• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা দেওয়া না দেওয়া সরকারের ব্যাপার

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৯ জুন ২০১৯  

গত ৮ মাসে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সড়ক, ড্রেন, সুয়ারেজ, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের জন্য প্রায় সোয়া হাজার কোটি টাকা সরকারী বরাদ্দ পাওয়া গেছে। গাড়ি বিভিন্ন যানবাহন পাওয়া গেছে ২৪টি। আবাসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পানি খাতে আরো প্রায় হাজার কোটি টাকার রাদ্ধ প্রক্রিয়াধীন। বরাদ্ধ পাওয়া সোয়া ৭ হাজার কোটির মধ্যে অর্ধেক টাকার কাজ শুরু হয়ে গেছে।

বাকি কাজের জন্য শিগরিই দরপত্র আহ্বান করা হবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে এসব কাজ বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। তাছাড়া আগামীতে তিনটি আরোও নতুন বরাদ্ধ বর্তমান বরাদ্ধের সাথে যোগ হবে। নির্বাচনের আগে নগরবাসীকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এবং পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক গাজীপুরকে চীনের কুমিন শহরের আদলে ‘গ্রীণ ও ক্লিন সিটি’ হিসেবে সাজানো হবে। সব কাজ শেষ হলে গাজীপুর হবে দেশের প্রথম আলো ঝলমলে স্বপ্নের নগরী। নির্বাচনের এক বছর এবং দায়িত্ব গ্রহণের ৮ মাস পূর্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার নিজ কার্যালয়ে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান গাজীপুরের মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম।

 

৮ মাসের অর্জন সম্পর্কে মেয়র জাহাঙ্গীর বলেন, অনেক পুরাতন সিটি করপোরেশনেরও এখনো অর্গ্রানোগ্রাম নেই। গাজীপুরেরও ছিল না। তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর মন্ত্রণালয় থেকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের অর্গানোগ্রাম অনুমোদন করিয়েছি। এতে নগর ভবনে ৩৯০০ লোকের কর্মসংস্থান হবে। বাড়বে কাজের গতিও। এতদিন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নীতি-নির্ধারনী পর্যায়ের সভায় গাজীপুরকে আমন্ত্রণ জানানো হতো না। এখন গাজীপুর সিটি করপোরেশনকে ওই সভায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গাাজীপুর নগরীতে আগে জোন ছিল ৫টি, তিনি ৩টি বাড়িয়ে ৮টি করেছেন। শিল্প-প্রতিষ্ঠানের টেক্স ২০০৯ সালের আইন অনুযায়ী পুন:তফশীলের উদ্যোগ নিয়েছেন। সব চেয়ে বড় অর্জন ৮ মাসে ৭ হাজার ২২৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার সরকারী বরাদ্ধ পাওয়া। এটি দেশের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড।

 

মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, সম্প্রতি ঢাক উত্তরের মেয়র মন্ত্রী, খুলনা, রাজশাহী ও নারায়নগঞ্জের মেয়রগণ প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রীর মর্যাদা পেয়েছেন। মর্যাদা পেলে কার না ভাল লাগে। মর্যাদা দেওয়া না দেয়া সরকারের ব্যাপার। তবে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা না পেলেও চেষ্টা ও ইচ্ছা করলে পারা যায়, তিনি বরাদ্দ অর্জনের মধ্যে দিয়ে তা প্রমান করেছেন।

 

এ ছাড়াও সিটি করপোরেশন নিয়ে নিজের পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি জানান, ৩২৯ বর্গ কিলোমিটারের গাজীপুর নগরীতে ৪০ লাগের বেশি মানুষ বাস করে। সম্পূর্ণ  অপরিকল্পিতভাবে নগরীটি গড়ে উঠেছে। তিনি এই নগরীকে দেশের সবচেয়ে সুন্দর, আধুনিক এবং মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে চান। কাজটি বেশ দুরুহ। দুরুহটাকেই চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন। মেয়র হওয়ার পর তিনি পৃথিবীর ২০-২৫টি শহর ঘুরে দেখে জেনেছেন ওই দেশের মেয়ররা কিভাবে একটি এলোমেলো, নোঙরা শহরকে আধুনিক শহরে রূপান্তর করেছেন। তাদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে সম্প্রতি চীনের কুমিন শহরের মেয়রের সাথে গাজীপুর নগরীর উন্নয়ন বিষয়ে একটি সহযোগিতা চুক্তি করেছেন। শিগরিই চুক্তির আলোকে কাজ শুরু হবে। ইতিমধ্যে তিনি ব্যক্তি উদ্যোগে নগরীর ৮ থেকে ১৫ ফুটের ১২০টি রাস্তা ৩০ থেকে ৪০ ফুট প্রশস্ত করার কাজ শুরু করেছেন। দিনরাত পরিশ্রম করছেন। সিটি করপোরেশনের একটি টাকাও খরচ করেননি। বরং সাবেক মেয়রের ঋণের ২৪০ টাকা পরিশোধ করেছেন। সময় নষ্ট হবে ভেবে গত ৮ মাসে এক দিনের জন্য পারিবারিক, আত্মীয় এমনকি বন্ধুবান্ধবের কোনো ব্যক্তিগত দাওয়াতে যাননি। ৮ মাসে একটি বেতন-ভাতাও নেননি। ব্যবহার করেন না সিটি করপোরেশনের গাড়ি বা জ্বালানি। নিজের এবং বিভিন্ন কাজে আসা দর্শনার্থীদের আপ্যায়ন খরচ ব্যক্তিগত তহবিল থেকে পরিশোধ করেন। সৎ থেকে কাজ করছেন। কারণ সততা না থাকলে পরিশ্রম করেও সাফল্য আসে না, বরং সব কলংকে সব ঢেকে যায়।