব্যবহার করার কারণে রবিবার রাতেও একটি অনুষ্ঠান থেকে মাইক নিয়ে আসা হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন, যারা আইন লঙ্ঘন করে মাইক কিংবা ডেকসেটের মাধ্যমে শব্দসীমা অতিক্রম করে পরীক্ষার্থীদের ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় দেখছি না।

২০০৬ সালে প্রণীত নীতিমালা অনুযায়ী আবাসিক এলাকায় সকাল ৬ টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ শব্দসীমা হলো ৫৫ ডেসিবল এবং রাত নয়টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৫ ডেসিবল শব্দসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর বেশী মাত্রায় শব্দ সৃষ্টি করা দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু ধামরাইয়ে তা মানা হচ্ছে না বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।