• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

সবজি দিয়ে শীত বরণ

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৪ ডিসেম্বর ২০১৯  

বর্তমানে কুয়াশার দখলে আবহমান বাংলার গ্রামাঞ্চলের মেঠোপথগুলো। সকাল-সন্ধ্যায় ঘাসের সবুজ গালিচায় বিন্দু বিন্দু শিশির পড়তে শুরু করেছে। চারদিকের এই কুয়াশার উপস্থিতি শীত আগমণের কথাই বলছে। আর এই শীতকে ঘিরে সবজি চাষে ব্যস্ত ধামরাইয়ের সবজি চাষিরা। এ যেন শীতকালীন শাক-সবজি দিয়ে শীতকে বরণ করার কর্মব্যস্ততা।

সবজি চাষিদের উৎপাদিত শাক-সবজি স্থানীয় বাজারগুলোর চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হচ্ছে। এতে কৃষকরা দেখছেন লাভের মুখ আর পূরণ হচ্ছে ঢাকার সিংহভাগ সবজির চাহিদা।

ধামরাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ধামরাইয়ে  মোট ২ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাক-সবজি চাষ করা হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৮ হাজার ১৮৮ মেট্রিক টন।  

এর মধ্যে টমেটো ১২৭ হেক্টর জমিতে ৪ হাজার ১৮৯ মেট্রিক টন, বেগুন ১২১ হেক্টর জমিতে ৪ হাজার ৩২৪ মেট্রিক টন, মুলা ১৫১ হেক্টর জমিতে ৬ হাজার ৬৯৩ মেট্রিক টন, গাজর ৮৭ হেক্টর জমিতে ১ হাজার ২৭ মেট্রিক টন, ফুলকপি ১৭২ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার ২৮৮ মেট্রিক টন, বাঁধাকপি ১০৫ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার ৩৯০ মেট্রিক টন, লাউ ১৬৬ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার ৮৪৮ মেট্রিক টন, মিষ্টি কুমড়া ১৬৭ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার ৯০৮ মেট্রিক টন, শিম ১৫৮ হেক্টর জমিতে ১ হাজার ৩৬৫ মেট্রিক টন, ডাটা ১৬৬ হেক্টর জমিতে ৩ হাজার ৩৬৬ মেট্রিক টন, লাল শাক ১২৩ হেক্টর জমিতে ১৪২০ মেট্রিক টন। এছাড়া করলা, পালং শাক, পুঁই শাক, বরবটি, খিরাই, মুলা শাক, লাউ শাক, শশা ৪৬৪ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে যার উৎপাদন ৯ হাজার ৩৬৫ মেট্রিক টন।  

মঙ্গলবার দুপুরে ধামরাইয়ের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, জমিতে এখন লাল শাক, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, লাউ তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। এছাড়া ভালো দামে সবজি বিক্রি হওয়ায় বেশ লাভও হচ্ছে তাদের।

ধামরাইয়ের গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের বড়নালাই গ্রামের কৃষক জামাল উদ্দিন বলেন, ২ একর জমিতে লাল শাক, মুলা, লাউ, ও লাউ শাক লাগিয়েছি। এতে আমার ৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এরইমধ্যে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকার আগাম সবজি বিক্রি করেছি এবং আরও কিছু সবজি রয়েছে। কিছুদিন পর আবার নতুন শীতকালীন সবজি তুলবো।

ধামরাইয়ের খরাচর এলাকার সবজি চাষি এছাহাক মিয়া বলেন, ১ একর জমিতে ফুলকপি আর লাউ চাষ করেছি। লাউ চাষে আমার খরচ হয়েছে ১৭ হাজার টাকা।
এরই মধ্যে দেড় হাজার লাউ বিক্রি করেছি। প্রতিটি লাউ ৩৫ টাকা দরে ৫২ হাজার ৫০০ দাম টাকা পেয়েছি। আরও লাউ আছে। 

ফুকুটিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা হয় কৃষক সাহাব উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, সবজির চারা রোপণের আগে জমি তৈরি করে কিছুদিন রাখা হয়। এতে কপির চারা রোগ-বালাই প্রতিরোধের ক্ষমতা সঞ্চয় করে এবং গাছগুলো সবল হয়। এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় চারাগুলো নষ্ট হয়নি। ফলে উৎপাদন খরচ কিছুটা কম হয়েছে। 

ধামরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুল হাসান বলেন, এ বছর উপজেলায় ২০৫০  হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরণের সবজি চাষ হয়েছে। সবজি চাষে কৃষকদের সব ধরণের  সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।

 তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঘটেছে। সেগুলো জানার পরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এবার অনেক বেশি শাক-সবজি উৎপাদন হবে। এতে কৃষকরা লাভবানও হচ্ছে।