• সোমবার ২০ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩১

  • || ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

শুরু হলো খুলনা জেলা স্টেডিয়ামের নতুন যাত্রা

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৫ এপ্রিল ২০১৯  

দীর্ঘ পাঁচ বছর পর খুলনা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেটের ম্যাচ দিয়ে নতুন যাত্রা শুরু করল  খুলনা জেলা স্টেডিয়াম। দীর্ঘ দিন পরিত্যক্ত থাকার পর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অর্থায়নে স্টেডিয়াম টি পুনঃনির্মান করা হয়।

সোমবার সকালে খুলনার ক্রীড়াঙ্গনের আতুরঘর খ্যাত এ স্টেডিয়ামটি পুনরায় যাত্রা শুরু করলো। প্রায় পাঁচ বছরও খুলনা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগও অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকালে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে খুলনা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট ও পুন:নির্মিত খুলনা জেলা স্টেডিয়ামের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী এ ম্যাচের স্বাক্ষী হলো খুলনা পঞ্চবীথি ক্রীড়া চক্র ও রেডসান ক্লাব।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, এ মাঠ উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে খুলনা বাসীর দীর্ঘদিনের দুঃখ দুর হতে যাচ্ছে। খুলনা স্টেডিয়ামের গ্যালারির একটি অংশ এখনও বাকি আছে। সেটিও দ্রুততম সময়ে কাজ শুরু হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।


এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক শেখ সোহেলের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও ব্যস্ততার জন্য তিনি আসতে পারেননি। তবে তার বিশ্বস্ত মাধ্যম থেকে ডেইলি বাংলাদেশকে জানানো হয়, খুলনার ক্রীড়াঙ্গনের সাথে তিনি অতিতে ছিলেন এবং সব সময় সাথে থাকবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ২৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম মওলা শানু সহ অন্যান্য আরো ওয়ার্ড কাউন্সিলররা, খুলনা জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও ক্রীড়ামোদী ব্যক্তিবর্গ।

জেলা স্টেডিয়ামের মাঠ সংস্কার কমিটির সম্পাদক সুজন আহমেদ মাঠ সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করে খেলার উপযোগী করতে পারায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, দেশের ক্রীড়াঙ্গনে খুলনার অবদান সবসময়ই উপরের দিকে থাকে। তবে মাঠটি না থাকায় দীর্ঘদিন স্থানীয় কোন খেলা আয়োজন করা যায়নি। এখন নতুন করে তৈরী হওয়া এ স্টেঢিয়ামটি আবারও খুলনার ক্রীড়াঙ্গনের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনবে।

 খুলনা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক কাজী শামীম আহসান বলেন, বেশ কয়েক বছর খেলা আয়োজন করতে পারিনি। মাঠ সমস্যাসহ নানা প্রতিকুলতা ছিলো ক্রিকেট লীগ আয়োজনে। তিনিও প্রত্যাশা করেন, আজ থেকে শুরু হলো, সেটা তার ধারাবাহিকতা ধরে রাখবে। আর এর মাধ্যমে খুলনার ক্রিকেটসহ খেলাধুলার সার্বিক উন্নতি হবে। ত্রীড়াঙ্গনে খুলনার যে সুনাম সেটাও আবার ফিরে পাবে।

এ সময় খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের ক্রীড়া সম্পাদক ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র, ২৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলী আকবর টিপু বলেন, জেলা স্টেডিয়াম হলো খুলনার খেলার একটা ঐতিহ্য। এখান থেকে অনেক বড় বড় খেলোয়াড় বেড় হয়েছেন। খুলনার আওয়ামী লীগের সকল সিনিয়র নেতারা বারবার মিটিং করেছেন এই ব্যাপারে। আজ তা সফল হলো। এই স্টেডিয়ামে ক্রিকেট ও ফুটবল দুইটাই প্রাধান্যতা পাবে। আজ খুলনার ক্রীড়ামোদী সকল মানুষ খুশি। আশা করা যায় আবারো খুলনা থেকে আরো অনেক বড় বড় খেলোয়াড় বেড় হবেন। 

সিনিয়র ডিভিশন ক্রিকেট খুলনার সব থেকে বড় ক্রিকেট আয়োজন। এখানে প্রিমিয়ার ডিভিশনে ৮টি ও প্রথম বিভাগে ৮টি দল অংশ গ্রহণ করে।

অবকাঠামো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ২০১৪ সালে খুলনা জেলা স্টেডিয়াম ভেঙে ফেলা হয় । জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ওই বছরই স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজ শুরু করে। এ কাজে মোট ১১ কোটি ১৪ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়। এ বরাদ্দ ব্যয়ে স্টেডিয়ামের ৬০০ ফুট গ্যালারি ও প্যাভিলিয়ান ভবন নির্মাণ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। একই বরাদ্দে মাঠ সংস্কারের কথা থাকলেও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নিয়োগকৃত ঠিকাদার মাঠ সংস্কার করেনি। পরে খুলনা জেলা ক্রীড়া সংস্থা নিজস্ব অর্থায়নে এ মাঠ সংস্কার করে।


তবে জেলা স্টেডিয়াম পুনঃনির্মাণ সহজ ছিল না। অনেক বাধা পেরিয়ে স্টেডিয়াম এখন খেলার উপযোগী। ২০১৪ সালে জেলা স্টেডিয়াম ভেঙে ফেলা হয়। যা ২০১৬ সালের মধ্যে নতুন করে তৈরি করার কথা ছিল। কিন্তু সে কাজ শেষ হয় ২০১৭ সালে। মাঠ সংস্কার না করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চলে যাওয়ায় জেলা স্টেডিয়াম নিয়ে তৈরি হয় নতুন জটিলতা। পরবর্তীতে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের সহায়তায় ও নিজস্ব অর্থায়নে এই মাঠ তৈরি করে জেলা ক্রীড়া সংস্থা। মাঠ তৈরিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি)। বিসিবি জেলা স্টেডিয়ামে দু’টি উইকেট তৈরি করে দেয়।