• সোমবার ২০ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩১

  • || ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

পাবনায় দুই বোনের আকস্মিক মৃত্যু

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

সাথী ও বিথী ফরিদপুর উপজেলার হাদল ইউপির কালিকাপুর গ্রামের শহীদ প্রামাণিকের মেয়ে। সাথী খাতুন অষ্টম শ্রেণির ও বিথি চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। 

খাদ্যে বিষক্রিয়া অথবা অজানা কোনো ভাইরাসে তাদের মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা করছেন তারা। 

এছাড়া একই উপসর্গ নিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় ওই গ্রামের তাসলিমা খাতুন ও রেশমা খাতুন নামে দুই গৃহবধূ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য রোববার একটি মেডিকেল টিম গঠন করেছেন। 

 

 

নিহত ও অসুস্থদের পরিবারের সদস্যরা জানান, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে সাথী ও বিথী। এরপর তারা কিছুক্ষণ পর পর বমি শুরু করে। বিথীর অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরই মধ্যে শুক্রবার রাতে সাথী নিজ বাড়িতে এবং শনিবার সকালে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে বিথী মারা যায়।  

এ দিকে স্থানীয়রা জানান, একই গ্রামের তাজ প্রামাণিকের স্ত্রী তাসলিমা খাতুন ও ফজলুল হকের স্ত্রী রেশমা খাতুন নামে দুই গৃহবধূ একই ধরনের উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ পড়েছেন। অসুস্থ হওয়ার পরে তারাও একাধিকবার বমি করেন বলে তাদের স্বজনরা জানান।

পরিবারের সদস্যরা তাদেরকে প্রথমে ফরিদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় শনিবার সন্ধ্যায় ওই দুই গৃহবধূকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন চিকিৎসকরা।

সাথী ও বিথীর মা সুফিয়া খাতুন বলেন, ‘মেয়ে দুটি আমাকে রাতে ডাকল বমি করছি মা উঠ। উঠে দেখি বমি করে মেয়ে দুটো অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বড় মেয়ে মারা গেছে বাড়িতে আর ছোট মেয়ে মারা গেছে হাসপাতালে। কি কারণে মারা গেছে কিছুই বুঝতেছিনা।

 

 

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অসুস্থ দুই গৃহবধূ জানান, পেট ব্যথা, বমি বমি ভাব ও ঘাড় অবশ হয়ে আসার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তারা।

তবে দুইবোনের আকস্মিক মৃত্যু সম্পর্কে সঠিক কোনো কারণ নিশ্চিত করে বলতে পারেননি চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, কি কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।  

ফরিদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর আরএমও ডা. লুলু ওয়াল মারজান বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় মেডিকেল টিমের সদস্য হিসেবে কাজ করছি। যে দুইজন মেয়ে মারা গেছে তাদের বিষয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। পরে হয়ত মৃত্যুর কারণ জানাতে পারব। 

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. সালেহ্ মুহাম্মদ আলী বলেন, একজন পেটের ব্যথা নিয়ে এসেছে। তিনি এখন ভালো আছেন, খাওয়া দাওয়াও করছেন। তিনি এখন বাড়ি চলে যেতে পারছেন। আরেকজন হঠাৎ করে জ্ঞান নাই এমন হয়ে এসেছিলেন সার্বিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তার কিছু সমস্যা পেয়েছি। পরীক্ষা রিপোর্ট আসার পরে নিশ্চিত হয়ে রোগ সনাক্ত করতে পারব।

বিষয়টি জানার পর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশে ফরিদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’র ছয় সদস্যের একটি মেডিকেল টিম রোববার ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

ফরিদপুরের ইউএনও আহম্মদ আলী জানান, দুই বোনের মৃত্যু সংবাদ স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছ থেকে জেনেছি। তাদের মৃত্যু হয়েছে কিভাবে তা খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। 

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. আকসাদ আল মাসুর আনন জানান, স্বজনরা জানিয়েছেন, ঝাল মুড়ি খাওয়ার পরে দুই বোন অসুস্থ হয়ে পড়ে। খাদ্যে বিষক্রিয়া বা অজানা কোনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সাথী-বিথীর মৃত্যু হতে পারে বলে তারা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন।