‘জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বিশ্ব নেতাদের এগিয়ে আসতে হবে’

জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে এগিয়ে আসতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

তিনি সোমবার জাতিসংঘ সদর দফতরে চলতি ৭৪তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের দ্বিতীয় কমিটির প্লেনারি সভায় জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং প্রথম কমিটির উন্মুক্ত বিতর্কে নিরস্ত্রীকরণ ইস্যুতে বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি এ আহ্বান জানান।

মঙ্গলবার ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

নিরস্ত্রীকরণ ইস্যুতে নাহিদ বলেন, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও উন্নত পৃথিবী গড়ে তুলতে নিরস্ত্রীকরণ ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে পুনরায় শক্তিশালী করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই দ্বিগুণ প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে হবে।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক ‘ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটে’ জলবায়ু পরিবর্তন রোধে সত্যিকারভাবে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আবশ্যকতার বিষয়ে বিশ্ব নেতারা যে আহ্বান তুলে ধরেছেন তা আমরা শুনেছি। তাই আসুন সবুজ অর্থনীতি, সবুজ প্রযুক্তি ও একটি সবুজ পৃথিবী গড়তে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণে বৈশ্বিক রাজনৈতিক সদিচ্ছার সর্বোচ্চ প্রতিফলন ঘটাই।

জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আইপিসিসি’র বিশেষ রিপোর্ট (এআর-৫) এর হিসেব অনুযায়ী জলবায়ু পরিবর্তনের সর্বাপেক্ষা বিরূপ প্রভাবের শিকার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এমন হুমকির কারণেই বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তাই আমাদের জাতীয় পরিকল্পনা এবং টেকসই উন্নয়ন কৌশলের অগ্রভাগে জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবিলা বিষয়টি রয়েছে।

নুরুল ইসলাম নাহিদ তার বক্তব্যে বাংলাদেশে গৃহীত সৌরশক্তি উৎপাদন, সমুদ্র তীরবর্তী ভূমি পুনরুদ্ধার, ঘুর্ণিঝড় ও বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, কমিউনিটিভিত্তিক দুর্যোগ প্রস্তুতি, বন্যা সীমারেখার ঊর্ধ্বে সড়ক ও মহাসড়ক উন্নীতকরণ, লবণাক্ত ও খরা প্রতিরোধক শস্যের জাত উদ্ভাবন, সুন্দরবন সংরক্ষণ এবং ডেল্টা পরিকল্পনা ২১০০ গ্রহণের মতো বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।

জাতিসংঘে প্রদত্ত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রথম ভাষণ থেকে “বিশ্বের সব প্রান্তে নিশ্চিত হোক শান্তিপূর্ণ সহবস্থান, অস্ত্র সীমিতকরণ ও উত্তেজনা পরিহারের পরিবেশ” অংশটি উদ্ধৃত করে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, জাতির পিতার এই আদর্শ ধারণ করে বাংলাদেশ নিরস্ত্রীকরণ সংক্রান্ত প্রধান প্রধান বহুপাক্ষিক চুক্তির আওতায় সর্বোচ্চ দায়িত্ব নিতে কখনই পিছ পা হয়নি।

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিষয়টি উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, এক্ষেত্রে আমরা সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করে চলেছি। 

তিনি বলেন,পারমানবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করতে সব সদস্য রাষ্ট্রের সমান অধিকার রয়েছে।

মহাকাশে অস্ত্রের বিস্তার ঠেকাতে যেসব আন্তর্জাতিক আইন রয়েছে তা মেনে চলতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ মহাকাশে তার প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করেছে। তাই মহাকাশে অস্ত্র প্রতিযোগিতা রোধে বাংলাদেশও এক অংশীজন।

তিনি ৭৪তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বিভিন্ন কমিটির চলমান কর্মসূচিতে অংশ নিতে বর্তমানে নিউইয়র্ক রয়েছেন।