• শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

পুলিশে চাকরি ১০৩ টাকায়

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৮ জুলাই ২০১৯  

জামালপুরে ১০৩ টাকা খরচ করে দিনমজুর-রিকশাচালক, আইসক্রিম ও ভ্রাম্যমাণ সবজি বিক্রেতার ছেলে-মেয়েরা পুলিশে চাকরি পেয়েছেন। 

শনিবার রাতে জামালপুর পুলিশ লাইন্সে পুলিশ কনস্টেবল পদে চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হয়। এই নিয়োগে প্রার্থীদের চাকরি পেতে শুধু ১০০ টাকা ব্যাংক ড্রাফটসহ ১০৩ টাকা খরচ হয়েছে। 

এদিন মাইকে ফলাফল ঘোষণার সময় মা-বাবা ও স্বজন ছাড়াও নিয়োগকর্তা এসপিকে জড়িয়ে ধরে অঝোরে কাঁদেন চূড়ান্ত নির্বাচিতরা। ৭১ জনের নাম ঘোষণার পর তাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান জামালপুরের এসপি মো. দেলোয়ার হোসেন। এ সময় তারা আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে পড়েন। 

এ সময় পুলিশ সদর দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। ইসলামপুরের পূর্ব বাহাদুরপুর গ্রামের মিনারা জানান, তার বাবা মনোয়ার একজন দিনমজুর। মা অন্যের বাড়িতে ঝি-র কাজ করে। জামালপুর জেলার পুলিশ লাইন্সে যাতায়াতের খরচ তার কাছে ছিল না। তার এক বান্ধবীর কাছ থেকে ২৫০ টাকা ধার করে এখানে এসেছেন। তার চাকরি পাওয়ার বিষয়টি তিনি এখনো বিশ্বাস করতে পারছেন না। 

সরিষাবাড়ী উপজেলার হাবিবা জান্নাত বলেন, তার বাবা দিনমজুর। অন্যের খেত-খামারে কাজ করেই কোন রকমে চলে সংসার। তিনি গ্রামের ছোট ছেলে-মেয়েদের প্রাইভেট পড়িয়ে লেখাপড়ার খরচ চালিয়েছেন। 

একই উপজেলার ডোয়াইল গ্রামের আফরোজা বলেন, তার বাবা রিকশা চালায়। নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে বাবাকে একটি ব্যবসা গড়ে দেয়ার ইচ্ছে ছিলো। আল্লাহ তার আশা পূরণ করেছে বলে জানান তিনি।

জামালপুরে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষায় ৭১টি পদ ছিলো। দুই হাজার প্রার্থী ১ জুলাই প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষায় অংশ নেয়। শারীরিক যোগ্যতার ভিত্তিতে ৫২২ জন প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়। ২ জুলাই লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ১৮৫ জন। একই দিন মৌখিক পরীক্ষাও নেয়া হয়। এতে ৭১ জন উত্তীর্ণ হয়। 
 
জানা গেছে, তিন সদস্যের এ নিয়োগ বোর্ডের প্রধান ছিলেন জামালপুরের এসপি মো. দেলোয়ার হোসেন পিপিএম বার ও বিপিএম। বোর্ডের সদস্য ছিলেন পুলিশ সদর দফতরের এসপি মো. কামরুজ্জামান ও অতিরিক্ত এসপি মো. ইশতিয়াক আহমেদ। 

নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, মেধা-যোগ্যতা ও শততার ভিত্তিতে এই নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষের কাছে পুলিশের আস্থা বাড়াতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা ছিলো।