• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

জ্বীনের বাদশাকে দিয়ে দেন পেনশনের ২৫ লাখ টাকা!

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৬ ডিসেম্বর ২০১৯  

সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করে পেনশনের সব টাকা ব্যাংকে জমা রেখেছিলেন। জমা রেখেছিলেন মোটা অংকের এফডিআরও।  কিন্তু অবলিলায় বিশ্বাস করে ২৫ লাখ টাকা দিয়ে দেন জ্বীনের বাদশাদের।  অবশেষে ওই নারী দ্বারস্থ হন রাজধানীর হাতিরঝিল থানায়। মামলা করেন ভুক্তভোগী শাহিনা আক্তার। মামলার তদন্ত করতে গিয়ে সিআইডির একটি টিম ভোলা থেকে জ্বীনের বাদশার ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিআইডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভা‌গের এসএস মোস্তফা কামাল।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. সুমন ফকির , মো. মুনসুর আহমেদ, মো. হাছনাইন ফকির, মো. হাবিবুল্লাহ, মো. লোকমান ভুইয়া কাজী, মো. রিয়াজ উদ্দিন (বিকাশ এজেন্ট) ও মো. ফজর আলী।

বিশেষ পুলিশ সুপার মোস্তফা কামাল বলেন, ভুক্তভোগী শাহিনা আক্তার কোন একটি মাধ্যমে জ্বীনের বাদশার নাম্বার পান। যে নাম্বারে ফোন দিলে সব সমস্যার সমাধান করে দেয়া হবে।

তিনি আগ্রহ নিয়ে ওই নাম্বারে ফোন করেন এবং ফোনে তাকে বলা হয়, আমাদের সেবা নেয়ার আগে দুই হাজার ১০০ টাকা দিয়ে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে।

শাহিনা আক্তার তাদের কথামতো রেজিস্ট্রেশন করেন। রেজিস্ট্রেশন করার পর জ্বীনের বাদশা টেলিফোনেই হাজির হন। হাজির হওয়ার পরে ভুক্তভোগীর সমস্যার কথা শোনেন এবং প্রতিটি সমস্যা সমাধানের জন্য মোটা অংকের টাকা দাবি করেন।

তিনি বলেন, টাকা দাবির পর ৭টি বিকাশ নম্বর ভুক্তভোগীকে দেয়া হয়। ৭টি নম্বরে বিকাশের মাধ্যমে ৩ মাসে ভুক্তভোগী ওই নারী ২৫ লাখ টাকা লেনদেন করেন।

২৫ লাখ টাকা দেয়ার পর আরো টাকা দেয়ার জন্য পাশের বাসার প্রতিবেশীর কাছে টাকা ধার চাইতে গেলে বিষয়টি তখন ওই নারীর ছেলে জানতে পারে।

এরপর হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন। হাতিরঝিল থানার মামলা তদন্ত করে জ্বীনের বাদশার সন্ধায় পাওয়া যায় ভোলা জেলায়। এরপর তাদের গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিকভাবে জ্বীনের বাদশা সেজে টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেছে। এমনকি তাদের চক্রের বড় ভাইয়েরা আছে। তাদেরকেও গ্রেফতার করতে অভিযান চালানো হবে। আমরা বিকাশ স্ট্যাটমেন্ট নিয়ে এসেছি সেখানে দেখা যায় এই নারী ছাড়াও আরো চার পাঁচজনের টাকা নেয়ার তথ্য আমরা পেয়েছি।

যেহেতু বড় ধরনের লেনদেন হয়েছে সেহেতু বিকাশের কোনো কর্মকর্তা এর সঙ্গে জড়িত কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতার সাত জনের মধ্যে একজন বিকাশ এজেন্টের লোকও আছে।

মোটা অংকের টাকা লেনদেন হওয়াতে বিকাশ তাদের দায় দায়িত্ব এড়াতে পারে না। এর বাইরেও যদি আর কেও জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।