• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

ইজতেমার তারিখ ঠিক হবে ভোটের পর

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২ ডিসেম্বর ২০১৮  

তাবলিগ জামাতের দিল্লি মারকাজ এবং দেওবন্দ মাদ্রাসার অনুসারী দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার পর টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠ এবং মাঠের পাশের মসজিদ ও মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

বিবাদমান পক্ষ দুটির সঙ্গে বৈঠক করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, বিশ্ব ইজতেমার তারিখ ঠিক করা হবে আগামী ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর।

শনিবার দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষের পর সন্ধ্যায় সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দুই পক্ষের মুরুব্বিদের নিয়ে বৈঠকে বসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল।

সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, নির্বাচনের আগে ইজতেমা মাঠে কোনো সভা সমাবেশ হবে না। কোনো পক্ষেই এই সময়ে ময়দানে অবস্থান করতে পারবে না। ইজতেমার তারিখ ঠিক হওয়ার আগ পর্যন্ত মাঠ থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে।আর মাঠের পাশের মসজিদ এবং মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রণ শনিবার থেকেই স্থানীয় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে।

ওই বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু বলেন, “নির্বাচনের পর ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ হবে। হতাহতের ঘটনায় সঠিক তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন।”

তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের নেতৃত্বের কোন্দলে জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব গত মাসে স্থগিত করা হয়। দেওবন্দপন্থিদের আবেদনে নির্বাচন কমিশন শুক্রবার এক আদেশে ৩০ ডিসেম্বর ভোটের আগে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে সব ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ করে একটি নির্দেশনা জারি করে।

দিল্লি মারকাজের মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা এর মধ্যেই পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমা করার ঘোষণা দিলে দেওবন্দপন্থি মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা দিন কয়েক আগে ইতজেমা মাঠ দখল করে আশপাশে পাহারা বসায়। এ অবস্থায় মাওলানা সাদের অনুসারীরা শুক্রবার ময়দানে ঢুকতে না পেরে আশপাশের মসজিদে অবস্থান নেন।

শনিবার ভোর থেকে সাদের অনুসারী শত শত মানুষ ঢাকার দিক থেকে টঙ্গীর পথে রওনা হলে পরিস্থিতি বিস্ফোন্মুখ হয়ে ওঠে। বিমানবন্দর সড়কসহ টঙ্গীর পথের বিভিন্ন স্থানে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে বিমানবন্দর সড়কের এক দিকে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি মো. কামাল হোসেন জানান, জোড় ইজতেমায় যোগ দিতে আসা লোকজন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ময়দানের ফটকের তালা ভেঙে এবং সীমানা প্রচীর টপকে ভেতরে ঢুকে পড়লে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এ সময় দুই পক্ষের লোকজন বাঁশ ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

সংঘর্ষের মধ্যে দুই পক্ষ থেকেই বৃষ্টির মত ঢিল ছোড়া হয়। সেই ঢিল আর লাঠির আঘাতে উভয়পক্ষের দুই শতাধিক মানুষ আহত হন, নিহত হন একজন।

পরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। গাজীপুরের মেয়র ও পুলিশ কমিশনার তাবলিগের দুই পক্ষের মুরুব্বিদের নিয়ে মাঠের ভেতর বৈঠক করে আধা ঘণ্টার মধ্যে সবাইকে মাঠ ছেড়ে দিতে বলেন। দুই পক্ষের লোকজন ওই এলাকা ত্যাগ করার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে।