• শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

কাজ-কর্মে মানুষের যে মনোভাব পোষণ করা জরুরি

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারি ২০১৯  

প্রকৃত মুমিন মুসলমান তার পাপকে এমন মনে করে যে, সে যেন একটি পাহাড়/পর্বতের তলদেশে বসে আছে আর মনে হয় সে পাহাড় কিংবা পর্বত তার ওপর ধ্বসে পড়ছে।

আর যে ব্যক্তি প্রকাশ্যে চিন্তাহীনভাবে গোনাহ বা পাপে নিমর্জিত থাকে, সে ব্যক্তি পাপকে মনে করে যেন একটি মাছি তার শরীরে বসেছিল, আর তা সে (উড়ায়ে) দূর করে দিয়েছে। অর্থাৎ এ ব্যক্তি গোনাহ বা পাপকে কোনো পরোয়াই করে না।

অথচ মানুষের এ বিষয়টি উপলব্দি করা প্রয়োজন যে, দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি কাজ ও কর্মে সে কেমন মনোভাব পোষণ করবে। পাপের শাস্তির ভয় যেমন পাপের গুরুত্বের অনুরূপই হওয়া উচিত আবার রহমতের আশাও তেমনি তার গুরুত্ব অনুযায়ী হওয়া উচিত। আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন-

‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তার সঙ্গে অংশীদার সাব্যস্ত করার অপরাধ ক্ষমা করবেন না। আর তা ব্যতিত যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন।’

এ ঘোষণার পরও ওলামায়ে কেরাম বলেন, কোনো ব্যক্তিই তার আমল বা বুজুর্গী দ্বারা নাজাত লাভ করতে পারবে না। বরং যার প্রতি আল্লাহর রহমত বা দয়া নাজিল হবে, সে ব্যক্তিই নাজাত লাভ করবে। এ কারণে প্রত্যেকেরই উচিত আল্লাহর রহমতের আশা করা ও তার অবাধ্যতার গোনাহের ভয় করা। আর এর মাঝেই নিহিত রয়েছে মুমিনের প্রকৃত ঈমান। হাদিসে এসেছে-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক তরুণ সাহাবির অন্তিম মূহূর্তে তার কাছে গমন করেন। প্রিয়নবি সে সাহাবিকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কেমন অবস্থায় আছ?

সাহাবি আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আল্লাহ তাআলার রহমতের আশা করছি আর নিজের পাপসমূহ সম্পর্কে ভয় করছি।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘যে বান্দার (অন্তিম শয্যায়) মনে এ উভয়টি (আশা এবংভয়) বিদ্যমান থাকে, মহান আল্লাহ তাআলা তার আশা বাস্তবায়িত করেন এবং ভয়ের বিষয় হতে নিরাপদ করে দেন।’

উল্লেখিত কুরআনের আয়াত এবং হাদিসের আলোকে বুঝা যায় যে, আল্লাহর রহমতের আশা এবং তার অবধ্যতার পাপসমূহের ভয় অন্তরে থাকলে আল্লাহ অবস্থা অনুযায়ী বান্দার ফয়সালা করবেন।

মুমিন বান্দা যদি জীবনে প্রতি কাজে মহান আল্লাহর রহমতের আশা এবং অন্যায় কাজে ভয় পোষণ করেন তবে জীবনের অন্তিম মূহূর্তে মৃত্যু শয্যায় ঈমানি মৃত্যু লাভ করবেন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআন সুন্নাহর বিধান অনুযায়ী নিজেদের পরিচালিত করতে তার রহমতের আশা করার পাশাপাশি নিজেদের জানা-অজানা গোনাহের ব্যাপারে যথাযথ ভয় পোষণ করার তাওফিক দান করুন। পরকালের সফলতা অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।