• সোমবার ২০ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩১

  • || ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

টমেটোর বাম্পার ফলন

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার চরাঞ্চলে এক সময় চাষ হতো তামাকের। এখন চাষিরা তামাক চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে ঝুঁকেছেন টমেটো চাষের দিকে। টমেটো শীতকালীন সবজি হলেও এখন এখানে শীত থেকে বসন্তকাল পর্যন্ত প্রচুর টমেটো উৎপাদিত হয়। এখানকার উৎপাদিত টমেটো স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের নানা প্রান্তে যাচ্ছে। এ বছর নাগরপুর উপজেলায় ৮৫ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছে। কিন্তু ক্রমাগত শৈত্যপ্রবাহের ফলে টমেটো পাকতে দেরি হওয়ায় এখন চাষিরা অধিক মুনাফার লোভে গাছ থেকে কাঁচা টমেটো ছিঁড়ে মেডিসিন দিয়ে পাকিয়ে বাজারজাত করছে।

উপজেলার মোকনা ইউনিয়নের বেটুয়াজানী গ্রামের সফল চাষি পাগলা। তার মতো করিম শেখ, সবুর মিয়া, মোতাসিম, শহীদুল, জয়েদ আলীসহ আরো অনেকে টমেটো চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন। টমেটো ছাড়াও ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, বেগুনসহ নানা রকমের শীত ও গ্রীষ্মকালীন সবজির চাষ করছেন নাগরপুরের চাষিরা।

পাগলা মিয়া বলেন, আমরা এক সময় ধলেশ্বরী নদীর চরাঞ্চলে তামাক চাষ করতাম। কিন্তু এখন উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ও পরামর্শে আমরা বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করছি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চাষি বলেন, ফলনের প্রথম দিকে টমেটোর ভালো দাম পেলেও শেষের টমেটোর দাম প্রতিকেজি ৫-৭ টাকায় নেমে যায়। এজন্য আমরা বেশি লাভের আশায় মেডিসিন দিয়ে টমেটো পাকিয়ে বাজারে বিক্রি করছি। যদি টমেটো বা সবজি রাখার সংরক্ষণাগার থাকত তা হলে আমাদের এগুলো পচে নষ্ট হতো না। আমরা আরো ভালো দাম পেতাম।

চাষি শহীদুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন বীজ কোম্পানির পরামর্শ ও উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায়, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি নিয়ে তারা জৈব সার ও সেক্সফোরমেন ট্র্যাপ ব্যবহার করে নিরাপদ সবজি উৎপাদন করছেন। বর্তমানে কয়েক একর জমিতে টমেটো ও সবজি চাষ করছেন। কিন্তু এবার ফলন ভালো হলেও শৈত্যপ্রবাহের কারণে টমেটো পাকতে দেরি হচ্ছে। ফলে ভালো দাম পাওয়া নিয়ে আমরা চিন্তিত।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, টমেটো সোলানেসি পরিবারের লাইকোপার্সিকগনের অন্তর্ভুক্ত কোমল ও রসালো সবজি। আমাদের দেশে টমেটোকে বিলাতি বেগুনও বলা হয়। এতে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-সি রয়েছে। টমেটোতে লাইকোপেন নামে বিশেষ উপাদান রয়েছে বলে এটা ফুসফুস, পাকস্থলী, অগ্ন্যাশয়, কোলন, স্তন, মূত্রাশয়, প্রোস্টেটসহ ইত্যাদি অঙ্গের ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক।

এ বিষয়ে নাগরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল মতিন বিশ্বাস বলেন, আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি কীভাবে মেডিসিন ছাড়া প্রাকৃতিক উপায়ে টমেটো পাকানো যায়। এর বাইরে ঢাকা ও টাঙ্গাইলের নিরাপদ সবজি বিক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের কাছে কৃষকদের উৎপাদিত মেডিসিন ছাড়া টমেটো সরবরাহের ব্যবস্থা করছি, যাতে কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পায়।