• সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চোটের ছোবল সামলে টাইগারদের দুর্বার এগিয়ে চলা

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১ জুলাই ২০১৯  

দলে এত চোট। কিন্তু কাউকে দেখে কী সেটা বোঝার উপায় আছে? বরং শত আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হয়েও ২২ গজের বিশ্বযুদ্ধে টাইগাররা এগিয়ে চলেছে বীরদর্পে। সবাই সবার সেরাটিই উজাড় করে দিচ্ছে। তাতে সাফল্যও আসছে। ২০১৫ সালের পর এবারও লাল সবুজের দলটি দুর্বার এগিয়ে চলছে সামনের পানে।

অধিনায়ক মাশরাফির কথাই ধরুন না। হাঁটুর চোট তার নতুন নয়। দুই হাঁটুর জন্য ছয়বার ছুরি কাঁচির নিচে গিয়েছেন। এখনো বোলিং মার্কে যান নিক্যাপ টেনে টেনে। তবুও বাংলাদেশ ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা বোলারের মুকুট তারই মাথায়।

আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে চোট যোগ হয়েছে উরুর পেছনের দিকে। তাও ছিল সামলানোর মতো। কিন্তু ওই টুর্নামেন্টের ফাইনালে হ্যামস্ট্রিংয়ে নতুন করে পাওয়া চোট তাকে যারপরনাই ভোগাচ্ছে । গ্রেড-২ টিয়ার মাত্রার চোট হলেও মনের জোরে তা নিয়েই বিশ্বকাপে সদর্পে খেলে যাচ্ছেন লাল সবুজের এই দুরন্ত দুর্বার যোদ্ধা।

এশিয়া কাপে পাঁজরের চোট পাওয়া টাইগার উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মুশফিকু রহিম চলতি বিশ্বকাপে চোট পেয়েছিলেন আঙুলে। টন্টনের সমারসেট কাউন্টি গ্রাউন্ডে উইন্ডিজ ম্যাচের আগের দিন নেটে ব্যাটিং অনুশীলন সময় মোস্তাফিজুর রহমানের শর্ট বল তার আঙ্গুলে ছোবল মারে। কিন্তু তাই বলে তার ব্যাট থেমে নেই! বরং আগের চেয়ে আরো ক্ষুরধার তিনি। চোটের পরপরই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অপরাজিত ১০২ রানের ইনিংস খেলা মিস্টার ডিপেন্ডেবল আফগান বধের ম্যাচে খেললেন ৮৩ রানের ঝলমলে এক ইনিংস।

বিশ্বকপে চোট ছাড়েনি রেকর্ড বয় সাকিব আল হাসানকেও। গেল ৮ জুন কার্ডিফে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে ব্যাটিং চলাকালীন ঊরুতে চোট পেয়েছিলেন সাকিব। যদিও তার ইনজুরি খুব একটা গুরুতর ছিল না। কিন্তু ১১ জুন ব্রিস্টলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তার মাঠে নামা নিয়ে ছিল রাজ্যের সংশয়। মাত্র ৫ দিনের বিশ্রাম নিয়ে চোটকে জয় করে বিশ্বমঞ্চে নিজের বিজয় নিশান উড়িয়ে চলেছেন লাল সবুজের এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।

তরুণ পেস বোলিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন তো পিঠের ব্যথায় একটি ম্যাচে খেলতেই পারেননি। নটিংহ্যাম কাউন্টি গ্রাউন্ডে অজি রণের আগের দিন পিঠের পুরোনো ব্যথা মাথাচারা দিয়ে উঠলে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিতে সাজঘরেই কাটাতে হয়েছে। অথচ ৫ ম্যাচে ১০ উইকেট শিকার করে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে শীর্ষে তিনিই।

সাউদাম্পটনে আফগান বধের ম্যাচে অনুশীলনে সাব্বির রহমানের ব্যাট থেকে আসা বল মাথায় লেগে আহত হয়েছিলেন অফস্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ। ভাগ্য ভালো, অল্পতেই পরিত্রাণ মিলেছিল। একটি ম্যাচেও মাঠের বাইরে থাকতে হয়নি। বিশ্বকাপে খেলা ৬ ম্যাচে মিরাজের উইকেট ৫টি।

ইনজুরির মিছিলের সবশেষ সদস্য মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ফেব্রুয়ারি-মার্চে নিউজিল্যান্ড থেকে কাঁধের ব্যথা বয়ে আনা এই মিডল অর্ডার বিশ্বকাপেও তা বয়ে চলেছেন। ফলে ব্যাট হাতে নামা হলেও বল হাতে দলের জন্য অবদান রাখতে পারেননি। মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে সবশেষ পায়ের মাংস পেশির চোট। আফগানিস্তান ম্যাচে ডান পায়ের পেশির মাংসে টান পেয়েছিলেন রিয়াদ। ফলে ওই ম্যাচে আর ফিল্ডিংয়ে নামা হয়নি তার। যদিও এখন তিনি ভালো আছেন। তবে বিশ্বকাপের বাকি ২ ম্যাচে তাকে পাওয়া যাবে কী না সেজন্য অপেক্ষা করতে হবে আরেকটু সময়।

বিশ্বকাপের চলতি আসরটা ভালোই যাচ্ছে মাহমুদউল্লাহর। প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপেক্ষ ৩৩ বলে অপরাজিত ৪৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে দলের জয়ের অবদান রেখেছিলেন। পরের দুই ম্যাচ নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অবশ্য আহামরি কিছু করে দেখাতে পারেননি (২০, ২৮)। টন্টনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বধের ম্যাচে ব্যাট হাতে নামতে হয়নি। নটিংহ্যামে অস্ট্রেলিংয়ার বিপক্ষে ৫০ বলে করেছেন ৬৯ রান। সব শেষ রোজ বোলে আফগান বধের ম্যাচে ৩৮ বল খেলে দলকে উপহার দিয়েছেন অমূল্য ২৭ রান।