• শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

একজন ডাক্তারে চলছে দেলদুয়ার ৫০ শয্যা হাসপাতাল

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০১৮  

 

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলায় প্রায় পৌনে তিন লাখ লোকের বাস। বৃহৎ এক জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য ৩১ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। ২০১৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের উদ্বোধনও করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে ৫০ শয্যা হাসপাতালের কোন কার্যক্রম শুরু হয়নি। সামান্য কিছু যন্ত্রপাতি দেয়া হলেও কোন লোকবল নিয়োগ করা হয়নি। ফলে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে ৩১ শয্যার পুরোনো স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের কার্যক্রম। সবচেয়ে বড় সমস্যা তীব্র ডাক্তার সংকট। প্রতিদিন ১০ জন ডাক্তারের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও উপস্থিত থাকেন মাত্র ১ জন।

জানাযায়, ৩১ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ৩ টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে মোট ডাক্তারের পদ রয়েছে ১৮ টি। কর্মরত রয়েছেন ১৫ জন। এদের মধ্যে নানা অজুহাতে ৫ জন প্রেষনে অন্যত্র কর্মরত। আবাসিক মেডিকেল অফিসারের পদসহ ৩টি পদ খালি রয়েছে। ফলে প্রতিদিন ১০ জন ডাক্তারের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও উপস্থিত থাকেন মাত্র ১ জন। মাঝে মাঝে ডাক্তার শূণ্য থাকে হাসপাতালটি। ডাক্তাররা পালাক্রমে সপ্তাহে একদিন করে দায়িত্ব পালন করেন। কেউ কেউ সপ্তাহে একদিনও আসেন না। অথচ দিব্যি সারা মাসের উপস্থিতি দেখিয়ে বেতন ভাতা তুলে নিচ্ছেন। এব্যাপারে তাদের ব্যাখ্যাও আজব। একজন ডাক্তার একদিন করে উপস্থিত থাকলে ৬ ঘণ্টা হারে তার ৪ দিনের দায়িত্ব পালন হয়ে যায়। ফলে বহিঃবিভাগে রোগীরা তেমন সেবাই পাচ্ছেন না।

অভিযোগ রয়েছে ইন্টার্নী করতে আসা মেডিকেল এ্যাসিস্টেন্টরা নিজেরা ডাক্তারের স্বাক্ষর ও সীল ব্যবহার করে ব্যবস্থাপত্র দেন। একাধিকবার হাসপাতাল পরিদর্শন করলে এই প্রতিবেদকের কাছে চিত্রটি ধরা পড়ে। উল্লেখ্য যে, গত ২৯ অক্টোবর জান্নাতুল নামে ২ বছর বয়সী একটি শিশুকে তার মা বাবা জরুরী বিভাগে নিয়ে আসেন। তখন দায়িত্ব পালনের কথা ছিল ডাক্তার আব্দুল্লাহ আল রতনের। কিন্তু বহিরাগত মনির নামে একজন মেডিকেল এ্যাসিস্টেন্ট উক্ত ডাক্তারের স্বাক্ষর ও সীল দিয়ে একটি ওষুধ লিখে বিদায় করেন। এভাবে দিনের পর দিন চলছে এরকম চিকিৎসা। দেখার যেন কেউ নেই। জ্বর, পেট ব্যাথা ও সামান্য আহত রোগীরা ভর্তি হন এখানে। দিনে রাতে একবার মিলে ডাক্তারের দেখা। হাসপাতাল থেকে নামে মাত্র ওষুধ সরবরাহ করা হলেও বাইরে থেকেই সব কিনতে হয়। উপজেলা হাসপাতালে সরকারের লাখ লাখ টাকা খরচ হলেও সাধারণ জনগন কাঙ্খিত কোন সেবাই পাচ্ছেন না। ফলে বাধ্য হয়ে বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে ছুটতে হচ্ছে তাদের, গুনতে হচ্ছে মোটা অংকের টাকা।

এব্যাপারে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মিনহাজ উদ্দিন মিয়া বলেন, ইন্টার্নী মেডিকেল এ্যাসিস্টেন্টেরা যদি ডাক্তারের স্বাক্ষর ও সীল ব্যবহার করে ব্যবস্থা পত্র দিয়ে থাকেন তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ডাক্তারদের দায়িত্ব পালনের জন্য সময় ভাগ করে দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।