• রোববার ১২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৮ ১৪৩১

  • || ০৩ জ্বিলকদ ১৪৪৫

কারখানায় কাজ করে ক্যান্সার আক্রান্ত কর্মীরা, ক্ষমা চাইলো স্যামসাং

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৪ নভেম্বর ২০১৮  

বিশ্বব্যাপী ইলেক্ট্রনিক জায়ান্ট হিসেবে পরিচিত দক্ষিণ কোরিয়ার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্যামসাং তার কর্মীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে। গত দশ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত শ্রমিকরা একটি কম্পিউটার চিপ তৈরি করতে গিয়ে ক্যান্সারসহ নানাবিধ রোগে ভুগে প্রাণ হারানোর কারণে কর্মীদের কাছে ক্ষমা চাইলো স্যামসাং।

শুক্রবার স্যামসাংয়ের পক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান প্রতিষ্ঠানটির সেমিকন্ডাকটর বিজনেসের প্রধান কিম কি নাম। তিনি বলেন, ‘আমরা রোগে আক্রান্ত কর্মী ও তাদের পরিবারের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করছি। আমরা তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পারিনি।’

কর্মীদের এরকম স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে কাজ করা বেশ কয়েকটি সংগঠনের অভিযোগ স্যামসাং ইলেক্ট্রনিক্সের চিপ ও ক্রিস্টাল ডিসপ্লে ইউনিটে কাজ করা ৩২০ জন কর্মী ক্যান্সারসহ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত। বিষাক্ত কেমিক্যালের কারণে এখানে কাজ করতে গিয়ে ১১৮ জন কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।

১৯৮৪ সাল থেকে স্যামসাংয়ের কারাখানায় কাজ করা কর্মীরা ক্যান্সার ও গর্ভপাতসহ নানা ধরনের রোগে ভুগছেন। এছাড়া বাবা-মায়ের এরকম সমস্যার কারণে কর্মীদের সন্তানরাও জন্ম কিংবা জীনগত নানা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ২০০৭ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় স্যামসাংয়ে কাজ করা এক কর্মী দীর্ঘদিন ক্যান্সারে ভুগে মারা গেলেও কোম্পানিটির পক্ষ থেকে কোনো ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়নি ওই কর্মীর পরিবারকে।

এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির অনেক কর্মী দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের কাছে এ ব্যাপারে ক্ষতিপূরণ দাবি করে আসছে। তাদের মধ্যে খুব অল্প সংখ্যক কর্মী আদালতের মাধ্যমে বহুদিনের চেষ্টায় সামান্য ক্ষতিপূরণ পায়। কিন্তু বেশিরভাগ কর্মীর ক্ষতিপূরণের আবেদন বাতিল করে দেয় আদালত। কিছু কর্মীর আবেদন এখনও আদালতের বিবেচনাধীন রয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করা অবস্থায় অনেক কর্মী যখন রোগে আক্রান্ত হয়, তখন তাদেরকে কোম্পানির পক্ষ থেকে কোনোরকম সাহায্য করা হয় না। অনেক সময় চিকিৎসার জন্য তাদেরকে নিজেদের সঞ্চয়ের টাকা কিংবা বাড়ি বিক্রি করে চিকিৎসার খরচ জোগাতে হয়। তাছাড়া কিছু কর্মী আজীবনের জন্য কাজ করতে অক্ষম হয়ে যান। তবে চলতি মাসের শুরুতে স্যামসাংয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত কর্মীদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে এক লাখ তিনহাজার পাউন্ড দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়।

বিষয়টি প্রথম আলোচনায় আসে স্যামসাংয়ের কারখানায় কাজ করা ২৩ বছর বয়সী এক নারী লিউকোমিয়া নামে এক রোগে ভুগে মারা গেলে। কেননা বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ওই নারীর ট্যাক্সি চালক বাবা হোয়াং সোয়াং জিকে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে সমঝোতা করার আহ্বান জানানো হলে তিনি তা প্রত্যাখান করেন।