• শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ২ ১৪৩১

  • || ০৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

কখনও ফিরে আসবে না রিফাত, উফ এত কষ্ট!

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০১৯  

নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফের জন্মদিন ছিল বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর)। রিফাত চলে গেলেও তার স্মৃতি আকড়েই বেঁচে আছেন বাবা দুলাল শরীফ, মা ডেইজি বেগম ও বোন ইসরাত জাহান মৌ।
 

জন্মদিনে রিফাতের ছোটবেলার ছবি শেয়ার করে বাবা দুলাল শরীফ তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমি যখন বাজারে আসতাম তখন রিফাত আমার পেছনে পেছনে দৌড়াত- আর বলতো আব্বু আমাকে নিয়ে যাও, আমাকে নিয়ে যাও। আমি তোমার সঙ্গে যাব। আমি তখন রিফাতকে ফাঁকি দিয়ে বাজারে আসতাম। আজ রিফাত আমাদেরকে ফাঁকি দিয়ে চলে গেল। সেখান থেকে আর কখনও ফিরে আসবে না। উফ এত কষ্ট। আল্লাহ যেন এ কষ্ট সইবার তৌফিক দান করেন, আমিন।’

১৯৯৪ সালে ১৭ অক্টোবর রোববার রাত ১১টা পাঁচ মিনিটে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করে রিফাত।

এদিকে রিফাতের জন্মদিনে ছোটবেলার ছবি আপলোড করে একমাত্র বোন ইসরাত জাহান মৌ ভাইয়ের ভালোবাসা স্মরণ করে আপ্লুত হয়েছেন।

ভাইকে স্মরণ করে ভাই-বোনের ছোটবেলাসহ বিভিন্ন সময়ের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে মৌ লিখেছেন, ‘শুভ জন্মদিন ভাইয়া। চার মাস আগে এই দিনটা নিয়ে অনেক প্ল্যান করছিলাম। কিন্তু আল্লাহ কবুল করল নারে ভাইয়া। ভাবছিলাম এবার এই দিনটা মনে করব না। কিন্তু আম্মুর জন্য পারলাম না। সকালে নামাজের পর তোর কবরের কাছ থেকে এসে বলে, তোর ভাইয়ার আজ জন্মদিন।’

মৌ আরও লিখেছেন, ‘শেষ পর্যন্ত তোকে ভুলে থাকতে পারলাম না আমরা। ভাইয়া তোর হাসিটা ছিল আমাদের ভালো থাকার কারণ। ছোটবেলা যদি ফুরিয়ে না যেত, কতই না ভালো হতো। তাইনা রে ভাইয়া। অনেক অনেক দোয়া করি, আল্লাহ যেন তোকে জান্নাতুল ফেরদৌসে রাখেন। বাবা-মা আল্লাহর কাছে চলে গেলে সন্তান এতিম হয়ে যায়। আর ভাই আল্লাহর কাছে চলে গেলে বোন হতভাগা হয়ে যায়, তাই নারে ভাইয়া?’

‘আমি এখন সেই হতভাগাদের দলে। পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র ভালোবাসা ভাই-বোনের ভালোবাসা। সেই সম্পর্ককে কিছু মানুষরূপী জানোয়ার ইতি টেনে দিল। ভালো থাকুক পৃথিবীর সব ভাই-বোন। দোয়া করি আল্লাহর কাছে- যেন তাদের এভাবে কখনো কেউ আলাদা না করে দেয়’ লিখেছেন মৌ।

গত ২৬ জুন সকাল সোয়া ১০টায় বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখসহ পাঁচ-ছয় জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

গত ১ সেপ্টেম্বর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। একই সঙ্গে রিফাত হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। গত ৩ অক্টোবর বরগুনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী এ মামলার পলাতক আট অভিযুক্তের মালামাল জব্দের নির্দেশ দেন। এ মামলায় পলাতক রয়েছেন মো. মুসা (২২) ও মো. নাইম (১৭)।