• মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩০ ১৪৩১

  • || ০৫ জ্বিলকদ ১৪৪৫

মাহি বি চৌধুরী পরিচালিত `চুরি` নাটকের অন্তরালে

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২০ মে ২০১৯  

নির্বাচন ঘনিয়ে আসলে কিছু মৌসুমি রাজনীতিবিদের আবির্ভাব হয় রাজনীতিতে। যারা জনগণের দোরগোড়ায় না গিয়ে বিলাসবহুল হল রুমেবিভিন্ন ধরণের সভা সেমিনারে মুখরোচক কথা বলতে বেশি পছন্দ করেন। জনবান্ধব রাজনীতির বদলে তাদের এ সেমিনার বান্ধব রাজনীতিরপ্রভাব ভোটের বাক্সে পড়ে। এসব মৌসুমি সেমিনার বান্ধব রাজনীতিবিদদের নির্বাচনে জামানত রক্ষা করা নিয়ে টানাটানি শুরু হয়। তেমনএকজন 'সেমিনার টক শো বান্ধব রাজনীতিবিদ' হচ্ছেন মাহী বি চৌধুরী। বিকল্পধারা নামক এক আনকোরা রাজনৈতিক দলের অন্যতম নেতামাহী বি চৌধুরী।

তিনি ১৯৯২ সালের আগস্ট মাসে স্বাধীনতাবিরোধী দল বিএনপিতে যোগ দেয়া এক ব্যর্থ রাজনীতিবিদ। বিএনপিতে যোগদান করলেও ২০০৪সালে বিএনপি থেকে বিতাড়িত হয়ে নিজেই একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। নতুন দলের নাম দেন বিকল্পধারা বাংলাদেশ। তবে তিনিবিকল্পধারায় থেকে একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে জনগণের সামনে নিয়ে আসেন প্ল্যান এ। যেখানে তিনি বিএনপির সাথে আঁতাত করেনির্বাচনে জয়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তবে মাহির অতীত কুকর্ম ও কর্মকাণ্ডের কথা চিন্তা করে সেই পরিকল্পনায় ছাই ফেলে দেয় বিএনপি।বিএনপি থেকে বাধাপ্রাপ্ত হতে নতুন করে সামনে নিয়ে আসেন প্ল্যান বি। যেখানে তিনি বিএনপিকে বাদ দিয়ে আঁতাত করতে চেয়েছিলেনমানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত দল জামায়াতে ইসলামের সঙ্গে। তবে সেক্ষেত্রের ব্যর্থ মাহি বি চৌধুরী। সবদিক দিয়ে ব্যর্থ মাহিচেয়েছিলেন সরকারের বিরুদ্ধে আঁতাত করতে। একপর্যায়ে তিনি সেখানে ব্যর্থ মুখের দেখা পেয়েছিলেন। তবে মাহি সেখানেই দমে যাননি।

সম্প্রতি ব্যক্তিগত কাজে যুক্তরাষ্ট্রে যান বিকল্পধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহী বি চৌধুরী। যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার পর হঠাৎ খবর পাওয়া যায় মাহি বিচৌধুরীর রাজধানীর মধ্য বাড্ডার ট্রপিকাল মোল্লা টাওয়ারের রাজনৈতিক কার্যালয়ে চুরি হয়েছে। চুরি হওয়া বিষয় বস্তুর মধ্যে ছিলো মাহির বিভিন্নগবেষণার দলিল, কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সম্বলিত হার্ড ডিস্ক, র‌্যামসহ কম্পিউটারের অন্যান্য যন্ত্রাংশ। চুরিরঘটনায় ইতোমধ্যে বাড্ডা থানায় মামলা হয়েছে। তবে মাহির রাজনৈতিক কার্যালয়ে তারই অনুপস্থিতে অফিসের প্রেস সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর আলম,দপ্তর সম্পাদক ওয়াসিমুল ইসলামের নিয়মিত যাতায়াত ছিলো।

এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অফিসের চাবি ব্যবহারের কোনোনিয়মতান্ত্রিকতা ছিলো না। চাবি দুইটি রাখারও কোনো নির্দিষ্টতা ছিলো না। তদন্তে জানা যায়, অফিসের চাবি ভেঙ্গে যাওয়ার পর অফিস সহকারীইব্রাহিম ও প্রেস সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর আরো দুইটি নকল চাবি বানিয়েছিলেন। এতে করে বুঝা যায় নকল চাবি আরো বানানো হয়েছিলো সেই সাথেচাবির এক্সেস অনেকের কাছেই ছিলো। প্রতিদিন অফিসে জাহাঙ্গীরের যাতায়াত থাকলেও চুরির ঘটনার দিন জাহাঙ্গীর অফিসে আসেননি।

তবে পুরো ঘটনা ও পুলিশি তদন্ত বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, মাহী বি চৌধুরী নিজেই কারোর সহযোগিতায় এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। জাহাঙ্গীর ওওয়াসিমের মধ্যকার বিরোধকে কেন্দ্র করে তিনি এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। এছাড়াও মাহি বি চৌধুরী রাজনৈতিক দর্শনেও আওয়ামী চেতনার বিরোধীএবং বিএনপির প্রতি ঝোঁক তার সবসময় পরিলক্ষিত হয়েছে। তবে তিনি তারেক জিয়ার বিরোধিতা করে বিএনপি থেকে সাড়া না পাওয়ায় তিনিতার প্রেক্ষাপট পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনেন। 

এদিকে মাহি বি চৌধুরী এই ঘটনার দায় সরকারের উপর চাপিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা করলেও সকল বিশ্লেষণে ধারণা করাহচ্ছে, বিএনপিপন্থী ওয়াসিমুল ইসলাম ও মো. জাহাঙ্গীর আলম - এই দুই ব্যক্তিকে বিকল্পধারায় না রাখার সিদ্ধান্তকে একটি পূর্ণাঙ্গ ঘটনার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে মাহী বি চৌধুরীর নির্দেশেই এই চুরির ঘটনা ঘটানো হয়েছে।