• শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দুর্গোৎসবে প্রস্তুত সাভার ও ধামরাইয়ের ৩৮৯ মণ্ডপ

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৩ অক্টোবর ২০১৯  

মহা পঞ্চমীর মধ্য দিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ও সর্ব বৃহৎ ধর্মীয় সব দুর্গা পূজা। আর পূজাকে ঘিরে সম্প্রদায়টি নানা রকম ব্যস্ততায় সময় পার  করছে। পূজার নানা রকম উপকরণ সংগ্রহে ব্যস্তস্তা বেড়েছে তাদের। ঘনিয়ে এসেছে সময়, তাই দম ফেলানোর ফুরসত নেই প্রতিমা কারীগরদের। রাত দিন জেগে কারীগররা তাদের নিপুণ কারিগরী দক্ষতায় বাহারী রঙ্গের আল্পনায় দেবী দুর্গাকে   যেন জীবন্ত ফুটে তুলেছেন।

 

 

 সাভার ও ধামরাই উপজেলার তথ্য অনুযায়ী, সাভার উপজেলায় গত বছরের তুলনায় ১০ টি মণ্ডপ বেড়ে ১৯২ টি পূজা মণ্ডপে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। যার মধ্যে সাভারে ১১২ টি ও আশুলিয়ায় ৮০ টি মণ্ডপে এই পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ধামরাইয়ে একটি মণ্ডপ বেড়ে ১৯৭টি পূজা মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। তার মধ্যে পৌরসভায় ৪০ টি মণ্ডপে ও ১৬টি ইউনিয়নে অন্যসব পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

সাভারের প্রতিমা শিল্পী সুশান্ত বলেন, ‘আমরা ৫ জন মিলে ১৬ টি মণ্ডপের প্রতিমা সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ নিয়েছি। প্রথমে ভেবেছিলাম ৫ জনই সময়মত কাজ সম্পন্ন করতে পারবো। কিন্তু সময়মত কাজ শেষ করতে হিমশিম খেতে হবে। তাই লোক বাড়িয়ে ৯ জন করেছি। আশা করছি সময়ের আগেই সব কাজ সম্পন্ন করতে পারবো। মাটির কাজ শেষ করে ইতিমধ্যেই রংয়ের কাজও শেষ হয়েছে কিছু মণ্ডপে। অল্প কয়েকটি মণ্ডপে রংয়ের কাজ অর্ধসম্পন্নসহ কাপড় পরানো বাকি আছে।’

আশুলিয়ার নরসিংহপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা সংলগ্ন শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দিরের সভাপতি ভজন কুমার ঘোষ বলেন, ‘তাদের প্রায় সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে, শুধু পেন্ডেল ও আলোকসজ্জা বাকি রয়েছে। আগামী দুই দিনের মধ্যে সব ধনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে বলে জানান তিনি। প্রতিবারের মত প্রশাসনের সহযোগীতায় এবারো সুষ্ঠুভাবে তারা তাদের ধর্মোৎসব যাপন করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।’

এদিকে প্রায় ২’শ বছর ধরে সাভারের আশিক বণিকের পুর্ব পুরুষ থেকে শুরু করে বর্তমান প্রজন্ম পর্যন্ত এই দুর্গোৎসব পালন করছেন। তারা সময়ের দুই একদিনের  আগেই সব আয়োজন সম্পন্ন করে থাকেন। এবারো তার ব্যতিক্রম ঘটে নি। সব ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে এখন শুধু ফুল, নারিকেলসহ পূজার বিভিন্ন উপকরণ  সংগ্রহ করছেন।

এই পূজাকে ঘিরে অনেকেই মণ্ডপের আশেপাশে ইতিমধ্যেই স্টল বরাদ্ধ নিয়ে স্টল সাজানোর কাজও শেষ করেছেন। স্টল মালিক প্রণব ঘোষ বলেন, ‘আমি প্রতি পূজায়  এই স্থানেই স্টল বসাই। এই যায়গায় অন্য কেউ নেওয়ার আগে আমি নিয়ে দোকান দিয়েছি। এখানে বেচা বিক্রি অনেক বেশি হয়। দুর্গোৎসব সব মন্দিরের আশেপাশে  মেলা আলাদা সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয়। সব ধরণের মানুষের আনাগোনায় মুখরিত হয়  মন্দির এলাকা।’

ধামরাই উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নন্দ গোপাল সেন বলেন, ‘এই উপজেলায় প্রায় ১৯৭ টি মণ্ডপ শারদীয় দুর্গোৎসবের জন্যে প্রস্তুত করা হচ্ছে। সকল ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্নের জন্য সকল নেতৃবৃন্দের সাথে মত বিনিময়  সভা করা হয়েছে। সেই সাথে প্রশাসনের ঊর্ধতন কর্মকতার সাথে মত বিনিময় সভা করা হয়েছে। তারা নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করছি নির্বিঘ্নে এই উৎসব আমরা পালন করতে পারবো।’

ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, ‘শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে প্রশাসনিকভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পূজারীদের সাথে মতবিনিময় সভা রা হয়েছে। সব ধরণের বিশৃঙ্খলা এড়াতে প্রতিটি মণ্ডপে নিরাপত্তা ব্যবস্থা  জোড়দার করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পূজা চলাকালীন সময়ে নিরাপত্তার জন্যে আনসার, ভিডিপির একটি করে দল সবসময় নিয়োজিত থাকবে। এ ছাড়া ইউনিয়ন ভিত্তিক টিম করে পূজা মণ্ডপ ও মন্দিরের নিরাপত্তা পুলিশ।’

সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজুর রহমান বলেন, ‘পূজার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি নির্বিঘ্নে এই উৎসব পালন করতে পারবেন এই উপজেলার হিন্দু সম্প্রদায়। তা ছাড়া খুব শীঘ্রই প্রত্যেকটি মন্দিরে সরকারি অনুদান পৌঁছে দেওয়া হবে।’

এ ব্যাপারে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার রাত ৮ টার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার অনুরোধ করেছেন। তিন বলেন, এই উৎসবকে ঘিরে মদ্যপান করলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। নারী-পুরুষ সবার জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।