• রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

বাবা-মার অহেতুক ঝগড়া, থানায় সন্তান

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৩ জুন ২০১৯  

একটি ছোট্ট শিশু পারিবারিক শান্তি আর নিরাপত্তা ছাড়া আর কি-ই বা চাইতে পারে। ৩য় শ্রেণিতে পড়া দরিদ্র পরিবারের এই ছেলেটিও ব্যতিক্রম নয়। বাবা-মার অহেতুক ঝগড়া-হাতাহাতি তার দেখতে ভালো লাগে না। তাই অনেকটা প্রশংসনীয় বুদ্ধিমত্তা দেখিয়ে বাবা-মা'র ঝামেলা মেটানোর জন্য নিজ থেকেই থানায় চলে যায় সে। শরণাপন্ন হয় পুলিশের। এরপরের ঘটনাপ্রবাহ রাজধানীর সূত্রাপুর থানার ওসি কাজী ওয়া‌জেদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে জানিয়েছেন। 

 

 

পাঠকদের জন্য স্ট্যাটাসটি হুবুহু তুলে ধরা হলো- 

বিস্কুট খাওয়ার জন্য বলতেই বললো, থ্যাঙ্ক্যু স্যার, বিস্কুট খাবো না।

আর খাবেই বা কিভাবে? কান্না জড়িত কন্ঠে যে কিছু খেতে ইচ্ছে করে না। তাছাড়া প্রথমে একবার সৌজন্যতা দেখিয়ে না বলতেই হয়! ছোট্ট ছেলেটির মধ্যে সেই ভদ্রতাটুকু বেশ আছে লক্ষ্য করলাম। 

ছেলেটির সাহসের তারিফ করতেই হয় ! 

গতকাল (বৃহস্পতিবার) কাঁদতে কাঁদতে থানায় আসে।

অভিযোগ, বাবা শুধু শুধু মা-কে সন্দেহ করে। আর এসব নিয়ে ঝগড়া ঝাটি, হাতাহাতি, যা দেখতে ভাল লাগে না ৩য় শ্রেনীতে পড়া দরিদ্র পরিবারের ছেলেটির।

বাবা মায়ের ঝামেলা মিটানোর জন্য নিজে থেকেই থানায় আসে সে। 

গতকালই বাবা মা-কে থানায় এনে কথা বলার জন্য অফিসার পাঠালেও পাওয়া যায়নি বাবাকে। 

আজ বাবা আর মা-কে ডেকে এনে বোঝানো হল যাতে তাদের কোন আচরণের কারণে ছেলেটির স্বাভাবিক জীবনে কোন প্রভাব না পড়ে। ছেলেটিও খুব খুশি হল। 

যতটুকু বোঝা গেল ছেলেটি পারিবারিক শান্তি আর নিরাপত্তা চায়। চায় টেনশনমুক্ত থেকে সুন্দরভাবে পড়ালেখা করতে। 
কথাবার্তায় অত্যন্ত মার্জিত আর শব্দ চয়নে মেধার মিশ্রণ। পারিবারিক দৈন্যতার মাঝেও ছেলেটির মাঝে বড় হওয়ার একটা আকুতি বেশ স্পষ্ট! 

কাছে বসিয়ে নিচু স্বরে আর্থিক কোন সমস্যা আছে কিনা জিজ্ঞেস করতেই বললো, “নেই স্যার”। বুঝলাম এই ছোট ছেলেটির সামর্থ না থাকলেও আত্মসম্মানবোধে কোন ঘাটতি নেই। 

আজ ২য় দিনে তিনবার বলার পর একটা বিস্কুট হাতে নিলেও খেতে দেখলাম না। শুধু তাই নয়, যাওয়ার সময় বাবা মায়ের সামনেই নিজ থেকে চেয়ে নিল আমার ফোন নম্বর। ছোট্ট ছেলেটি খুব স্মার্টলিই বললো “স্যার, প্রয়োজনে আপনাকে ফোন দিবো”। 

ছোট এই ছেলেটির আচরণ আর কথাবার্তায় বিস্মিত না হয়ে পারিনি। মনে মনে ভাবলাম, এমন সাহসী আর স্মার্ট ছেলেই তো আমরা চাই। 

ওর কথাবার্তা আর আচরণে মনে হল ও যাবে অনেক দূর, ভাল কিছু পাবো আমরা ওর কাছ থেকে।