• শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১

  • || ০৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

ডিআইজি পার্থ কারাগারে

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৩০ জুলাই ২০১৯  

সিলেটের বর্তমান ডিআইজি (প্রিজন) পার্থ গোপাল বণিকের বাসা থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় করা মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

সোমবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হলে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

তার আইনজীবী গাজী শাহ আলম, মাসুদ আহম্মদ তালুকদার, ফারুক হোসেনসহ আরো অনেকে জামিনের আবেদন করলেও দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল জামিনের বিরোধিতা করায় উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক কেএম ইমরুল কায়েশ জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে রোববার (২৮ জুলাই) সকাল ১০টায় কারা বিভাগের ডিআইজি পার্থ গোপাল বণিককে কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদক কর্মকর্তারা। সেই জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে ওইদিন দুপুর ২টার দিকে তার বাসায় অভিযান চালানো হয়।

দুদকের পরিচালক মুহাম্মদ ইউসুফ ও সহকারী পরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের নেতৃত্বে পার্থর ধানমন্ডির নর্থ রোডের (ভূতের গলি) ২৭-২৮১ নম্বর বাসার বি/৬ নম্বর ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে ৮০ লাখ টাকাসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়।

দুদক পরিচালক মুহাম্মদ ইউসুফ জানান, প্রায় ২ ঘণ্টা পার্থর স্ত্রী ডা. রতন মনি সাহা নানা টালবাহানা করেন। প্রথমে মুঠোফোনে বলেন, তিনি বাসায় নেই। মিরপুরে আছেন। সেখান থেকে ফিরতে ২ ঘণ্টার বেশি সময় লাগবে। অথচ সে সময় তিনি ফ্ল্যাটেই ছিলেন।

দুদক টিম বিকল্প পন্থায় ফ্ল্যাটে প্রবেশের কথা বললে রতন মনি সাহা নিজেই দরজা খুলে দেন। তবে ততক্ষণে ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে পার্থর আয় করা ৮০ লাখ টাকা ২টি ব্যাগে ভরে পাশের বাসার ছাদে ফেলে দেন তিনি। পরে দুদকের টিমের সদস্যরা তাকে নিয়েই ওই টাকা উদ্ধার করা হয়।

এর পর পার্থ বণিকের ঘরের আলমিরা, তোশক, ওয়ারড্রোবসহ বিভিন্ন কক্ষে তল্লাশি করে লুকানো অবস্থায় ৮০ লাখ টাকা পায়। এই টাকা খুঁজে বের করতে কর্মকর্তাদের এক ঘণ্টা সময় ব্যয় হয়। টাকা উদ্ধারের পর তা গুণতে লেগেছে আরো এক ঘণ্টা। কিছু টাকা তিনি বালিশের কভারের ভেতরও রেখেছিলেন।

পার্থ ও তার পরিবারের সদস্যদের দাবি, ৮০ লাখ টাকার মধ্যে ৩০ লাখ টাকা পার্থর শাশুড়ি তাকে দিয়েছেন। আর বাকি ৫০ লাখ টাকা পার্থর বেতনের একটি অংশ। ওই টাকা ব্যাংকে জমা না রেখে বাসায় রেখেছিলেন তিনি।

দুদক পরিচালক মুহাম্মদ ইউসুফ জানান, ৪ হাজার ৬০০ টাকা বেতনে চাকরি শুরু করেছিলেন পার্থ। বর্তমানে সব মিলিয়ে তিনি পান ৬০ হাজার টাকার মতো। তার বাসা থেকে যে টাকা উদ্ধার হয়েছে তা অবশ্যই ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে আয় করা বলে দাবি করেন দুদক পরিচালক।

দুদক জানায়, ডিআইজি পার্থ গোপাল বণিক ২০০২ সালের ২০ জুন জেল সুপার হিসেবে যোগদান করেন। প্রথমে তার পোস্টিং হয় রংপুর। ২০১৪ সালে ডিআইজি (প্রিজন) হিসেবে পদোন্নতি পান। পরে তাকে চট্টগ্রামে বদলি করা হয়। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর তাকে সিলেট বদলি করা হয়।