নিষিদ্ধ গাইড বই’ কিনতে বাধ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীরা
মানিকগঞ্জ বার্তা
প্রকাশিত: ২ ফেব্রুয়ারি ২০২০
প্রতি বছরের মতো এবারও বছরের শুরুতে বিনামূল্যে নতুন বই হাতে পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। তবে পাঠ্যবইয়ের বাইরেও নিষিদ্ধ গাইড বই কেনার জন্য শিক্ষার্থীদের নানাভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। গাইড বইয়ের প্রয়োজন না হলেও প্রতিষ্ঠানের কিছু অসাধু শিক্ষক আর ‘শিক্ষক সমিতি’ নামে এক ধরনের সংগঠনের সিন্ডিকেট নিষিদ্ধ গাইডবই কিনতে বাধ্য করছে শিক্ষার্থীদের। কেজি স্কুল থেকে শুরু করে প্রাইমারি, মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক সবখানেই এ সিন্ডিকেটের লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য চলছে।
সারাবছর দু-একটি করে সৌজন্য সংখ্যার বই দিয়ে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সঙ্গে সমন্বয় রাখেন বিভিন্ন প্রকাশনীর রিপ্রেজেন্টেটিভরা। বছর শেষে শিক্ষক আর সমিতিকে সমন্বয় করিয়ে উপজেলা ভিত্তিক একটি প্রকাশনীর বই চাপিয়ে দেওয়া হয়। বইয়ের গুণগত মান নির্ভর করে ডোনেশনের ওপর। বিনিময়ে সমিতিকে দিতে হয় বড় অংকের অর্থ। প্রকাশনী শিক্ষক সমিতিকে আয়ত্বে নিতে না পারলে শুরু হয় প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের মাধ্যমে বিদ্যালয়ে তাদের প্রকাশনীর বই বুকলিস্টে নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা। সমিতির বাইরের প্রতি স্কুলকে দিতে হয় একটি ন্যূনতম অর্থ বা ফার্নিচার। জেলায় এমন অভিযোগ এখন অহরহ। যার ফলে বইয়ের মূল্য চলে গেছে সাধারণ শিক্ষার্থীর হাতের নাগালের বাইরে।
এ বছরে নতুন উদ্যোমে শুরু হয়েছে নিষিদ্ধ নোট-গাইড বইয়ের অবাধ বাণিজ্য। শিক্ষকদের সহায়তায় অসাধু সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। সরকারিভাবে প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হলেও থামানো যায়নি অবৈধ ওই ব্যবসা। ১৯৮০ সালে বই নিষিদ্ধকরণ আইনে এসব বই ছাপা ও বাজারজাত করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ হলেও সরকার প্রকাশনাকে বন্ধ করতে পারেনি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে শহরের তিনটি লাইব্রেরি থেকে দুই হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে।
অভিযোগ রয়েছে, টাঙ্গাইলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অধিকাংশ শিক্ষক এসব বই বাজারজাতের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ফায়দা হাসিল করছেন। শিক্ষকরা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান মিলে সমিতি করে নির্ধারিত করে দিচ্ছেন- কোন স্কুল কোন গাইড বই ব্যবহার করতে পারবে। শিক্ষার্থীদের ভাষ্য- ক্লাসে বুকলিস্ট দিয়ে নির্দিষ্ট প্রকাশনার নোট, গাইড, গ্রামার ও ব্যাকরণ বই কিনতে বলা হয়। ফলে কিছু করার থাকে না। বাধ্য হয়েই কিনতে হয়।
সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে টাঙ্গাইলের বইয়ের দোকানগুলোতে অবৈধভাবে পাঞ্জেরি, গ্যালাক্সি, লেকচার, অনুপম, জননী, জুপিটার, আদিল, দিকদর্শন, টেন টিচার পাবলিকেশন্সসহ বিভিন্ন প্রকাশনীর ছাপানো নিষিদ্ধ নোট ও গাইড বই ফ্রি-স্টাইলে বিক্রি হচ্ছে। একটি সিন্ডিকেট বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে ম্যানেজ করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছে ভুলে ভরা নিম্নমানের এসব বই। জেলা থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায়ের আনাচে-কানাচে দীর্ঘদিন ধরে নোট ও গাইড বই বিক্রির সিন্ডিকেটের এ বই বাণিজ্য বন্ধে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই প্রশাসনের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টাঙ্গাইল জেলার শত শত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের এক শ্রেণির শিক্ষক ও প্রকাশক এ অবৈধ বইবাণিজ্যে জড়িয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এমন বইয়ে বাধ্য করে শিক্ষার্থীদের ঠেলে দেওয়া হচ্ছে মুখস্থ বিদ্যার দিকে। তাদের সৃজনশীলতা ধ্বংস করা হচ্ছে। মেধা খাটিয়ে পাঠ্যপুস্তক থেকে প্রশ্নের উত্তর ও অন্যান্য বিষয় জানার চেষ্টা করার মধ্যে শিক্ষার্থীকে যে চিন্তা ও মনযোগ দিতে হয়, তাতে তাদের মেধা বিকাশের পথ খুলে যায়। কিন্তু ভুলভ্রান্তিতে ভরা নোট ও গাইড বইয়ে সব কিছু থরে থরে সাজানো থাকায় শিক্ষার্থীদের মেধার প্রকৃত বিকাশ হয় না। আবার সরকার যে সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতি চালু করেছে তাও মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে অবৈধ নোট ও গাইড বই। অনেক শিক্ষক অভিজ্ঞ না হওয়ায়, তারাও নোট ও গাইড বইয়ের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন।
শহরের আকুর-টাকুর পাড়া এলাকার জাহিদুল ইসলাম নামে এক অবিভাবক বলেন, নোট ও গাইড বই শিক্ষার্থীদের মৌলিক শিক্ষাগ্রহণ ও ভিত্তি গঠনের ক্ষেত্রে ভয়াবহ অন্তরায় হয়ে রয়েছে। শিক্ষার্থীদের মুখস্ত বিদ্যার দিকে ধাবিত করে তা তাদের সৃজনশীলতা ধ্বংস করে দিচ্ছে। এসব বইয়ে তাদের মেধা বিকাশের কোনো উপাদান থাকে না। তাই এসব গাইড বই বন্ধের জোর দাবি জানাচ্ছি।
অপর অভিভাবক সালমা বেগম বলেন, স্কুল থেকে দেয়া বইয়ের তালিকায় ‘গাইড বই ও গাইড কোম্পানির নাম’ উল্লেখ থাকে। শিক্ষকদের নির্ধারিত গাইড বই না কিনলে তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। বলতে গেলে শিক্ষার্থীদের তাদের নির্ধারিত কোম্পানির গাইড বই কিনতে বাধ্য করে।
শহরের আশেকপুর এলাকার শিহাব উদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীরা গাইড বই পেয়ে মুখস্ত করা শুরু করে। এতে তাদের সৃজনশীলতার কোনোই চর্চা হয় না। গাইড বই বিক্রি বন্ধে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
দেলদুয়ার উপজেলা কিন্ডার গার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য আবীর আহমেদ জানান, কিন্ডার গার্টেনের কোনো পদে আছি আমি সঠিক বলতে পারবো না, আমাকে অন্যান্য সদস্যরা সমিতিতে রাখছে। গত বছর আমাদের সমিতিতে জুপিটার পাঠ্য ছিলো, অভিযোগ পাওয়ার পর এবছর পাঞ্জেরি পাঠ্য করেছি। টাকার বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন, আমরা অন্য রকম প্রশ্ন করে থাকি। আনসিনের কারণে সহায়ক বইয়ের সুবিধা নিতে হয়। তৃতীয় শ্রেণির ইংরেজি বইতে এমন কিছু প্রশ্ন রয়েছে যা সহায়ক বই ছাড়া পড়ানো সম্ভব নয়। কবিতার প্রশ্নের উত্তরও সহায়ক বই ছাড়া পাওয়া খুব কষ্ট। সহায়ক বইয়ের সহযোগিতা নিয়ে আমরা শিক্ষা কার্যক্রম সুন্দর করতে পারি। গাইড বই পড়ানো আমাদের ভুল হলেও সহায়ক বইয়ের সহযোগিতা নিলে শিক্ষা কার্যক্রম আরও সুন্দর হবে। গাইড বই পাঠ্য করা সম্পূর্ণ বেআইনি বলে তিনি জানান।
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এহসানুল হক সুমন বলেন, আমরা নির্ধারিত কোনো কোম্পানির সহায়ক বইকে পাঠ্য করিনি। যে যেটা পড়ে ভালো মনে করবে সে সেটাই পড়বে।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও বাসাইল উপজেলা শাখার সভাপতি মীর মনিরুজ্জামান বলেন, সমিতি থেকে কোনো গাইড বইয়ের নাম উল্লেখ করা হয়নি। যারা ব্যবসা করে তারা পাঞ্জেরি, অনুপম, গ্যালাক্সিসহ বিভিন্ন গাইডের নাম উল্লেখ করে দেন। বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন গাইড বই কিনছে। এ ছাড়াও বইয়ের তালিকা দেওয়া আছে। বইয়ের তালিকায় কোনো গাইড বইয়ের নাম উল্লেখ নেই। তালিকার বাইরে নেওয়ার সুযোগ নেই। টাকা বিনিময়ে শিক্ষকেরা গাইডবই পাঠ্য করে- এটা সম্পূর্ণ অসত্য।
তিনি আরও বলেন, আমরা নিষিদ্ধ গাইডবই পাঠ্য করার পক্ষে নই। সরকার চাইলে একদিনের মধ্যে বন্ধ করতে পারে। আমাদের ওপরে দোষ চাপালে হবে না।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি (বাকশিস) কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতি আজাহার আলী মিয়া জানান, ‘সহায়ক গ্রন্থ’র নামে বাজারে এখন নোট ও গাইডবই বিক্রি হচ্ছে। সৃশনশীল পদ্ধতিতে গাইডবই গ্রহণযোগ্য নয়। আমি মনে করি এটা শিক্ষকদের নৈতিকতার অবক্ষয়। পাশাপাশি অবিভাবকদেরও সচেতন থাকতে হবে। অন্যদিকে প্রশাসনের তদারকি খুব জরুরি।
- তিন মাদক কারবারি গ্রেপ্তার
- বৃষ্টি ঝড়বে তিন দিন
- চাকরি দেওয়ার মানসিকতা তৈরি করুন: প্রধানমন্ত্রী
- দাপটে চলছে ব্যাটারির রিকশা
- কৃষ্ণাঙ্গ কলেজে বিভক্তি বাইডেনের সমাবর্তন ভাষণ নিয়ে
- ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মাদরাসা ছাত্র হাসপাতালে ভর্তি
- দেশীয় পণ্যের মেলা শুরু আজ
- আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী মাঠে নামছে আজ
- বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে পারে লঘুচাপ
- গয়না নিয়ে মোটরবাইকে পালাল ডাকাতদল
- ট্রফি হাতে লিগ শিরোপা উদযাপন বসুন্ধরা কিংসের
- সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়: নজর রাখছে আবহাওয়া অধিদপ্তর
- সেই ট্রাফিক পুলিশ প্রত্যাহার
- নাগরিকদের কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হন
- কারওয়ান বাজারের আ*গুন নিয়ন্ত্রণে
- সাভারে কু*পিয়ে টাকা ছিনতাই
- রিকশাচালকের পা ভাঙল পুলিশ
- ট্যানারি সাভারে নেয়ায় জটিলতা বেড়েছে
- টানা বৃষ্টির আভাস
- ছেলেকে আপনাদের হাতে সঁপে দিলাম
- বিলবোর্ড দুর্ঘটনায় নিহত কার্তিক আরিয়ানের ২ স্বজন
- কুকি-চিনের আকিম বম গ্রেফতার
- হেরোইনসহ আটক ২
- প্রবীণ সাংবাদিকের পাশে দাঁড়ালেন চেয়ারম্যান
- কুমিল্লায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫
- ইসরাইলের সামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হিজবুল্লাহর
- হিমাগারে মিলল ২১ লাখ ডিম
- মালদহে বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু
- শিকলে বেঁধে নির্যাতন, আসামি গ্রেপ্তার
- ইন্স্যুরেন্সের গ্রাহকদের টাকা না দেয়ায় মানববন্ধন
- আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের ২৮৮ বিজিপি-সেনাকে হস্তান্তর
- তীব্র গরমে স্কুলের সাত শিক্ষার্থী অসুস্থ
- একই গাড়ির চাপায় চালক ও সহকারীর মৃত্যু
- প্রাবোওকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করল ইন্দোনেশিয়া
- সাভারে ফের উপজেলা চেয়ারম্যান রাজীব
- আমাদের সব স্বপ্ন নষ্ট হয়ে যাবে বৃষ্টি না হলে
- তৈফিক ইমরোজ খালিদীর বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট
- স্ত্রীকে কু*পি*য়ে জ*খ*ম করল পাষণ্ড স্বামী
- সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাচন স্থগিত
- হেলে পড়ার ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি
- জাতিসংঘে বাংলাদেশের ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজ্যুলেশন গৃহীত
- বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ৩ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে
- অস্ত্রসহ মাদক কারবারি চক্রের হোতা গ্রেপ্তার
- ডিএমপির মাদকবিরোধী অভিযান
- কাজ না করেই সমাপ্তির সাইনবোর্ড
- ১৩ কিমি ধাওয়া করে মোটরসাইকেল উদ্ধার
- সাভার ও গাজীপুরে দুটি ওয়াইজ-২০২৪ অনুষ্ঠিত
- হজযাত্রীদের সেবায় আশকোনায় কাজ করবে ঢাকা উত্তর সিটি
- সেনাপ্রধান: সেনাবাহিনী দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা পালন করছে
- লবণবাহী ১৬ ট্রলার ডুবে নিখোঁজ ৭২